রাজশাহীতে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে জুলাই আন্দোলন ও জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তিমূলক ভিডিও ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ভিডিও পোস্ট করার অভিযোগে শেখ মিফতা ফাইজা (১৯) নামের এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাতে জেলার গোদাগাড়ী থানা এলাকা থেকে ফাইজাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি নাটোর সদর থানার দিঘাপাতিয়া এলাকার মোশারফ হোসেনের মেয়ে। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি ফাইজা নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে অবস্থিত জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে দাঁড়িয়ে জুলাই আন্দোলন ও যোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তি ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় তিনি শেখ হাসিনার ছবি দেখিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তিনি ফেসবুকে পোস্ট করলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশের ভাষ্য, ফাইজার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তিনি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও জননিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তিনি নিষিদ্ধঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী এবং সংগঠনটির পক্ষে নিয়মিত পোস্ট, ছবি ও ভিডিও শেয়ার করতেন। এ ছাড়া টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন গ্রুপে সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।

পুলিশ জানায়, ২৫ অক্টোবর এক ব্যক্তি বিষয়টি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) জানান। ওই দিনই ডিবি অভিযানে নামলে ফাইজা কৌশলে পালিয়ে যান। পরে গতকাল গোয়েন্দা পুলিশ ও কাঁকনহাট পুলিশ ফাঁড়ির একদল পুলিশ গোদাগাড়ী থানার পাকড়ী গোয়ালপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী বলে স্বীকার করেছেন।

মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মো.

গাজিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ফাইজার বিরুদ্ধে নগরের রাজপাড়া থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে। আজ বিকেলে তাঁকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে লুট হওয়া ১১১ অস্ত্র উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় জেলার বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রগুলোর মধ্যে ১১১টি অস্ত্র ও ১ হাজার ৫০৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বাকি ৪০টি অস্ত্র ও প্রায় ৭ হাজার ৫১৮ রাউন্ড গুলির এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

বাকি অস্ত্র-গুলি উদ্ধারে জেলা পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

এ সময় অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) তারেক আল মেহেদী বলেন, অস্ত্র উদ্ধারে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে পুরস্কার ঘোষণাও দিয়েছি।

নির্বাচনের আগেই যেন বাকি অস্ত্র উদ্ধার করা যায়, সে লক্ষ্যে থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা বিভাগসহ সবাই সচেষ্ট রয়েছে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে অরাজক পরিস্থিতির সুযোগে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সংঘবদ্ধ হামলা চালানো হয়।

আন্দোলনকারীদের ছদ্মবেশে প্রবেশ করা কিছু দুর্বৃত্ত জেলা পুলিশ লাইন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, আড়াইহাজার থানা, গোপালদী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ও কালাপাহাড়িয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি লুট করে নিয়ে যায়।

সে সময় জেলা পুলিশের বিভিন্ন অস্ত্রাগার ভেঙে দুর্বৃত্তরা ১৫১টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও ৯ হাজার ২৫ রাউন্ড গুলি লুট করে।

লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে ছিল সাত ধরনের বিভিন্ন বোরের অস্ত্র, চাইনিজ রাইফেল, এসএমজি (সাব মেশিনগান), এলএমজি (লাইট মেশিনগান), পিস্তল, শটগান ও রাইফেলসহ আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র।

শুধু জেলা পুলিশ লাইন থেকেই লুট করা হয় ৭৮টি অস্ত্র ও প্রায় ৫ হাজার রাউন্ড গুলি। এসব অস্ত্রের অনেকগুলো কার্যকর অবস্থায় ছিল এবং কিছু অস্ত্র তৎকালীন সময়ে মামলা তদন্ত বা বিশেষ অভিযানে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত ছিল।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ