Prothomalo:
2025-12-10@12:27:58 GMT

সাইবার বুলিং

Published: 10th, December 2025 GMT

বর্তমান যুগে মুঠোফোন, কম্পিউটার ও সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে সাইবার বুলিং বা অনলাইন হয়রানিও। সাইবার বুলিং বলতে অনলাইনে কাউকে হুমকি দেওয়া, গালাগালি করা, অপমান করা বা ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করার মতো কর্মকেই বোঝায়। স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থীরা এ সমস্যার শিকার সবচেয়ে বেশি। অনেক সময় তাদের ছবি বা ভিডিও বিকৃত করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা ভুক্তভোগীদের ওপর তীব্র মানসিক চাপ তৈরি করে।

সাইবার বুলিংয়ের প্রভাব অত্যন্ত গভীর। এটি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তাদের স্বাভাবিক বিকাশ ও শিক্ষাজীবনকে ব্যাহত করে। এ কারণে শিক্ষার্থীরা আত্মবিশ্বাস হারায়, পড়াশোনায় মনোযোগ কমে যায় এবং শিক্ষার অগ্রগতিতে স্থায়ী ক্ষতি ঘটে। তাই শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বাড়াতে ও প্রয়োজনীয় মানসিক সহায়তা দিতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলিং সেবা চালু করা এখন অপরিহার্য।

শিক্ষার্থীদের কল্যাণ ও সুস্থ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তুলতে সাইবার বুলিং প্রতিরোধে সরকারিভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

বুলবুলি হাঁসদা

শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

মাছে রাসায়নিক

মাছে-ভাতে বাঙালি আমরা। মাছ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যের অন্যতম প্রধান উপাদান। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বর্তমানে বাজারে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহারের অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে। অনেক ব্যবসায়ী মাছ তাজা দেখানোর জন্য ফরমালিনসহ বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করেন, যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

নিয়মিত বাজার তদারকি ও কঠোর আইন প্রয়োগের অভাবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। সাধারণ মানুষ বুঝতেও পারেন না—কোন মাছটি ভেজাল বা রাসায়নিকে ভেজা। ফলে তাঁরা অজান্তেই এসব বিষাক্ত মাছ বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকি আরও বেশি।

এ অবস্থায় সরকারি সংস্থার কঠোর নজরদারি, ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিয়মিত অভিযান ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। ভেজালমুক্ত ও নিরাপদ খাদ্য পাওয়া আমাদের মৌলিক অধিকার। তাই মাছের বাজারে রাসায়নিক ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা—সরকার, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা—সবার যৌথ দায়িত্ব।

কাজী মাধুর্য রহমান

শিক্ষার্থী, লোকপ্রশাসন বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

এনভিডিয়ার প্রধান হুয়াং প্রতিদিন ভোর ৪টায় ঘুম থেকে ওঠেন, কেন সব সময় উদ্বেগে থাকেন

মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান এনভিডিয়াকে বিশ্বের প্রথম ৫ লাখ কোটি ডলার মূল্যের কোম্পানিতে পরিণত করেছেন সিইও জেনসেন হুয়াং। এরপরও তাঁর শান্তি নেই। নিজেই স্বীকার করেছেন, তিনি অবিরাম উদ্বেগের মধ্যে থাকেন। ছুটির দিনসহ প্রতিদিন কাজ করেন।

হুয়াংয়ের এই ভয়ের যৌক্তিক কারণও থাকতে পারে। শুধু এই সপ্তাহেই এনভিডিয়ার বাজারমূল্য ২৫ হাজার কোটি ডলার কমে গেছে। খবর বেরিয়েছে, গুগল থেকে শত শত কোটি ডলারের প্রতিযোগী চিপ কেনার জন্য আলোচনা করছে মেটা। এই খবর এআই হার্ডওয়্যারে এনভিডিয়ার কয়েক দশকের আধিপত্যের জন্য হুমকি তৈরি করেছে।

জো রোগান এক্সপেরিয়েন্স পডকাস্টে হুয়াং বলেন, ‘ব্যবসা বন্ধে হয়ে যাওয়া থেকে আর মাত্র ৩০ দিন দূরে আছি আমরা। এ কথাটি আমি ৩৩ বছর ধরে বলে আসছি।’

হুয়াং বলেন, ‘এই অনুভূতি বদলায় না। দুর্বলতা, অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি—এগুলো কখনো আপনাকে ছেড়ে যায় না।’

হুয়াংয়ের এই উদ্বেগ ভিত্তিহীন নয়। এটি বেঁচে থাকার লড়াইয়ের ক্ষতচিহ্ন। ১৯৯০–এর দশকের মাঝামাঝি সেগার গেমিং কনসোলের জন্য প্রযুক্তি তৈরির সময় এনভিডিয়ার গ্রাফিকস চিপে প্রথম মারাত্মক ত্রুটি ধরা পড়ে। তখন অর্থ ফুরিয়ে আসছিল।

সেই সময় হুয়াং জাপানে গিয়ে এক কঠিন আলোচনায় বসেন। তিনি সেগার সিইওকে জানান, তাঁদের পণ্য কাজ করবে না এবং চুক্তি বাতিল করতে হবে। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচতে শেষ ৫০ লাখ ডলার অর্থ দেওয়ার অনুরোধ জানান।

আশ্চর্যজনকভাবে সেগা হুয়াংয়ের এই আবেদনকে বিনিয়োগ হিসেবে গ্রহণ করে। এটাই এনভিডিয়াকে এমন একটি লাইফলাইন দেয়, যা শেষ পর্যন্ত লক্ষ–কোটি ডলারের এক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে।

সেই পতনের কাছাকাছি যাওয়ার অভিজ্ঞতাটিই এখন হুয়াংয়ের নিরলস কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। তিনি প্রতিদিন ভোর চারটায় ঘুম থেকে ওঠেন। উঠেই তিনি ‘কয়েক হাজার ই–মেইল পড়তে’ বসে যান। থ্যাঙ্কসগিভিং বা বড়দিনসহ ব্যতিক্রমী কোনো উৎসব–অনুষ্ঠান ছাড়াই সপ্তাহের সাত দিনই কাজ করেন।

হুয়াং স্বীকার করেন, তিনি ‘সব সময় উদ্বেগের মধ্যে থাকেন’। তার প্রেরণা কী? এনভিডিয়াপ্রধান বলেন, ‘সফল হতে চাওয়ার চেয়ে ব্যর্থ হতে না চাওয়ার তাড়না আমার মধ্যে বেশি কাজ করে। লোভের চেয়ে ব্যর্থতা আমাকে বেশি চালিত করে।’

হুয়াংয়ের এই উদ্বেগ হয়তো একধরনের প্রজ্ঞা। ‘দ্য ইনফরমেশন’ যখন খবর প্রকাশ করেছিল, এ বছর এআইয়ে ৭ হাজার ২০০ কোটি ডলার পর্যন্ত খরচের পরিকল্পনা করছে মেটা। এ জন্য তারা গুগলের টেনসর প্রসেসিং ইউনিট (টিপিইউ) কিনতে বড় ধরনের আলোচনা করছে। এনভিডিয়া তখন প্রকাশ্যে এর বিরোধিতা করে বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়।

‘দ্য ইনফরমেশন’–এর ওই প্রতিবেদনের কারণে এনভিডিয়ার শেয়ার ৬ শতাংশ কমে যায়। এতে প্রতিষ্ঠানটির ২৫ হাজার কোটি ডলার মূল্য মুছে যায়। অন্যদিকে অ্যালফাবেটের (গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান) শেয়ার ৪ শতাংশ বেড়ে যায়।

সাধারণত প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিষয়ে নীরব থাকা এনভিডিয়া ‘এক্স’–এ (সাবেক টুইটার) ঘোষণা দেয়, এনভিডিয়া চিপশিল্পে এক প্রজন্ম এগিয়ে আছে। এটিই একমাত্র প্ল্যাটফর্ম, যা প্রতিটি এআই মডেল চালায়।

তবে গুগলের সর্বশেষ জেমিনি–৩ এআই মডেলে এনভিডিয়ার চিপের পরিবর্তে সম্পূর্ণরূপে টিপিইউর ওপর তৈরি হয়েছে এবং এতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এই শিল্পের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে এটি উন্নত বলে প্রশংসা কুড়িয়েছে।

সেলসফোর্সের সিইও মার্ক বেনিওফ প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন, তিনি তিন বছর পর চ্যাটজিপিটি ব্যবহার বন্ধ করে দিচ্ছেন। তিনি জেমিনি–৩-কে আরও ভালো পণ্য বলে উল্লেখ করেন।

এআই অ্যাক্সিলারেটরের বাজারে এনভিডিয়ার ৯০ শতাংশ অংশীদারত্বের জন্য এই হুমকি অস্তিত্বের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি গুগল এআই প্রসেসরের জন্য ব্যয় হওয়া হাজার হাজার কোটি ডলারের মধ্যে সামান্য অংশও দখল করতে পারে—বিশেষ করে মেটার মতো গ্রাহকদের কাছ থেকে, তবে তা এনভিডিয়ার আধিপত্যে প্রথম গুরুতর ফাটল ধরাবে।

হুয়াংয়ের এই কাজের নেশা তাঁর পরিবারকেও প্রভাবিত করেছে। তাঁর ত্রিশের কোঠায় থাকা দুই সন্তান ম্যাডিসন ও স্পেন্সার এখন এনভিডিয়াতে কাজ করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ