দেশের সফটওয়্যার খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নির্বাচনের খবর নেই, তবে বেসিসের কার্যক্রম পরিচালনায় প্রশাসককে সহযোগিতা করার জন্য সংগঠনটির ১০ জন সদস্যকে নিয়ে আবার একটি ‘সহায়ক কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেসিসের প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ খান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০২২-এর ১৮ ধারার ২(ক) উপধারা অনুযায়ী গঠিত এই কমিটি প্রশাসক যেসব ক্ষেত্রে সহায়তা চাইবেন, শুধু সেসব বিষয়ে কাজ করবে।

বেসিস পরিচালনার জন্য এই সহায়ক কমিটিতে রয়েছেন মুশফিকুর রহমান (স্পেকট্রাম সফটওয়্যার অ্যান্ড কনসালটিং প্রা.

লি.), মোস্তফা রফিকুল ইসলাম (ফ্লোরা টেলিকম লিমিটেড), মো. রওশান কামাল (টেকসল টেকনোলজিস বাংলাদেশ লি.), বেলাল আহমেদ (সিনার্জি ইন্টারফেস লি.), রাশেদ কামাল (দ্য ডেটাবেজ সফটওয়্যার লি.), এ এইচ এম রোকমুনুর জামান (এইচ আর সফট বিডি), মুহাম্মদ আবদুল মজিদ (বাংলা পাজেল লিমিটেড), মো. জুয়েল (লেমিসে লিমিটেড), ফেরদৌস আলম (অ্যাটোভা টেকনোলজি) এবং সৈয়দ জাহিদ হোসেন (মিট এক্সপার্ট)।

নতুন কমিটি প্রসঙ্গে বেসিসের সদস্য ও ফ্লোরা টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন সহায়ক কমিটি অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, নতুন ও পুরোনো সদস্যদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বেসিসকে আরও সামনে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। আমাদের লক্ষ্য, সংগঠনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করা, যাতে দেশের আইসিটি খাতের উন্নয়নে বেসিসের অবদান আরও দৃশ্যমান হয়।’

কমিটির সদস্য ও লেমিসে লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মো. জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলাসহ বিভিন্ন কারণে বেসিস দীর্ঘদিন অচল ছিল। এখন আমাদের প্রধান কাজ হবে প্রয়োজনীয় সংস্কার ত্বরান্বিত করে দ্রুততার সঙ্গে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করা।’

প্রসঙ্গত, গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনেক খাতের মতো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসেও (বেসিস) পরিবর্তন আসে। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর সরকার বেসিস প্রশাসক হিসেবে আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুহম্মদ মেহেদী হাসানকে নিযুক্ত করে। প্রশাসককে সহায়তা করতে ও বেসিসের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাফেল কবিরের নেতৃত্বে গত ৮ ডিসেম্বর বেসিস সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

কিন্তু প্রশাসক মুহম্মদ মেহেদী হাসান নিয়ম অনুযায়ী ১২০ দিনের মধ্যে বেসিসের নির্বাচন করতে ব্যর্থ হন। পরে আগের সহায়ক কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ খানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। প্রশাসক ১২০ দিনের মধ্যে বেসিসের নির্বাচন আয়োজন করবেন। এরই মধ্যে গতকাল সোমবার নতুন সহায়ক কমিটি গঠিত হলো।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক কম ট সদস য স গঠন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কে হলেন মাইক্রোসফট এক্সেল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন ২০২৫

শিরোনাম দেখে কিছুটা চমকে যেতে পারেন। মাইক্রোসফট এক্সেল তো কম্পিউটারের একটি হিসাব কষার সফটওয়্যার, তার আবার কি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন। মাইক্রোসফট এক্সেল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ একটি ইস্পোর্টস আয়োজন। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের সেরা স্প্রেডশিট বিশেষজ্ঞরা তাঁদের বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা প্রমাণ করতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই বার্ষিক প্রতিযোগিতা দেখা যায় অফিস সফটওয়্যারও একটি তীব্র প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র হতে পারে। সম্প্রতি লাস ভেগাসের হাইপারএক্স অ্যারেনাতে অনুষ্ঠিত ২০২৫ সালের ফাইনালে ডিয়ারমুইড আর্লি চ্যাম্পিয়নশিপ বেল্ট জয় করেছেন। তিনি পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার জিতেছেন। তিনি অরিগ্যামি-অনুপ্রাণিত জটিল কেস সমাধানের মাধ্যমে তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অ্যান্ড্রু এনগাইকে পরাজিত করেন। এই প্রতিযোগিতা কেবল গতির নয়, বরং নির্ভুলভাবে জটিল ডেটা এবং লজিক্যাল সমস্যা সমাধানের বুদ্ধিমত্তারও পরীক্ষা করে।

এ বছর ডিয়ারমুইড আর্লি মাইক্রোসফট এক্সেল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনালে অন্য ২৩ জন প্রতিযোগীকে পরাজিত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের নেভাডায় হাইপারএক্স অ্যারেনাতে তিন দিনব্যাপী এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মাইক্রোসফট এক্সেল খেলোয়াড়েরা একত্রিত হয়েছিলেন প্রতিযোগিতার জন্য।

ফাইনালে ২৪ জন খেলোয়াড় মাইক্রোসফটের স্প্রেডশিট সফটওয়্যার ব্যবহার করে একটি জটিল সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। অরিগ্যামি অনুপ্রাণিত চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রতিযোগীরা তাদের সফটওয়্যার জ্ঞান ব্যবহার করে সাতটি স্তরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ১৩০টি প্রশ্নের সমাধান করেন। টুর্নামেন্টের বিজয়ী হতে সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে হয়। প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর ফাইনাল থেকে একজন খেলোয়াড় বাদ পড়তে থাকেন, যতক্ষণ না ছয়জন অবশিষ্ট থাকে। এক ঘণ্টা সমস্যা সমাধানের পর ডিয়ারমুইড আর্লি ১২৫০ পয়েন্ট নিয়ে স্কোরবোর্ডে শীর্ষে পৌঁছে যান। তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অ্যান্ড্রু এনগাইয়ের চেয়ে ৩০০ পয়েন্টের বেশি পান তিনি।

এক্সেল ইস্পোর্টস অঙ্গনে ডিয়ারমুইড আর্লি পরিচিত নাম। আর্লি ডেজ কনসাল্টিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ডিয়ারমুইড আর্লি ২০১২ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত আর্থিক মডেলিং প্রতিযোগিতা মডেলঅফের পাঁচবারের ফাইনালিস্ট। আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা ডিয়ারমুইড আর্লি। কম্পিউটারবিজ্ঞানে পিএইচডি আছে তাঁর। ২০০৮ সালে লন্ডনের বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপে তিনি প্রথম এক্সেল ব্যবহার শুরু করেছিলেন। তিনি বলেন, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান হতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যতটা সম্ভব চেষ্টা করেছি। পুরো প্রতিযোগিতা লাইভ দেখেছেন দর্শকেরা। প্রতিযোগিতার উত্তর সঠিকভাবে স্থাপন করলে একটি বিখ্যাত চিত্রকর্মের মতো মনে হয়।

মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা এক্সে পোস্ট করে বলেছেন, ‘অনেক অভিনন্দন, ডিয়ারমুইড! আপনি রেডমন্ডে আসুন, আমাদের দলের সঙ্গে দেখা করুন ও আপনার এক্সেল দক্ষতা থেকে শিখতে চাই!’

এক্সেল প্রথম ১৯৮৫ সালে সালে আবির্ভূত হয়। ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ইন্টেল প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারের সুযোগ ছিল না। ১৯৮০ দশকের প্রভাবশালী স্প্রেডশিট ছিল লোটাস ১-২-৩। নব্বই দশকে এক্সেল জনপ্রিয়তা পায়।

সূত্র: ইস্পোর্টস ইনসাইডার ও দ্য রেজিস্টার

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কে হলেন মাইক্রোসফট এক্সেল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন ২০২৫