‘আমরা একটা ইনক্লুসিভ অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
Published: 29th, October 2025 GMT
১৭ বছরের আকাঙ্ক্ষার ফসল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ, যা রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) অনুমোদন করেছেন। এটা নিয়ে উচ্ছ্বাসিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
তবে নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের নানা জল্পনা কল্পনা। নির্বাচনটি কবে হবে ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কিনা। তাছাড়াও নির্বাচন হলেও পদ সংখ্যা এত কম কেন সবগুলো বিষয়ে জানার চেষ্টা করেছে রাইজিংবিডি। কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
শনিবারের মধ্যে বেরোবি ছাত্র সংসদের রোডম্যাপ ঘোষণা
শিক্ষার্থীদের দাবির ফসল বেরোবি ছাত্র সংসদ নিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদ ছিল না। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হওয়ার পর শিক্ষার্তীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য একটি কমিটি করে দেন। অনেক প্রক্রিয়ার ফলে আমরা ২৯ অক্টোবর অনুমোদন পাই। এখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্বাচন করার পালা।”
তিনি ছাত্র সংসদে পদ সংখ্যা কম থাকার বিষয়ে বলেন, “ছাত্র সংসদ কত বড় হবে সেক্ষেত্রে দেখতে হবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮ হাজার। এদের মধ্যেই নির্বাচন হবে। সে ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ৪০ হাজারের বেশি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ২৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় যে ছাত্র সংসদ হবে তা আমাদের জন্য সাফিসিয়েন্ট।”
তিনি আরো বলেন, “হল সংসদে সংসদে আমাদের অবাসিক হলে ২৫০ জন শিক্ষার্থী থাকে। তদের জন্য বড় ছাত্র সংসদ দরকার নেই। ২৫০ শিক্ষার্থীর যে পরিমাণ প্রতিনিধিত্ব করা দরকার, মেরিট বিশ্লেষণ করে ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় তা নির্ধারণ করেছে।”
নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতির বিষয়ে অধ্যাপক ড. ইলিয়াস প্রামাণিক বলেন, “নির্বাচনে আমাদের একটা প্রস্তুতি ব্যাপার আছে, শিক্ষার্থীদেরও আছে। আমাদের নির্বাচন নিশ্চিত ছিল না, যা হোক আমরা এটার অনুমোদন পেয়েছি। এতে উভয় পক্ষের উপস্থিতির দরকার আছে। উপাচার্য স্যার মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। তিনি বলেছেন, এ বছরের মধ্যে নির্বাচন।”
নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক প্রভাব থাকার বিষয়ে অধ্যাপক ড. ইলিয়াস প্রামাণিক বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৭৩ অধ্যাদেশ ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকরা রাজনীতি করতে পারে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আইনে তা নিষেধ আছে, কোনো শিক্ষক রাজনীতি করতে পারবে না। আমাদের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন দেওয়ার চেষ্টা করব।”
ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আমরা জিতবো মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা করব খুব আনন্দের বিষয়। সামনে যে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে, এতে কেউ হারবে না; আমরা সবাই জিতব, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় জিতবে। আমরা একটি ইনক্লুসিভ নির্বাচন করতে চাই। সুষ্ঠু ও সুন্দর নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারি, এজন্য কাজ করছি।”
এর আগে, শিক্ষার্থীরা একাধিকবার ছাত্র সংসদ নির্বাচন, আইন প্রণয়ন ও রোডম্যাপ বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন, সংবাদ সম্মেলন, অবস্থান কর্মসূচি ও আমরণ অনশন করেছে।
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাবার কবরে শায়িত বিজ্ঞানী ও লেখক রেজাউর রহমান
বাবার কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ড. রেজাউর রহমান। গতকাল বুধবার তাঁকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদ কমপ্লেক্স কবরস্থানে বাবা ফজলুর রহমানের কবরে দাফন করা হয়। এর আগে বাদ আসর এই মসজিদে মরহুমের তৃতীয় জানাজা হয়।
ধানমন্ডির ১২/এ সড়কের তাকওয়া মসজিদে বাদ জোহর রেজাউর রহমানের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এখানে মসজিদের মুসল্লিরা ছাড়াও মরহুমের আত্মীয়, সুহৃদ, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ী, স্কুল–কলেজের সতীর্থদের অনেকে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ পরে দাফনেও অংশ নিয়েছেন। জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, শিল্পী রফিকুন নবী, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, শিল্পী আবুল বার্ক্ আলভী, মনিরুল ইসলাম, অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক, প্রাণিবিজ্ঞানী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, এথিকস অ্যাডভান্স টেকনোলজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান, লেখক আনিসুল হকসহ কবি, শিল্পী, চিকিৎসকদের অনেকে।
প্রথম জানাজার পরে শেষবারের মতো রেজাউর রহমানের মরদেহ তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে আনা হয়। এখানে পরিবারের সদস্য, বিশেষত নারী আত্মীয়স্বজনসহ অনেকে শেষবারের মতো তাঁকে দেখতে আসেন। বাসভবন ছেড়ে যাওয়ার আগে এখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেশী ও স্বজনেরা জানাজায় অংশ নেন। এরপর দাফনের জন্য মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোড জামে মসজিদে আনা হয়।
রেজাউর রহমান ৮১ বছর বয়সে ২৬ অক্টোবর রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ল্যাবএইড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
আরও পড়ুনরেজাউর রহমানের চলে যাওয়া শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়…২৭ অক্টোবর ২০২৫ব্যক্তিগত জীবনে বিনয়ী ও সদাচারী ছিলেন রেজাউর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৬৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। পরে ১৯৭৯ সালে চেক একাডেমি অব সায়েন্সেস-প্রাগ থেকে কীটতত্ত্বে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর কাজ করেছেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে। পেশাগত জীবনে কীটপতঙ্গ নিয়ে দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন তিনি।
পেশাগতভাবে বিজ্ঞানী হলেও লেখক
হিসেবে রেজাউর রহমান বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। দেশের বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক হিসেবে তিনি ছিলেন বিশিষ্ট স্থানে। বিজ্ঞানে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সাহিত্যচর্চা ও বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি দেশের বিজ্ঞানচর্চার বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন রেজাউর রহমান।
আরও পড়ুনগ্রহান্তরে ভালো থাকবেন ড. রেজাউর রহমান২৮ অক্টোবর ২০২৫