রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি আবাসিক হল ও কেন্দ্রীয় মসজিদে পোড়া কোরআন শরিফ উদ্ধারের ঘটনার প্রতিবাদে গণকোরআন তিলাওয়াত কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার মুক্ত মঞ্চে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দাওয়াহ কমিউনিটি’র ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষার্থী কোরআন শরিফ থেকে কিছু অংশ তিলাওয়াত করেন। এ সময় বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো.

শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মুসলিমদের জন্য কোরআন হচ্ছে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ এবং পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। একজন মানুষ যেকোনো ধর্মের অনুসারী হতে পারে, কিন্তু কোনো ধর্মই অন্য ধর্মকে অবমাননা করতে শেখায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এ রকম ন্যক্কারজনক ঘটনা বাংলাদেশে এর আগে কখনো ঘটেনি। একটা গোষ্ঠী দেশের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে। অবিলম্বে এসব চক্রান্তকারীকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

আরও পড়ুনরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোড়া কোরআন শরিফ উদ্ধারের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন, তদন্ত কমিটি১২ জানুয়ারি ২০২৫

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, ‘গতকাল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হলে আল্লাহর কালাম পুড়িয়ে রেখে দেওয়া হয়েছে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পরাজিত শক্তি মাথা লুকিয়ে আছে। তাদের ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। তারা চায় আমাদের ক্যাম্পাস অচল হয়ে যাক এবং সমাজে হানাহানি শুরু হোক। পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনা এ ধরনের চক্রান্তের অংশবিশেষ। একটা ধ্বংসাত্মক কর্মসূচির বিপরীতে শিক্ষার্থীদের এত সুন্দর গঠনমূলক কর্মসূচি আমাকে খুশি করেছে।’

উল্লেখ্য, রোববার (১২ জানুয়ারি) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি আবাসিক হল থেকে পোড়া কোরআন শরিফ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার প্যারিস রোডে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্রদল ও ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীসহ বিভিন্ন সংগঠন ঘটনার নিন্দা ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তল্লাশি অভিযান চলছে: ডিএমপি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।

শুক্রবার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার বেলা ২টা ২৫ মিনিটে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ডিএমপি এই ন্যক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

ডিএমপি জানায়, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। থানা-পুলিশের পাশাপাশি ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও স্থানগুলোতে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ঘটনার মতো এই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় জড়িতদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে ডিএমপি আশা করে।

বিজ্ঞপ্তিতে নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে এ ঘটনায় জড়িতদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে তা নিকটস্থ থানা অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’–এর মাধ্যমে পুলিশকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখা এবং নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ডিএমপি আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলেও জানানো হয়।

ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, থানা-ডিবির পাশাপাশি পুলিশের সব ইউনিট হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে কাজ করছে। এ ঘটনায় পল্টন থানায় কোনো মামলা হয়নি।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে যোগাযোগ করা হলে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মো. নাসিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনে এখন পর্যন্ত বলার মতো কোনো অগ্রগতি হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তল্লাশি অভিযান চলছে: ডিএমপি
  • শরীয়তপুরে বেড়ানোর সময় বন বিভাগের কার্যালয়ে আটকে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ