পিলখানা হত্যাকাণ্ড: জামিন প্রার্থনায় কারাগারের সামনে স্বজনরা
Published: 19th, January 2025 GMT
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলার আসামিদের জামিন শুনানির দিন ধার্য রয়েছে আজ।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর অস্থায়ী আদালতে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়ার আদালতে জামিন শুনানি হবে।
এদিকে, আসামিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করছেন। প্রিয়জনদের জামিনের প্রার্থনায় মোনাজাত করেন। এ সময় অনেককে অশ্রুসিক্ত দেখা যায়।
গত ১২ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর অস্থায়ী আদালতে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলার বিচারকাজ চলবে মর্মে রাষ্ট্রপতির আদেশ ক্রমে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ৮ জানুয়ারিও একই জায়গার মামলার বিচার চলবে মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ৯ জানুয়ারি ছিল মামলার ধার্য তারিখ। তবে নানা নাটকীয়তার পর বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিচারকাজ চলবে মর্মে আদালত সূত্রে জানা যায়।
এদিকে, আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালত বন্ধের দাবিতে ৮ জানুয়ারি রাত থেকে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এরইমধ্যে ৯ জানুয়ারি ভোরে এজলাস কক্ষ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
আলিয়া মাদ্রাসার আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ভোরে বহিরাগতরা এসে আদালতের এজলাস কক্ষে আগুন দিয়েছে। তারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ কারণে ওইদিন মামলার বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হয়নি। পরে ১৯ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। সে ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।
হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান ২৮৩ জন।
হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন।
অন্যদিকে, হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।
অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজও শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম এক প্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যে কারণে এই মামলার বিচার ঝুলে যায়।
ক্ষমতার পালাবদলের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি উঠছে। গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
এই হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় বেধে দিয়েছে সরকার।
ঢাকা/মামুন/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঘটন য় র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: গৃহকর্মীকে ধরিয়ে দেন শাশুড়ি
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে আলোচিত মা-মেয়ে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশাকে ধরিয়ে দিয়েছেন তার শাশুড়ি রুমা বেগম। এ তথ্য জানিয়েছেন দাদি শাশুড়ি জামেলা বেগম।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কয়ারচর গ্রামের দাদা শ্বশুরের বাড়ি থেকে আয়েশাকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। এসময় গ্রেপ্তার করা হয় আয়েশার স্বামী রবিউল ইসলাম রাব্বিকেও।
আরো পড়ুন:
ছুরিকাঘাতে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কর্মীর মৃত্যু
লালবাগে কারখানা শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা
আরো পড়ুন: মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা, জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলছে আয়েশা
আয়শার দাদা শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানান, ঢাকা থেকে লঞ্চে বরিশালে আসেন আয়শা ও তার স্বামী রাব্বি। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে তারা নলছিটির কয়ারচর গ্রামে দাদা শ্বশুর রুস্তুম সিকদারের বাড়িতে আসেন। গ্রামের আত্মীয়-স্বজনরা প্রথমে তাদের চিনতে পারেননি।
পরিচয় দিলে দাদার ঘরে ওঠেন স্বামী-স্ত্রী। ঘণ্টাখানের মধ্যেই ঢাকার মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে আয়শা ও তার স্বামী রাব্বিকে গ্রেপ্তার করে।
স্বজনরা জানায়, আয়শার শাশুড়ি পুলিশকে জানায়, তার ছেলে ও পুত্রবধূ নলছিটিতে দাদা বাড়িতে আছেন। পুলিশ ওই তথ্য পেয়েই অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
আরো পড়ুন: চুরি করে ধরা পড়ায় মা-মেয়েকে হত্যা করে গৃহকর্মী: পুলিশ
দাদি শাশুড়ি জামেলা বেগম বলেন, “শাশুড়ি রুমা বেগম পুলিশকে তথ্য দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে ছেলে ও পুত্রবধূকে।”
নলছটি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরিফুজ্জামান বলেন, “আমাদের জনিয়ে ঢাকা থেকে টিম এসে অভিযান পরিচালনা করে। তারা আয়েশা এবং তার স্বামী রাব্বিকে গ্রেপ্তার করে।”
ঢাকার মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর থানার ৯ জনের একটি টিম এ অভিযান চালায়।
গত সোমবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে নিজের বাসায় খুন হন মা লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ আসামিকে শনাক্ত করে।
নিহত লায়লা আফরোজ ছিলেন গৃহিণী, তার মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজ মোহাম্মদপুরের প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। নাফিসার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম উত্তরায় সানবীমস স্কুলের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক।
ঢাকা/অলোক/মাসুদ