বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ করতে চান আনিসুল ও সালমান
Published: 10th, December 2025 GMT
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ করতে চান সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এ জন্য আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১–এর কাছে আবেদন করেন তাঁদের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।
শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, তাঁর মক্কেল আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ করতে চান। এ জন্য পর্যাপ্ত সময় প্রয়োজন। তা ছাড়া এই দুই আসামির পক্ষে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের অনুমতি দিলে তাঁরা বার কাউন্সিলের কাছে যাবেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের বিরোধিতা করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আসামির পক্ষে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের জন্য আগে বার কাউন্সিলের অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। তারপর ট্রাইব্যুনালের অনুমতি নিতে হবে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, তাঁরা আগে যখন আসামির জন্য বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ করতে চাইতেন, তখন বার কাউন্সিলের অনুমতি নিয়ে আসতে বলা হতো। বার কাউন্সিল অনুমতি দিত না। সে কারণে তাঁরা আসামির জন্য বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারেননি।
তখন আসামিপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘আপনি বার কাউন্সিলে যান না, অসুবিধা কী।’
এ সময় আইনে কী আছে, তা তুলে ধরেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।
একপর্যায়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, তাঁরা (আসামিপক্ষ) সব মেকানিজম করে এসেছেন, যাতে বিচারটা না হয়। তা ছাড়া তাঁরা কখন বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দেবেন, সেটার জন্য ট্রাইব্যুনাল বসে থাকবেন না।
তখন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান মো.
এরপর ট্রাইব্যুনাল এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে ১৭ ডিসেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন।
তবে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানের পক্ষে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো আদেশ দেননি ট্রাইব্যুনাল। যদিও ট্রাইব্যুনাল বলেন, এ বিষয়ে পরে আদেশ দেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র ক উন স ল ন য় গ করত র আইনজ ব ন আস ম আস ম র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে প্রথম জাতীয় আইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে (বিইউ) প্রথমবারের মতো জাতীয় আইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘গ্লোবাল সাউথে আইন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এই আয়োজন গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মো. জাহাঙ্গীর আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল ফারুক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফারহানা হেলাল মেহতাব। সভাপতিত্ব করেন আইন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মোস্তফা।
অধ্যাপক ফারহানা হেলাল মেহতাব বলেন, দেশে অধিকাংশ মানুষ আইন মানতে অনীহা দেখান, যা পরিবর্তনে সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যাবশ্যক। তিনি বলেন, মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা বজায়ে বিভিন্ন আইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গ্লোবাল সাউথে রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি, ধীরবিচার প্রক্রিয়া এবং জবাবদিহির অভাব আইনের শাসনকে দুর্বল করে তুলছে। তারপরও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও মানবাধিকার সংস্থার উদ্যোগে ইতিবাচক পরিবর্তনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন। আইন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারকে শক্তিশালী করেই টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দেশের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে জাতীয় আইন সম্মেলন ভবিষ্যতে দেশ, জাতি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বিকেলে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ সার্ভিসের আইন বিভাগের প্রধান ও প্রতিষ্ঠাতা এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী খালেদ হামিদ চৌধুরী।
সমাপনী বক্তব্যে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী বলেন, সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আইনের প্রয়োজন আরও স্পষ্ট হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই মানবাধিকারসহ সব নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত করা সম্ভব।
দিনব্যাপী এই সম্মেলনের ২টি টেকনিক্যাল সেশনে মোট ১১টি বিষয় নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী, গবেষক এবং শিক্ষকবৃন্দ আলোচনায় অংশ নেন। শিক্ষার্থীদের গবেষণামূলক চিন্তাভাবনা, বিশ্লেষণী দক্ষতা ও একাডেমিক আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকেরা আশা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং আইন বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি