৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একবারে নিখুঁত না হলেও অনেকটাই উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো ভালো হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। 

বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ও মহড়ায় অংশ নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেন। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আলাদা ব্যবস্থা নেয়া হবে। রেড, ইয়েলো এবং গ্রিন জোনে ভাগ করে সে অনুযায়ী ডেপ্লয়মেন্ট স্ট্যাটেজি (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন) ঠিক করা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আগামী ৩০ নভেম্বর বসার কথা রয়েছে। সেখানে ডেপ্লয়মেন্ট স্ট্যাটেজি ফাইনাল হবে।”

তিনি বলেন, “পুলিশ, আনসার, বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনীও নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে, যা আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে ভালো প্রভাব তৈরি করবে।”

জাতিকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিয়ে ইসি ওয়াদা পূরণ করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মহড়া পরিদর্শন শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন পরিচালনায় বিজিবির পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও প্রস্তুতির প্রশংসা করেন। তিনি সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিতকরণে মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারী বিজিবি সদস্যদের দক্ষতা ও নিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিজিবি সদর দপ্তরের শহীদ শাকিল আহমেদ হলে সকল পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এতে বিজিবি মহাপরিচালক, সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অন্যান্য কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা, সৈনিক এবং অসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিজিবির সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন ও অন্যান্য ইউনিট ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন।

মতবিনিময়কালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নির্ভয় পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারী বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন এবং তাদের পেশাদারিত্ব ও প্রস্তুতির প্রশংসা করেন।

আগামী সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে বিজিবির ১২১০ প্লাটুন সদস্য নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে। 

ঢাকা/এমআর/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা ও সিরাজগঞ্জে ডিবি হেফাজতে দুজনের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

ঢাকা ও সিরাজগঞ্জে ডিবি পুলিশের হেফাজতে দুই নাগরিকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। ঘটনাগুলোকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে দুই ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও জবাবদিহি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন দুটি। আজ রোববার গণমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত বিবৃতি পাঠিয়েছেন সংগঠন দুটির নেতারা।

বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি আসকের

আইন ও সালিশ কেন্দ্র তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, গণমাধ্যমের সূত্রে ঢাকা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় ডিবি পুলিশের হেফাজতে মুক্তার হোসেন ও শাহাদত হোসেন নামের দুই নাগরিকের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এ ঘটনায় আসক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

আসক মনে করে, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব ও সাংবিধানিক কর্তব্য। এ ধরনের মৃত্যু আমাদের জাতীয় মানবাধিকার অঙ্গীকার, সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষার প্রয়াসে নতুন করে আলোচনা ও মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।

বিবৃতিতে আসক বলেছে, রাষ্ট্রের হেফাজতে থাকা কোনো ব্যক্তির মৃত্যু অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। এটি সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারকে লঙ্ঘন করে। একই সঙ্গে এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের মৌলিক নীতির পরিপন্থী। যেখানে হেফাজতে থাকা ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের আইনগত ও নৈতিক বাধ্যবাধকতা হিসেবে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

আসকের হিসাবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন থানা হেফাজতসহ, র‍্যাব, পিবিআই ও ডিবির হেফাজতে রাখা অবস্থায় দেশে কমপক্ষে ১৫ নাগরিকের মৃত্যু ঘটেছে। এটা কেবল পরিসংখ্যান নয়, এটি দায়িত্বহীনতা, জবাবদিহির অভাব ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার সংকটকে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরে।

হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনার স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার দাবি জানিয়ে আসক বলেছে, সংশ্লিষ্ট ঘটনাগুলোতে দায়ী ব্যক্তিদের দায় নিরূপণ করে আইনগত জবাবদিহি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। পাশাপাশি ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচারের অধিকার এবং আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করাও অত্যাবশ্যক।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ

একইভাবে ডিবি হেফাজতে দুই ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। নিহত ওই দুই ব্যক্তি অভিযুক্ত আসামি ছিলেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, স্বজনদের অভিযোগ, ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় নির্যাতনে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।

বিবৃতিতে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন মনে করে, গোয়েন্দা পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। যা মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। দুটি মৃত্যুর বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি রাখে। কারণ, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যু জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা যেকোনো ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আইনি দায়িত্ব। এমএসএফ মোক্তার ও শাহাদতের মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে পরিবারের অভিযোগের বিষয়টি অনতিবিলম্বে গুরুত্ব দিয়ে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচন ঠেকাতে চাইবে যারা, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: সিইসি
  • সরকারের প্রতিশ্রুতি ও কাজে মিল দেখতে চাই
  • নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: নৌবাহিনী প্রধান
  • মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির ৫ সদস্যকে আটক করেছে বিজিবি
  • ঢাকা ও সিরাজগঞ্জে ডিবি হেফাজতে দুজনের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি
  • ভোটের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলায় অবনতির শঙ্কা দেখছেন না স্বরাষ্ট্র উপদে
  • ভূমিকম্প সতর্কতা অ্যাপের বিষয়ে ভাবছে সরকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা