বিজ্ঞানীরা পৃথিবী থেকে ২০ আলোকবর্ষের কম দূরত্বে একটি সুপার আর্থ ধরনের গ্রহ আবিষ্কার করেছেন। সেখানে ভিনগ্রহের প্রাণ বা এলিয়েন লাইফের জন্য সঠিক পরিবেশ থাকতে পারে। জিজে ২৫১ সি নামের এই বহির্গ্রহ আমাদের পৃথিবী গ্রহের চেয়ে অন্তত চার গুণ বড়। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, গ্রহটি সম্ভবত একটি পাথুরে জগৎ। গ্রহটি তার নক্ষত্রের গোল্ডিলকস জোনের মধ্যে রয়েছে। এ জন্য বিজ্ঞানীরা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন গ্রহটি নিয়ে। তাঁদের ধারণা, এ অঞ্চলের তরল পানি গ্রহের পৃষ্ঠে বিদ্যমান থাকতে পারে। গবেষকেরা মনে করছেন, এই নিকটবর্তী গ্রহটি ভিনগ্রহের প্রাণ ধারণের জন্য বেশ উপযুক্ত হতে পারে।

এই ভিনগ্রহের জগৎ খুঁজে বের করার জন্য বিজ্ঞানীরা ২০ বছরের বেশি সময়ের ডেটা ঘেঁটে দেখেছেন। কক্ষপথে থাকা গ্রহের মহাকর্ষের কারণে দূরবর্তী নক্ষত্রের মৃদু কম্পন খুঁজে বের করার সময় গ্রহটির খোঁজ পাওয়া যায়। এমন কম্পন গ্রহের পৃষ্ঠের অবস্থা সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য না দিলেও গ্রহটি প্রাণ ধারণের জন্য সঠিক অবস্থানে আছে কি না, তা প্রকাশ করতে পারে। বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না যে জিজে ২৫১ সি-তে বায়ুমণ্ডল আছে কি না। আগামী এক দশকের মধ্যে নতুন টেলিস্কোপের মাধ্যমে এসব তথ্য জানার কাজ চলবে। যুক্তরাষ্ট্রের পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী অধ্যাপক সুভ্রথ মহাদেবন বলেন, এই আবিষ্কার আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে অন্য গ্রহে প্রাণ ধারণের জন্য বায়ুমণ্ডলীয় স্বাক্ষর আছে কি না, তা জানার সুযোগ করে দেবে। সাধারণ উপায়ে এই বহির্গ্রহগুলোকে দেখা যায় না। এরা ছোট, অনুজ্জ্বল ও অনেক দূরে অবস্থিত হয়। বিজ্ঞানীরা তখন মূল নক্ষত্রের কক্ষপথকে কিছু একটা ব্যাহত করছে কি না, সেই লক্ষণ দেখে গ্রহ খুঁজে বের করেন। অধ্যাপক মহাদেবন ব্যাখ্যা করেন, পৃথিবী সূর্যের চারপাশে সামান্য ৯ সেন্টিমিটারের একটি কম্পন সৃষ্টি করে। জিজে ২৫১ সি আমাদের পৃথিবীর চেয়ে অনেক বড় আর এর নক্ষত্র অনেক ছোট। সেখানে কম্পন আধুনিক টেলিস্কোপ দ্বারা শনাক্ত করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।

বহির্গ্রহটি খুঁজে বের করার জন্য অধ্যাপক মহাদেবন ও তাঁর দল হ্যাবিটেবল-জোন প্ল্যানেট ফাইন্ডার নামের একটি ডিভাইস ব্যবহার করেছেন। এটি মূলত একটি জটিল প্রিজম, যা নক্ষত্রের আলোর সংকেতকে ভেঙে বিশ্লেষণ করে। দুই দশকের পর্যবেক্ষণের ফলস্বরূপ বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই জানতেন, এই নক্ষত্রকে প্রতি ১৪ দিনে একবার প্রদক্ষিণ করা জিজে ২৫১ বি নামের অন্য একটি গ্রহ রয়েছে। নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে প্রতি ৫৪ দিনে আরও শক্তিশালী একটি সংকেত পুনরাবৃত্তি হতে দেখা যায়। জিজে ২৫১ সি সম্ভবত তার নক্ষত্রের ‘গোল্ডিলকস জোন’-এর মধ্যে রয়েছে। সেখানে সঠিক বায়ুমণ্ডলীয় পরিস্থিতি থাকলে পৃষ্ঠে তরল পানি বিদ্যমান থাকতে পারে।

অধ্যাপক মহাদেবন বলেন, জিজে ২৫১ সি তার মূল নক্ষত্র থেকে সঠিক দূরত্বে রয়েছে। এই দূরত্বে তরল পানি এর পৃষ্ঠে বিদ্যমান থাকতে পারে। যদিও গ্রহটি সূর্যের নিকটতম ১০০টি নক্ষত্রের মধ্যে একটিকে প্রদক্ষিণ করছে। পৃথিবী থেকে উন্নত টেলিস্কোপ প্রযুক্তির মাধ্যমে রকেটে না চড়েই জিজে ২৫১ সি সম্পর্কে অনেক প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে। এর মধ্যে ৩০-মিটার গ্রাউন্ডভিত্তিক টেলিস্কোপ নিয়ে কাজ চলছে। এই টেলিস্কোপ কাছাকাছি নক্ষত্রের বাসযোগ্য অঞ্চলে পাথুরে জগতের সরাসরি ছবি তুলতে ও বায়ুমণ্ডলের তথ্য জানতে সহায়তা করবে। বহির্গ্রহের বায়ুমণ্ডলে ভিনগ্রহের বায়োসিগনেচার বা প্রাণের চিহ্ন শনাক্ত করতে চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রহ র প ব র কর জন য ব র জন য গ রহট ২৫১ স

এছাড়াও পড়ুন:

সালমান হত্যা মামলা, খোঁজ মিলছে না সামিরা–ডনের

ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ২৯ বছর পর আদালত অবশেষে হত্যা মামলা পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় সাবেক স্ত্রী সামিরা হক, খল চরিত্রের অভিনয়শিল্পী ডন হকসহ মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। সামিরা যে ফোন নম্বর ব্যবহার করতেন, তা এখন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ডনকে টানা কয়েক দিন ফোনকল ও খুদে বার্তা দেওয়ার পরও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ