অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতের প্রতিবাদ জড়িতদের বিচার দাবি
Published: 16th, January 2025 GMT
কুমিল্লা সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাদিমুল হাসান চৌধুরীকে লাঞ্ছিত করে অফিস থেকে বের করে দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে শহরতলীর কোটবাড়ি এলাকায় কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়। এ সময় জড়িতদের বিচার দাবি করা হয়।
অভিযোগ করা হয়, গত সোমবার দুপুরে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে যান সাবেক অধ্যক্ষ ইফতেখার আলম ভূঁইয়া। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাই কাউসার আলম ভূঁইয়াসহ কয়েকজন। এ সময় উত্তেজিত হয়ে ইফতেখার আলম ভূঁইয়াকে বলতে শোনা যায় ‘একদম চুপ, কান ফাটাইয়া ফেলমু, বের হ’। বেশ কয়েকবার থাপ্পড় নিয়ে তেড়ে যান ইফতেখার ও তাঁর ভাই কাউসার। আকস্মিক ঘটনায় হতচকিত হয়ে যান অধ্যক্ষ ও উপস্থিত সবাই। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, অনেকটা বাধ্য হয়ে অধ্যক্ষ বের হয়ে যান। অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার একটি সিসিটিভি ফুটেজ এরই মধ্যে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ইফতেখার আলম প্রতিষ্ঠানটির সাবেক অধ্যক্ষ ও জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন কুমিল্লা মহানগরী শাখার সহসভাপতি।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে কুমিল্লার কোটবাড়িতে সিটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠাতা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ইফতেখার আলম ভূঁইয়া অন্যতম। তিনি কলেজটির প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ পদেও নিয়োগ পান। ৪ বছরের মাথায় পরিচালনা নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় তিনি শেয়ারমানির ২৯ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা তুলে নেন। কিন্তু সরকার পতনের পর ইফতেখার আলম ও তাঁর ভাই কলেজ দখলে নিতে দফায় দফায় কলেজে যান। সর্বশেষ গত সোমবার তিনি লোকজন নিয়ে কলেজে ঢুকে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করেন। তবে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইফতেখার আলম ভূঁইয়া। তাঁর ভাষ্য, তিনি ওই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা।
২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীনের নির্দেশে কলেজটি জবরদখল করা হয়েছিল। তিনি অধ্যক্ষের দপ্তরে গিয়ে উত্তেজিত হয়েছিলেন। অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করেননি।
কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি কামরুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘ইফতেখার আলম ভূঁইয়া জামায়াতে ইসলামীর কোনো পদে নেই। তবে পেশাজীবী সংগঠনের নেতা এবং জামায়াতের রাজনীতি করেন। ভাইরাল ভিডিওটি কুমিল্লা মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমিরের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।’
কলেজের অধ্যক্ষ নাদিমুল হাসান বলেন, ‘আমার কক্ষে ওইদিন যা ঘটেছে, সব সিসিটিভি ফুটেজে আছে। এ জন্য আর সাক্ষ্য-প্রমাণ তদন্তের দরকার হয় না। আমার অফিস কক্ষে প্রবেশ করে এমন অশালীন আচরণ কোনো ভদ্র লোকের পক্ষে সম্ভব নয়।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল ঞ ছ ত কর
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার রহিমাপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে হত্যা করার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে রংপুর–দিনাজপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বক্তারা বলেন, নিজ বাড়িতে দম্পতিকে হত্যা করা হলো অথচ পুলিশ গত পাঁচ দিনেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পারল না। ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
মানববন্ধনে রংপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আহ্বায়ক আনছার আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক শাজাহান খান, সদস্যসচিব ফজলার রহমান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আহ্বায়ক আলী হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি রেজাউল করিম বক্তব্য দেন।
পুলিশ জানায়, গত শনিবার রাতে নিজ বাড়িতে খুন হন বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায়। গত রোববার সকালে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হলে মই বেয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রধান দরজার চাবি খুঁজে পেয়ে খুলে ঘরে ঢোকার পর প্রথমে ডাইনিং রুমে যোগেশ চন্দ্র রায়ের ও রান্নাঘরে সুবর্ণা রায়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান তাঁরা।
আরও পড়ুনরংপুরে নিজ বাড়ি থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার০৭ ডিসেম্বর ২০২৫পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে গত সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে যোগেশ চন্দ্র রায় ও সুবর্ণা রায়ের লাশ তাঁদের বাড়ি নিয়ে আসা হয়। এরপর যোগেশ চন্দ্র রায়কে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রীয় সম্মান শেষে তাঁদের সৎকার করা হয়। এ ঘটনায় দম্পতির বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।