বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল লালমাটিয়ায় অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী পিঠা উৎসব। শনিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপস্থিতিতে জমে ওঠেছিল এ উৎসব।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ইসলামিক স্কলার ও বাংলাদেশে হিফজুল কুরআনসহ ইসলামিক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মুফতি কাজী মুহাম্মদ ইবরাহিম। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ইসলামি স্কলার প্রফেসর মোক্তার আহমেদ এবং এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও হেড অব স্কুল মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সোহাগ এবং প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক গোলাম মোস্তফাসহ স্কুলের অন্যান্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রায় ১০০টি স্টলে দেশীয় বিভিন্ন ধরনের পিঠা প্রদর্শন করেন। ঐতিহ্যবাহী পিঠাগুলোর মধ্যে ছিল ভাপা, চিতই, ঝাল পিঠা, পুলি পিঠা, পাটিসাপটা, গোলাপ পিঠা, নারকেল পিঠা, দুধ চিতই, নকশি পিঠাসহ আরও নানা মুখরোচক পিঠা।

শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ হাতে তৈরি করা পিঠা নিয়ে উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। স্টলে সাজানো বাহারি রকমের পিঠা দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সঙ্গে স্টল ঘুরে পিঠার স্বাদ গ্রহণ করেন এবং নতুন নতুন পিঠা সম্পর্কে জানতে পারেন।

এ বিষয়ে অভিভাবক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, 'এই ধরনের উৎসব শহরের ব্যস্ত জীবনে গ্রামীণ পিঠার স্বাদ ফিরিয়ে আনে। আমাদের সন্তানদের বাঙালি ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করানোর জন্য এ ধরনের আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।'

সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, 'এতো রকমের পিঠা একসঙ্গে আগে কখনো দেখিনি। সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দ করছি এবং পিঠা খাচ্ছি।'

সাবেক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‌'পিঠা উৎসব আমাদের ঐতিহ্যকে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এরকম আয়োজন আরও বেশি হওয়া উচিত।'

পরে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পিঠা উৎসব আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত করা এবং গ্রামীণ ঐতিহ্যকে স্মরণ করানো।

পিঠা উৎসব উপলক্ষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ছিল আনন্দ আর উৎসবের মিলনমেলা। বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করতে এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এমন আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।

কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।

এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।

একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনে দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ, এবারও নেই মেলার আয়োজন
  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক