ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, ‘এখন বাংলাদেশের মানুষের মন ইসলামের পক্ষে আল্লাহর তরফ থেকে তৈরি হয়েছে। কিন্তু এই অবস্থা দেখে বাতিলদের কলিজার মধ্যে অশান্তির আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। এখন আমরা লক্ষ করছি, পরিবেশ ও মানুষের মন আল্লাহর রহমতে তৈরি হয়েছে। আমাদের এই ফসল ঘরে তুলতে হবে।’

আজ বুধবার সকালে খুলনা নগরের খালিশপুর মুজগুন্নী জামি’আ রশিদীয়া গোয়ালখালী মাদ্রাসায় খুলনা-৩ আসনের হাতপাখার নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এ কথা বলেন রেজাউল করীম।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, দুর্নীতি ও ফ্যাসিবাদের করাল গ্রাস থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে ইসলামের ন্যায়নীতি ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। বিগত সরকার নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য দুর্নীতিকে উৎসবে পরিণত করেছিল। এর কারণে বিশ্বে বাংলাদেশকে বহুবার দুর্নীতিতে ‘চ্যাম্পিয়ন’ হতে হয়েছে।

সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের দাবি, দেশে ইসলামের জাগরণ ও জনগণের সাড়া দেখে একটি রাজনৈতিক মহল ভয় ও পরাজয়ের আতঙ্কে অসংলগ্ন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য ছড়াচ্ছে। যদি ইসলামি নেতৃত্ব রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়, তবে দেশের প্রতিটি সেক্টরে কোরআনের নীতি-আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হবে। তখনই বাংলাদেশ হবে প্রকৃত ‘মডেল রাষ্ট্র’।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মীদের উদ্দেশে দলটির প্রধান বলেন, ‘কোনো সময় আপনারা ভাববেন না যে এ কেমন দলে আসলাম। অন্য দলে গেলে পকেটে টাকা ঢুকে আর এখানে আমাদের নিজেদের পকেট থেকে বের করতে হয়। ওরা তো টাকা ঢোকায় আর পাঁচ বছর পর্যন্ত তোমারে-আমারে কষ্ট দেবে। তোমাকে-আমাকে ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করবে, টেন্ডারবাজি করবে।’

খুলনা-৩ আসনে হাতপাখার প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আবদুল আউয়াল সম্পর্কে দলটির আমির বলেন, ‘হিন্দু, খ্রিষ্টান আর অন্য দলের লোক বলেন, সবাই অধীর আগ্রহে হাত পাখায় সিল মারার অপেক্ষা করছে। আমি যতটুকু তথ্য পাই, ইসলামী আন্দোলনের ব্যাপারে মানুষের আন্তরিকতা বেশি। খরগোশ ও কচ্ছপের গল্প আপনাদের মনে রাখতে হবে। কাউকে ছোট মনে করা যাবে না। বিজয়ের ফল আমাদের ঘরে না আসা পর্যন্ত আমরা বিরামহীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করব।’

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ হাসান ওবায়দুল করীমের সভাপতিত্বে ও সমন্বয়কারী এস এম হাদিছুর রহমানের সঞ্চালনায় নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির ও খুলনা-৩ আসনের হাতপাখার প্রার্থী আবদুল আউয়াল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও খুলনা-৪ আসনের প্রার্থী ইউনুছ আহমদ, কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক শেখ ফজলুল করীম, খুলনা মহানগর সভাপতি ও খুলনা-২ আসনের প্রার্থী মুফতি আমানুল্লাহ, খুলনা মহানগর সহসভাপতি শেখ নাসির উদ্দীন, আবদুল লতিফ, সেক্রেটারি ইমরান হোসাইন, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ খুলনা মহানগর সভাপতি মুফতি গোলামুর রহমান, খুলনা-৩ আসনের হাতপাখা মার্কার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সালাউদ্দিন, সরোয়ার হোসেন, সমন্বয়কারী আবু গালিব প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম র ল কর ম ৩ আসন আসন র

এছাড়াও পড়ুন:

চুরি করে পালানোর সময় ধরা পড়েন গৃহকর্মী, পরে মা-মেয়েকে হত্যা করেন: পুলিশ

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসা থেকে স্বর্ণালংকার ও মালামাল চুরি করে পালানোর সময় গৃহকর্মী আয়েশা আক্তারকে (২০) ধরে ফেলেন গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজা (৪৮)। লায়লা ও তাঁর মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজের (১৫) সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি হয়। তখন ছুড়ি দিয়ে তাঁদের দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গৃহকর্মী এমন তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সহিদুল ইসলাম।

আরও পড়ুনমোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যায় গৃহকর্মী আয়েশা গ্রেপ্তার: পুলিশ৫ ঘণ্টা আগে

এর আগে আজ সকালে আয়েশাকে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কয়ারচর থেকে স্বামী জামাল সিকদারসহ (২৫) গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ। জামাল একই এলাকার বাসিন্দা ও আয়েশা আক্তার নরসিংদীর সলিমগঞ্জ এলাকার রবিউল ইসলামের মেয়ে।

পুলিশের দাবি, মোহাম্মদপুরে ওই হত্যাকাণ্ডের পর আয়েশা স্বামীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি কয়ারচরে যান।

আরও পড়ুনচার দিনই বোরকা পরে না হয় মুখ ঢেকে এসেছিলেন, তাই গৃহকর্মীর চেহারা পাচ্ছে না পুলিশ২০ ঘণ্টা আগে

এসআই সহিদুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা জানিয়েছেন, লায়লা ও তাঁর মেয়েকে তিনি কুপিয়ে হত্যা করেছেন। এ বিষয়ে আয়েশা ও তাঁর স্বামীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এদিকে আয়েশার স্বামী জামাল সিকদারের বরাতে পুলিশ জানায়, মা-মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল না আয়েশার। স্বর্ণের গয়না ও কিছু মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আয়েশাকে পেছন থেকে ধরে ফেলেন লায়লা। ধরা পড়ার ভয়ে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেন আয়েশা।

আরও পড়ুনমোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, ঘটনার বিবরণে যা লিখেছেন বাদী০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

মা-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় গত সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলার বাদী আ জ ম আজিজুল ইসলাম। তিনি লায়লার স্বামী ও নাফিসার বাবা। মামলায় উল্লেখ করা হয়, সোমবার সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, গত সোমবার এই হত্যাকাণ্ডের মাত্র চার দিন আগে বাসাটিতে গৃহকর্মীর কাজ নেন গ্রেপ্তার নারী। প্রতিদিনই ওই গৃহকর্মী বোরকা পরে নয়তো মুখমণ্ডল ঢেকে বাসাটিতে আসা-যাওয়া করেছিলেন। ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন ওই গৃহকর্মী বোরকা পরে বাসায় যান। আর বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর পরনে ছিল নিহত নাফিসার স্কুল ড্রেস।

আরও পড়ুনগৃহকর্মী এসেছিলেন বোরকা পরে, বেরিয়ে যান স্কুল ড্রেস গায়ে০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ