পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “জলবায়ু অর্থায়ন সংস্কারে অবশ্যই স্থানীয় জনগণের চাহিদা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও স্বচ্ছতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।”

তিনি বলেন, “দ্রুত তহবিল বিতরণ, সঠিক পরিকল্পনা, আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী সুরক্ষায় সক্ষম তহবিল কাঠামোই এখন জরুরি।”

আরো পড়ুন:

সরকার পরিবেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করছে: উপদেষ্টা 

বিশ্বের বৃহত্তম শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ঢাকা

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত “বাংলাদেশের জাতীয় জলবায়ু অর্থায়ন কৌশল প্রণয়ন” শীর্ষক পরামর্শ কর্মশালার প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

কর্মশালায় সরকারি উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী এবং জলবায়ু অর্থায়ন বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি মূলত ‘নতুন ও অতিরিক্ত’ সহায়তার নীতির ভিত্তিতে গঠিত হয়েছিল। সময়ের সাথে সেই প্রতিশ্রুতি শিথিল হয়েছে। জলবায়ু সংকটে দায়ী অনেক উন্নত দেশ এখনো বৈজ্ঞানিক সত্য অস্বীকার করে। এই অস্বীকার জলবায়ু অর্থায়নকে জটিল ও অন্যায্য করে তোলে।”

তিনি বলেন, “কয়েকটি দেশ প্রতিশ্রুতি পালন করলেও অনেকে জলবায়ু আলোচনাকে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করে।”

দেশীয় পরিস্থিতিতে তিনি অসম বাজেট বরাদ্দের বিষয়টি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “প্রতি বছর পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সর্বনিম্ন বাজেট বরাদ্দ পায়, অথচ বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। অভিযোজন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় পর্যায়ের স্থিতিস্থাপকতা পর্যাপ্ত অর্থায়ন পায় না।”

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও কার্যকর জাতীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা না থাকার বিষয়েও তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, “শুধু অর্থ দিলেই হবে না। সংস্থাগুলোর পরিকল্পনাগত দক্ষতা, কর্মী সক্ষমতা এবং দ্রুত বাস্তবায়ন ব্যবস্থা থাকতে হবে। সচেতনতামূলক সামগ্রী প্রকাশ করতেও দীর্ঘ সময় লেগে যায়। প্রক্রিয়াই যদি লক্ষ্য হয়ে যায়, তবে ফলাফল ক্ষতিগ্রস্ত হবেই।”

তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রক্রিয়া সহজ করার পাশাপাশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

পরে মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘সবার জন্য ন্যায়বিচার ও অধিকার নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের অঙ্গীকার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “সরকার ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে এখন নবগঠিত পুলিশ কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে—যা পূর্বে ছিল না। সঠিক ব্যক্তি নেতৃত্ব দিলে এটি একটি বড় অর্জন হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা পুলিশের ক্ষেত্রে কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে পেরেছি। বন ও পরিবেশ অধিকার রক্ষাতেও অগ্রগতি হয়েছে। ভবিষ্যতের নেতৃত্ব দেশকে কীভাবে পরিচালনা করবে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। তবে অন্তত মত প্রকাশের যে পরিসর তৈরি হয়েছে, তাতে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া আগের মতো সহজ থাকবে না।”

অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড.

আসিফ নজরুল, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্টেফান লিলার এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও সংসদ বিভাগ সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এএএম/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ উপদ ষ ট অর থ য ন উপদ ষ ট ব যবস থ পর ব শ জলব য

এছাড়াও পড়ুন:

বেনিনে বিদ্রোহী সেনাদের অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনে বিদ্রোহী সেনাদের অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে সেনাবাহিনী। রবিবার দেশটির সরকার এ তথ্য জানিয়েছে।

রবিবার কমপক্ষে আট সেনা সরকারি টেলিভিশনে প্রবেশ করে ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দেয়। সামরিক কমিটি ফর রিফাউন্ডেশন নামে পরিচিত এই দলটি রাষ্ট্রপতি এবং সব রাষ্ট্রীয় শীর্ষ কর্মকর্তাকে অপসারণের ঘোষণা দেয়। সেনারা জানায়, লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্যাসকেল টিগ্রিকে সামরিক কমিটির সভাপতি নিযুক্ত করা হয়েছে।

সেনারা এক বিবৃতিতে বলেছিল, “সেনাবাহিনী বেনিনিজ জনগণকে সত্যিকার অর্থে একটি নতুন যুগের আশা দেওয়ার জন্য দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে ভ্রাতৃত্ব, ন্যায়বিচার এবং কাজ বিরাজ করবে।”

তবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলাসানে সেইদো কয়েক ঘন্টা পরে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির সশস্ত্র বাহিনী অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করেছে।

তিনি বলেছেন, “অতএব, সরকার জনগণকে স্বাভাবিকভাবে তাদের কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওলুশেগুন আদজাদি বাকারি এর আগে রয়টার্সকে বলেছিলেন, সেনাদের ‘একটি ছোট দল’ সরকার উৎখাতের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপতি প্যাট্রিস ট্যালনের অনুগত বাহিনী শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে। অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রকারীরা কেবল রাষ্ট্রীয় টিভির নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছে।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেনিনে বিদ্রোহী সেনাদের অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ