সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী মোসাম্মৎ মোমেনা বেগম এবং দুই ছেলে মুহতাসিম আলম ও মুনতাসিম আলমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন।

তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন মামলার অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত। 

আবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব ও স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব (বাধ্যতামূলক অবসরে) জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে ১৫ হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে অর্থপাচার সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন আছে। অনুসন্ধানের বিষয়টি রাষ্ট্রের স্বার্থে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সমূহ আশঙ্কা আছে। এজন্য তাদের বিদেশগমন রোধ করা একান্ত প্রয়োজন।

দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

ঢাকা/মামুন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এক ন ত

এছাড়াও পড়ুন:

চিরচেনা ছবির হারানো নায়কেরা

শত্রুবাহিনীর শক্ত ঘাঁটি লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়ে মারছেন এক কিশোর। তাঁর ডান পাশে রাইফেল তাক করে স্থির বসে আছেন আরও দুজন। তাঁদের বুকে তুষের মতো বদলা নেওয়ার আগুন। আর চোখে পরাধীন দেশকে মুক্ত করার প্রত্যয়। অসম সাহসী এই কিশোরদের পেছনে বিস্তীর্ণ ব্রহ্মপুত্র নদ আর তার পেছনে বিশাল আকাশ। ডিসেম্বর মাস বলে ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা শুকিয়ে এসেছে। নদের ওপারে যে গ্রামটা, তা একটা রেখার মতো মিশে গেছে অসীমায়। এত এলিমেন্টের মধ্যেও কিন্তু ছবির মূল ফোকাস এই তিন কিশোর। তাঁরা যে ঝোপের আড়াল থেকে গ্রেনেড ছুড়ে মারছেন, তার ডান পাশে একটা বরুণগাছ। শত্রুপক্ষের পাল্টা আক্রমণ এলে এই গাছটাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে লড়াইটা চালিয়ে যাবেন তাঁরা। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাঙালি মানসে এই দৃশটি একটি চিরচেনা আলোকচিত্র। বহু মাধ্যমে বহুল ব্যবহারের ফলে এই ছবির নির্মাতা যে নাইব উদ্দিন আহমেদ, তা অনেকেরই জানা। কিন্তু চিরচেনা এই ছবির নায়কদের কথা তেমন কেউ জানে না।

আমি বহুদিন ধরে চেষ্টা করছি এই ছবির নায়কদের খুঁজে বের করতে। অনেক বছর আগে কে যেন আমাকে বলেছিলেন, এই কিশোরদের বাড়ি টাঙ্গাইল অঞ্চলে এখন আর তাঁর নামটা মনে করতে পারি না। ৮ নভেম্বর রাত ১১টা ২৪ মিনিটে আমার হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারটা টুং করে বেজে উঠল। নির্মাতা শরীফ রেজা মাহমুদ লিখেছেন, ‘এই তিন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম আবদুল খালেক, আবদুল মজিদ ও মজিবর রহমান। তঁদের বাড়ির টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার মুশুরিয়া গ্রামে।’ খালেক ও মজিদের ফোন নম্বর দিয়ে শরীফ জানালেন মজিবর মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। শরীফ এই তথ্যগুলো পেয়েছেন শেরপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেহ মো. নূরুল ইসলাম হিরোর কাছে। শরীফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমি পেয়ে যাই এই ঐতিহাসিক ছবির হারানো নায়কদের।

ছবিটি তোলা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর, ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে। ৩ ডিসেম্বর ভারতীয় মিত্রবাহিনী পাকিস্তানি হানাদারদের বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করল। ওই দিনই মিত্রবাহিনীর সঙ্গেই বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করেন এই তিন বীর।মুক্তিযুদ্ধের সেই চিরচেনা ছবি [ময়মনসিংহ, ৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১]। আলোকচিত্র: নাইব উদ্দিন আহমেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ