পোড়া কোরআন শরিফ উদ্ধারের ঘটনার প্রতিবাদে গণকোরআন তিলাওয়াত
Published: 13th, January 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি আবাসিক হল ও কেন্দ্রীয় মসজিদে পোড়া কোরআন শরিফ উদ্ধারের ঘটনার প্রতিবাদে গণকোরআন তিলাওয়াত কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার মুক্ত মঞ্চে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দাওয়াহ কমিউনিটি’র ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষার্থী কোরআন শরিফ থেকে কিছু অংশ তিলাওয়াত করেন। এ সময় বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো.
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, ‘গতকাল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হলে আল্লাহর কালাম পুড়িয়ে রেখে দেওয়া হয়েছে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পরাজিত শক্তি মাথা লুকিয়ে আছে। তাদের ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। তারা চায় আমাদের ক্যাম্পাস অচল হয়ে যাক এবং সমাজে হানাহানি শুরু হোক। পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনা এ ধরনের চক্রান্তের অংশবিশেষ। একটা ধ্বংসাত্মক কর্মসূচির বিপরীতে শিক্ষার্থীদের এত সুন্দর গঠনমূলক কর্মসূচি আমাকে খুশি করেছে।’
উল্লেখ্য, রোববার (১২ জানুয়ারি) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি আবাসিক হল থেকে পোড়া কোরআন শরিফ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার প্যারিস রোডে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্রদল ও ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীসহ বিভিন্ন সংগঠন ঘটনার নিন্দা ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?