সরকারকে নির্দলীয় রূপে পুনর্গঠনের দাবি, জোটগত ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা সিপিবির
Published: 25th, October 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। নির্বাচনে সিপিবির নেতৃত্বাধীন জোটসহ বামপন্থী, গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল দল, সংগঠন ও ব্যক্তিরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
আজ শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের মৈত্রী ভবনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ সভায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্দলীয় রূপে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন সিপিবির নেতারা।
সভায় সিপিবির নেতারা বলেন, একটি নবগঠিত রাজনৈতিক দলসহ ক্ষমতাসীন সরকারে থাকা যেকোনো রাজনৈতিক দলের পরামর্শক, পৃষ্ঠপোষক ও দলীয় পরিচয়ে পরিচিত ব্যক্তিদের পদত্যাগ করার মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে সাংগঠনিক কাজ ও জোরদার রাজনৈতিক তৎপরতা পরিচালনা এবং ‘জনতার সনদ’ প্রণয়ন ও সেই অঙ্গীকার নিয়ে সিপিবি–সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলেও সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় গৃহীত প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানের দার্শনিক ভিত্তি রচিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ–পূর্ববর্তী ২৩ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, যা প্রতিফলিত হয়েছে ১০ এপ্রিল ১৯৭১–এ গৃহীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে। সংবিধানের প্রায়োগিক বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বহু বিষয়ে সংস্কারের ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। কিন্তু দার্শনিক ভিত্তি সংবিধানের চার মূলনীতি প্রশ্নে আপস করার কোনো সুযোগ নেই। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বিষয়ে সর্বসম্মত হতে পারেনি, সেসব বিষয়ে গণভোট কিংবা সাংবিধানিক আদেশ জারির কোনো এখতিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই।
সভায় আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক তিনটি টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে ইজারা প্রদান এবং সাম্রাজ্যবাদী ও আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী শক্তির প্রয়োজনে বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে প্রক্সি যুদ্ধের ক্ষেত্রে পরিণত করার সব অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই পরিচালনা করা হবে।
সভায় কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি ও উগ্র সাম্প্রদায়িক ডানপন্থী গোষ্ঠীর আস্ফালন রুখতে, গণমানুষের ঐক্য ও সংগ্রামের ভিত্তিতে বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তির সরকার গঠনের আহ্বান নিয়ে আগামী ১৪ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠেয় ‘জাতীয় সমাবেশ’ সফল করতে দেশবাসীকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
সিপিবির সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন রাজনৈতিক প্রতিবেদন উত্থাপন করেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের আলোচনার মধ্য দিয়ে সেটি গৃহীত হয়। সভায় বক্তব্য দেন সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, রফিকুজ্জামান লায়েক, এস এ রশীদ, রাগীব আহসান মুন্না, জলি তালুকদার, আমিনুল ফরিদ এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ শাহ আলম, রুহিন হোসেন, মিহির ঘোষ, শাহীন রহমান, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, পরেশ কর, অধ্যাপক এমএম আকাশ, মৃণাল চৌধুরী, দিবালোক সিংহ, এমদাদুল হক মিল্লাত প্রমুখ।
রাজনৈতিক শক্তির বাইরে নিপীড়িত-নির্যাতিত সামাজিক শক্তিসমূহকে ঐক্যবদ্ধ করা ও তাদের রাজনৈতিক সংগ্রামে শামিলের উদ্যোগ হিসেবে আগামী ৩১ অক্টোবর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক কনভেনশন, ২৮ নভেম্বর গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী মানুষের রাজনৈতিক কনভেনশন, ৫ ডিসেম্বর নারী সমাজের রাজনৈতিক কনভেনশন এবং ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ করবে সিপিবি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ন দ র য় কম ট র র র জন ত ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভেনেজুয়েলা নিয়ে ট্রাম্প কী লক্ষ্য অর্জন করতে চান
দুই মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক সমাবেশ ঘটাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এ আয়োজন। কিন্তু ওয়াশিংটনের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে কারাকাসকে বার্তা দিতে চায়।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ছোট ছোট নৌযানে হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে হত্যা করেছে। এই হামলাগুলোকে ঘিরে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন এর বৈধতা নিয়ে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড আসলে ইঙ্গিত দিচ্ছে—ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোকে ভয় দেখাতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
লন্ডনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের লাতিন আমেরিকা-বিষয়ক সিনিয়র ফেলো ক্রিস্টোফার সাবাতিনি বলেন, এটি মূলত সরকার পরিবর্তনের প্রচেষ্টা। তারা হয়তো সরাসরি আগ্রাসনে যাবে না, বরং শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে বার্তা দিতে চায়।
সাবাতিনির মতে, এই সামরিক আয়োজন আসলে শক্তি প্রদর্শন। এর উদ্দেশ্য ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনী ও মাদুরোর ঘনিষ্ঠ মহলে ভয় সৃষ্টি করা, যাতে তারা তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প