জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে ইবিতে গণসংযোগ
Published: 14th, January 2025 GMT
‘জুলাই এর প্রেরণা, দিতে হবে ঘোষণা’ দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় শিক্ষার্থীদের মাঝে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরে সংগঠনের সদস্যরা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝাল চত্বর থেকে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ শুরু করেন তারা। পরে বটতলা ডায়না চত্বরসহ বিভিন্ন দোকানে লিফলেট বিতরণ করেন।
লিফলেটের মাধ্যমে তারা গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী খুনি ও দোসরদের বিচারের অঙ্গীকারসহ ৭ দফা দাবি ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির প্রধান সমন্বয়ক এসএম সুইট, সহ-সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, গোলাম রব্বানী, ইয়াসিরুল কবীর সৌরভ, তানভীর মন্ডল প্রমুখ।
এ বিষয়ে সহ-সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই বিপ্লব পরবর্তী আমরা একটা ঘোষণাপত্র জারি করতে চেয়েছিলাম। সরকার সেই ঘোষণাপত্র জারির দায়িত্ব নেয়। কিন্তু সেটা নিয়ে এখনো কোন পদক্ষেপ দেখছি না। জুলাই বিপ্লব রক্ষার জন্য একটি ঘোষণাপত্র প্রয়োজন। তাই আমরা সচেতনতা তৈরির জন্য লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করছি।”
প্রধান সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, “একটা বিপ্লব হওয়ার প্রায় ৬ মাস পরও আমরা একটা ঘোষণাপত্র পাইনি। সেই জায়গা থেকে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র জারির আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, যাতে জনআকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয়। সেই জায়গা থেকে ঘোষণাপত্রের পক্ষে জনসচেতনতা তৈরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করছি। পরবর্তীতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও এ কর্মসূচি পালন করা হবে।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আদালতে আনা হয়। সকাল ৯টার দিকে তাঁকে রাখা হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে নয়টার আগে হাজতখানার ভেতর থেকে এ বি এম খায়রুল হককে বের করা হয়। এ সময় তাঁর মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।
হাজতখানার ভেতর থেকে হাঁটিয়ে আদালতের ভেতরের একটি সরু রাস্তা দিয়ে খায়রুল হককে নিচতলায় সিঁড়ির সামনে আনা হয়। পরে দুজন পুলিশ কনস্টেবল সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের হাত ধরে রাখেন। তিনি হেঁটে হেঁটে নিচতলা থেকে দোতলায় ওঠেন। পরে দোতলা থেকে আবার হেঁটে হেঁটে তিনতলায় ওঠেন। পরে তাঁকে নেওয়া হয় আসামির কাঠগড়ায়। তখন সময় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট। নিজের দুই হাত পেছনে রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তখনো বিচারক আদালতকক্ষে আসেননি। তবে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তখন দেখা যায়, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মাথা উঁচু করে সামনের দিকে তাকাতে থাকেন। কিছুক্ষণ দেখার পর আবার মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন।
সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আদালতকক্ষে আসেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. ছানাউল্লাহ। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা এ বি এম খায়রুল হকের নাম ধরে ডাকেন।
তখন রায় জালিয়াতির অভিযোগে করা শাহবাগ থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খালেক মিয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। এসআই খালেক মিয়া আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় বাতিল করে ২০১১ সালের ১০ মে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। সেই সংক্ষিপ্ত রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মতপ্রকাশ করেন যে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম সংসদ নির্বাচন দুটি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলেও সংবিধান সংশোধনের জন্য মত দেন। ওই সংক্ষিপ্ত আদেশটি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে দেওয়া হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আদেশের পক্ষে বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি), সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) মত দেন। তবে আপিল বিভাগের বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের এই তিন বিচারপতি ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ মর্মে ঘোষণার বিপক্ষে মত দেন।’
প্রিজন ভ্যানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। আজ বুধবার ঢাকার আদালত এলাকায়