শেখ হাসিনা ভুখা অবস্থায় পালিয়েছেন: টুকু
Published: 18th, January 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, “শেখ হাসিনা ভুলে গিয়েছিলেন, উপরওয়ালা একজন আছেন। তার বিচার যে কতো কঠিন তার প্রমাণ হয়েছে গত ৫ আগস্ট। সেদিন শেখ হাসিনাকে গণভবনের তৈরি করা খাবার ফেলে ভুখা (ক্ষুধার্ত) অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছিল। এটাই আল্লাহর বিচার।”
শনিবার (১৮ জানুয়ারি ) বিকেলে সেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির আহমদ শাহীনের উদ্যোগে সদর উপজেলার শেরপুর বাজারে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টুকু বলেন, “আল্লাহ যদি সম্মান দেয় কেউ আটকাতে পারে না। বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে গিয়েছেন স্পেশাল প্লেনে আর হাসিনা পালিয়েছেন কার্গো প্লেনে। যে প্লেন পণ্য বহণ করে সেই প্লেনে হাসিনা পালিয়ে গেছেন।”
আরো পড়ুন:
ফ্যাসিস্টের দোসররা দেশে বিশৃঙ্খলা করছে: সেলিমা রহমান
ঋণ খেলাপিদের মনোনয়ন দেবে না বিএনপি, ফখরুলের অঙ্গীকার
তিনি আরো বলেন, “গত ১৬ বছর বিএনপির আন্দোলনের ইতিহাস। আমাদের কর্মীদের হত্যা করার ইতিহাস। এই ১৬ বছর বাংলাদেশ ছিল একটা বড় জেলখানা। মানুষ কথা বলতে পারেনি। আনন্দে ঘুমাতে পারেনি। আমাদের কর্মীরা গাছে উঠে কোমরে গামছা বেধে ডালে ঘুমিয়েছিল। আজকে হাসিনা নেই। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নেই। আমরা যদি মনে করি সব জয় হয়ে গেছে, তাহলে ভুল করবেন। আরো কঠিন সময় সামনে বিএনপির জন্য অপেক্ষা করছে।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমরা ক্ষমতায় আসিনি। ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে মাত্র। ক্ষমতায় বিএনপি এসেছে মনে করলে ভুল করবেন। এমন ব্যবহার মানুষের সঙ্গে করবেন না যাতে মানুষ আহত হয় আর ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে তুলনা করে। একটা দল আল্লাহর দোহাই দিয়ে, ধর্মের দোহাই দিয়ে বলে বেরাচ্ছে- আগে ছাত্রলীগ খেয়েছে। আবার আরেকদল খাওয়ার জন্য পাঁয়তারা করছে। আমরাও মুসলমান। আমরা আল্লাহকে বিশ্বাস করি। কিন্তু আল্লাহকে নিয়ে রাজনীতি করি না। তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।”
সেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির আহমদ শাহীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) আলহাজ্জ্ব জিকে গউছ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম ময়ূন, জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল মুকিত, বকশি মিছবাউর রহমান, মুজিবুর রহমান মজনু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিত, ইউপি চেয়ারম্যান আবু মিয়া চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রুবেল আহমদ, জেলা ওলামাদলের সভাপতি মাওলানা আব্দুল হেকিম, মৌলভীবাজার পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার আহমদ, সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মারুফ আহমদ, যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা গিয়াস উদ্দিন, কানাডা বিএনপির সদস্য গাজী কামাল।
ঢাকা/আজিজ/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ আওয় ম ল গ ব এনপ র কম ট র আল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছে। সেই খসড়ায় বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যেটা পেয়েছি, এটা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি। সেটা ভূমিকা, বিস্তারিত বিষয়গুলো নেই। এই খসড়ার সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। কিন্তু খসড়ার কিছু বাক্য, শব্দ ও গঠনপ্রণালি নিয়ে কারও কোনো মতামত আছে কি না, তা জানতে রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়াটি দিয়েছে কমিশন। আমাদের যে সংশোধনী থাকবে, আমরা তা কাল জমা দেব।’
খসড়ায় যে অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে বিএনপি একমত বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, ‘খসড়ায় দুই বছরের ভেতরে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা একমত।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের মধ্যে রাখতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংবিধানে যত বেশি যুক্ত করা হবে, সংশোধন তত বেশি জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই, আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হবে।’
নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই, নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।’
সংস্কার কমিশনের ৭০০–এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে বিএনপি একমত হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।’