২০ আলোকবর্ষের কম দূরত্বে সুপার আর্থ আবিষ্কার
Published: 26th, October 2025 GMT
বিজ্ঞানীরা পৃথিবী থেকে ২০ আলোকবর্ষের কম দূরত্বে একটি সুপার আর্থ ধরনের গ্রহ আবিষ্কার করেছেন। সেখানে ভিনগ্রহের প্রাণ বা এলিয়েন লাইফের জন্য সঠিক পরিবেশ থাকতে পারে। জিজে ২৫১ সি নামের এই বহির্গ্রহ আমাদের পৃথিবী গ্রহের চেয়ে অন্তত চার গুণ বড়। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, গ্রহটি সম্ভবত একটি পাথুরে জগৎ। গ্রহটি তার নক্ষত্রের গোল্ডিলকস জোনের মধ্যে রয়েছে। এ জন্য বিজ্ঞানীরা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন গ্রহটি নিয়ে। তাঁদের ধারণা, এ অঞ্চলের তরল পানি গ্রহের পৃষ্ঠে বিদ্যমান থাকতে পারে। গবেষকেরা মনে করছেন, এই নিকটবর্তী গ্রহটি ভিনগ্রহের প্রাণ ধারণের জন্য বেশ উপযুক্ত হতে পারে।
এই ভিনগ্রহের জগৎ খুঁজে বের করার জন্য বিজ্ঞানীরা ২০ বছরের বেশি সময়ের ডেটা ঘেঁটে দেখেছেন। কক্ষপথে থাকা গ্রহের মহাকর্ষের কারণে দূরবর্তী নক্ষত্রের মৃদু কম্পন খুঁজে বের করার সময় গ্রহটির খোঁজ পাওয়া যায়। এমন কম্পন গ্রহের পৃষ্ঠের অবস্থা সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য না দিলেও গ্রহটি প্রাণ ধারণের জন্য সঠিক অবস্থানে আছে কি না, তা প্রকাশ করতে পারে। বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না যে জিজে ২৫১ সি-তে বায়ুমণ্ডল আছে কি না। আগামী এক দশকের মধ্যে নতুন টেলিস্কোপের মাধ্যমে এসব তথ্য জানার কাজ চলবে। যুক্তরাষ্ট্রের পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী অধ্যাপক সুভ্রথ মহাদেবন বলেন, এই আবিষ্কার আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে অন্য গ্রহে প্রাণ ধারণের জন্য বায়ুমণ্ডলীয় স্বাক্ষর আছে কি না, তা জানার সুযোগ করে দেবে। সাধারণ উপায়ে এই বহির্গ্রহগুলোকে দেখা যায় না। এরা ছোট, অনুজ্জ্বল ও অনেক দূরে অবস্থিত হয়। বিজ্ঞানীরা তখন মূল নক্ষত্রের কক্ষপথকে কিছু একটা ব্যাহত করছে কি না, সেই লক্ষণ দেখে গ্রহ খুঁজে বের করেন। অধ্যাপক মহাদেবন ব্যাখ্যা করেন, পৃথিবী সূর্যের চারপাশে সামান্য ৯ সেন্টিমিটারের একটি কম্পন সৃষ্টি করে। জিজে ২৫১ সি আমাদের পৃথিবীর চেয়ে অনেক বড় আর এর নক্ষত্র অনেক ছোট। সেখানে কম্পন আধুনিক টেলিস্কোপ দ্বারা শনাক্ত করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
বহির্গ্রহটি খুঁজে বের করার জন্য অধ্যাপক মহাদেবন ও তাঁর দল হ্যাবিটেবল-জোন প্ল্যানেট ফাইন্ডার নামের একটি ডিভাইস ব্যবহার করেছেন। এটি মূলত একটি জটিল প্রিজম, যা নক্ষত্রের আলোর সংকেতকে ভেঙে বিশ্লেষণ করে। দুই দশকের পর্যবেক্ষণের ফলস্বরূপ বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই জানতেন, এই নক্ষত্রকে প্রতি ১৪ দিনে একবার প্রদক্ষিণ করা জিজে ২৫১ বি নামের অন্য একটি গ্রহ রয়েছে। নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে প্রতি ৫৪ দিনে আরও শক্তিশালী একটি সংকেত পুনরাবৃত্তি হতে দেখা যায়। জিজে ২৫১ সি সম্ভবত তার নক্ষত্রের ‘গোল্ডিলকস জোন’-এর মধ্যে রয়েছে। সেখানে সঠিক বায়ুমণ্ডলীয় পরিস্থিতি থাকলে পৃষ্ঠে তরল পানি বিদ্যমান থাকতে পারে।
অধ্যাপক মহাদেবন বলেন, জিজে ২৫১ সি তার মূল নক্ষত্র থেকে সঠিক দূরত্বে রয়েছে। এই দূরত্বে তরল পানি এর পৃষ্ঠে বিদ্যমান থাকতে পারে। যদিও গ্রহটি সূর্যের নিকটতম ১০০টি নক্ষত্রের মধ্যে একটিকে প্রদক্ষিণ করছে। পৃথিবী থেকে উন্নত টেলিস্কোপ প্রযুক্তির মাধ্যমে রকেটে না চড়েই জিজে ২৫১ সি সম্পর্কে অনেক প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে। এর মধ্যে ৩০-মিটার গ্রাউন্ডভিত্তিক টেলিস্কোপ নিয়ে কাজ চলছে। এই টেলিস্কোপ কাছাকাছি নক্ষত্রের বাসযোগ্য অঞ্চলে পাথুরে জগতের সরাসরি ছবি তুলতে ও বায়ুমণ্ডলের তথ্য জানতে সহায়তা করবে। বহির্গ্রহের বায়ুমণ্ডলে ভিনগ্রহের বায়োসিগনেচার বা প্রাণের চিহ্ন শনাক্ত করতে চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ রহ র প ব র কর জন য ব র জন য গ রহট ২৫১ স
এছাড়াও পড়ুন:
বিস্তৃত প্রশ্ন, উত্তরও বড় হবে
বাংলা: প্রশ্ন নম্বর–৮
প্রাথমিক বিদ্যালয়–শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষায় বাংলা বিষয়ে ৮ নম্বর প্রশ্ন থাকবে বিস্তৃত উত্তর প্রশ্নের ওপর। ৩টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। নম্বর থাকবে ১৫।
প্রশ্ন: দেশকে কেন ভালোবাসতে হবে?
উত্তর: দেশ মানে এর মানুষ, নদী, আকাশ, প্রান্তর, পাহাড়, সমুদ্র ইত্যাদি সবকিছু। তাই দেশ আমাদের কাছে মায়ের মতো। মা যেমন স্নেহ–মমতা দিয়ে সন্তানকে আগলে রাখেন, দেশও তেমনই আলো, বাতাস ও সম্পদ দিয়ে আমাদের আগলে রাখে। তাই মায়ের মতো এই দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশকে ভালোবাসলেই তবে জীবন সার্থক হবে।
প্রশ্ন: রাজকীয় বাঘ কোনটি? এটি সম্পর্কে লেখ।
উত্তর: বাংলাদেশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রাজকীয় বাঘের নাম হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এই বাঘ থাকে সুন্দরবনে। এ বাঘ দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনই আবার
ভয়ংকর। এর চালচলনও রাজার মতো। সুন্দরবনের ভেজা স্যাঁতসেঁতে গোলপাতার বনে এ বাঘ ঘুরে বেড়ায়।
প্রশ্ন: বৈশাখী মেলায় কী কী পাওয়া যায়?
উত্তর: বৈশাখী মেলায় নিত্যদিনের দরকারি জিনিসের পাশাপাশি নানা রকম শৌখিন জিনিস পাওয়া যায়। যেমন—কুলা, ডালা, ঝুড়ি, চালনি, মাছ ধরার চাঁই, খালুই ইত্যাদি। দোকানে পাওয়া যায় বাঙ্গি, তরমুজ, মুড়ি–মুড়কি, জিলাপি, বাতাসা ইত্যাদি। বৈশাখী মেলার অন্যতম আকর্ষণ হলো মাটির তৈরি জিনিসপত্র। মাটির তৈরি জিনিসের মধ্যে রয়েছে নানা রঙের ফুল, পাতা ও মাছের ছবি আঁকা বিচিত্র সব হাঁড়ি। এ ছাড়া মাটির তৈরি টেপাপুতুল, ঘোড়া, হাতি, ষাঁড়, মাছ, কলসি, সরা, বাসনকোসন, পেয়ালা, সুরাই, মটকা, জালা, পিঠা তৈরির নানা ছাঁচ ইত্যাদি।
প্রশ্ন: হাতির করুণ পরিণতির পাঁচটি কারণ লেখ।
উত্তর: হাতির করুণ পরিণতির পাঁচটি কারণ নিচে দেওয়া হলো—
১. অহংকারী হয়ে ওঠা।
২. অন্য প্রাণীদের তুচ্ছ ভাবা।
৩. বনের প্রাণীদের অত্যাচার করা।
৪. নিজেকে অসীম শক্তিশালী ভাবা।
৫. নিজেকে বনের রাজা ভাবতে শুরু করা।
প্রশ্ন: প্রকৃতির কাছ থেকে আমরা কীভাবে শিক্ষা লাভ করতে পারি?
উত্তর: প্রকৃতি এক বিশাল পাঠশালা। এর প্রতিটি উপাদানে রয়েছে শেখার উপকরণ। আকাশ যেমন উদার হতে শিক্ষা দেয়, তেমনই পাথর শিক্ষা দেয় কঠোর হতে। পাহাড়–মাটি, চাঁদ–সূর্য, বাতাস–মাঠ প্রতিটিই বিভিন্নভাবে আমাদের শিক্ষা দেয়। উদারতা, সহিষ্ণুতা, কর্মপরায়ণতা, নীরবতা, মহানুভবতা ইত্যাদির শিক্ষা আমরা প্রকৃতির কাছ থেকে পেয়ে থাকি। এভাবে প্রকৃতির দিকে গভীরভাবে তাকালে বিনা পরিশ্রমে, কোনো ধরনের কৃত্রিমতা ছাড়াই আমরা এসব প্রকৃতি থেকে লাভ করতে পারি।
প্রশ্ন: মৃৎশিল্পের ওপর নকশাগুলো কীভাবে করা হয়?
উত্তর: আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হলো মৃৎশিল্প। এই মৃৎশিল্পের ওপরের সুন্দর নকশা, রং সবই গ্রামের শিল্পীরা করে থাকেন। নকশাগুলো তাঁরা মন থেকে আঁকেন। আর রং তাঁরা নিজেরা তৈরি করে নেন শিম, সেগুনপাতার রস কিংবা কাঁঠালগাছের বাকল থেকে। তবে আজকাল বাজার থেকে কেনা রংও লাগানো হয়।
প্রশ্ন: ‘আমরা একে অপরের উৎসবে সহযোগিতা করি।’—এ কথার দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সব মানুষ মিলেমিশে বাস করে। প্রতিটি ধর্মের মানুষের রয়েছে আলাদা আলাদা উৎসব। যুগ যুগ ধরে সব ধর্মের মানুষ এ দেশে একত্রে বসবাস করে আসছে। এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের উৎসবে আনন্দের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে। উৎসব পালনে আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করি, প্রশ্নের উক্তিটিতে এ কথাই বোঝানো হয়েছে।
প্রশ্ন: যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে মানুষ ঘুরছে বলতে কী বোঝ? বর্ণনা করো।
উত্তর: কবিতায় ‘যুগান্তর’ বলতে সময়ের পরিবর্তন এবং ‘ঘূর্ণিপাক’ বলতে এর দ্রুততাকে বোঝানো হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়। নতুন নতুন রহস্য ও ঘটনার সৃষ্টি হয়। সময়ের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও এগিয়ে চলে রহস্য অনুসন্ধান ও ঘটনার মূল উদ্ঘাটনের জন্য। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের এই এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতাকে বোঝানোর জন্যই বলা হয়েছে যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে ঘুরছে।
প্রশ্ন: পশুপাখি জীবজন্তু না থাকলে প্রকৃতির কী বিপর্যয় ঘটবে বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর: পশুপাখি, জীবজন্তু যেকোনো দেশের স্বাভাবিক প্রকৃতির পরিবেশ রক্ষার জন্য অপরিহার্য। যদি পৃথিবীতে পশুপাখি না থাকত, তাহলে প্রকৃতির ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ত
এবং পরিবেশের ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটত। ফলে দেখা দিত নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যা মানুষের জীবনধারণকে হুমকির মধ্যে ফেলত। তাই এদের যত্ন ও সংরক্ষণে আমাদের সচেতন হতে হবে।
প্রশ্ন: ‘মাটির শিল্পকলা’ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যখন কোনো কিছু সুন্দর করে আঁকা বা বানানো হয়, তখন তাকে শিল্প বলে। শিল্পের এ কাজকে বলে শিল্পকলা। মাটি দিয়ে তৈরি শিল্পকে বলা হয় মাটির শিল্পকলা। আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হচ্ছে মাটির শিল্প। এ দেশের কুমার সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে এই শিল্পকলা ধরে রেখেছে।
প্রশ্ন: সুন্দরবন সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর: বাংলাদেশের দক্ষিণে সমুদ্রের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা বিশাল বন হলো সুন্দরবন। এই বনে যেমন রয়েছে প্রচুর গাছপালা, তেমনই রয়েছে নানা প্রাণী ও জীবজন্তু, যা আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষণ হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সর্বোপরি সুন্দরবন ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে।
প্রশ্ন: পরস্পর মিলেমিশে থাকার পাঁচটি সুফল লেখ।
উত্তর: পরস্পর মিলেমিশে থাকার চারটি সুফল হলো—
১. একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সৃষ্টি হয়।
২. বিপদ–আপদে একে অন্যকে সাহায্য করা যায়।
৩. একে অপরের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি পায়।
৪. সমাজে সাম্য ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়।
৫. দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়।
*লেখক: খন্দকার আতিক, শিক্ষক, উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা