সাইফ আলী খানের ওপরে হামলার অভিযোগে মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম শেহজাদ ওরফে বিজয় দাস নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পরই মুম্বাই পুলিশ দাবি করে, “শেহজাদ বাংলাদেশের নাগরিক।” কিন্তু শেহজাদের আইনজীবীর দাবি, “এ তথ্য সত্য নয়, মামলাটিকে পরিবর্তন করে ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছে পুলিশ।”

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ভোরে মহারাষ্ট্রের থানে এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শেহজাদকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আজই তাকে আদালতে তোলা হয়। বান্দ্রা কোর্ট, তাকে পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

পুলিশ আদালতকে বলেন, অভিযুক্তর নাম মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম শেহজাদ। তিনি অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেন। গত পাঁচ মাস ধরে এখানে বসবাস করছেন তিনি। কিন্তু শেহজাদের আইনজীবী সন্দ্বীপ শেখরে এসব অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তার ভাষ্য— “পুলিশের অভিযোগ মিথ্যা।”

আরো পড়ুন:

গ্রেপ্তার সাইফের হামলাকারী বাংলাদেশি, মুম্বাই পুলিশের ধারণা

সাইফের ওপর হামলাকারী শাহরুখের বাড়িতেও রেকি করেছিল?

ব্যাখ্যা করে আইনজীবী সন্দ্বীপ শেখরে বলেন, “সে যে বাংলাদেশি তার কোনো প্রমাণ পুলিশের কাছে নেই। পুলিশ বলেছে, ৬ মাস আগে সে এখানে এসেছে। কিন্তু এটা ভুল বক্তব্য। কারণ সে এখানে ৭ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করছে। তার পরিবার মুম্বাইয়ে বসবাস করে। এটি ৪৩এ ধারার স্পষ্ট লঙ্ঘন। এখনো সঠিক কোনো তদন্ত করা হয়নি।”

শেহজাদ আগে বাংলাদেশে থাকার কারণে পুলিশ এটিকে ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছে। এ তথ্য উল্লেখ করে আইনজীবী সন্দ্বীপ শেখরে বলেন, “প্রথমত, সাইফ আলী খান এখনো এমন কোনো বক্তব্য দেননি। অথবা কারো বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগও নেই। এমন কোনো হুমকিও নেই, যা কোনো রাজ্য, বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশ থেকে এসেছে। তার (শেহজাদ) বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কোনো মামলাও নেই। তারা (পুলিশ) মামলাটিকে ভিন্ন পথে পরিবর্তন করেছে। কারণ সে (অভিযুক্ত শেহজাদ) আগে বাংলাদেশে ছিল। কিন্তু সে অনেক বছর ধরেই এখানে বসবাস করছে। কিন্তু পুলিশ বলেছে, ‘সে ৬ মাস ধরে এখানে বসবাস করছে’, এ তথ্য সত্য নয়।”

মামলার শুনানির সময়ে পাবলিক প্রসিকিউটর কিশোর পাতিল বলেন, “শেহজাদ জানে সে একজন তারকার বাড়িতে প্রবেশ করেছিল। এই হামলার সঙ্গে আরো কেউ জড়িত কিনা তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।”

গত ১৫ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাতে সাইফ আলী খানের মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাড়িতে এক দুর্বৃত্ত ঢুকে পড়ে। সে সময় বাড়ির সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। স্টাফ নার্স লিমার চিৎকারে ঘুম ভাঙে সাইফের। এরপর ওই দুর্বৃত্তের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় তার।

একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একাধিকবার সাইফকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় অভিনেতাকে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেদিন সকালে অস্ত্রোপচার শেষে আইসিইউতে রাখা হয়। এরপর সাধারণ বেডে স্থানান্তর করা হয় সাইফকে। খুব শিগগির হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন চিকিৎসকরা।

তথ্যসূত্র: দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বসব স করছ আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

রিট খারিজ, জোটে গেলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান বহাল

নির্বাচনে নিবন্ধিত একাধিক দল জোটভুক্ত হলেও নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করতে হবে—গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধিত এমন বিধানের বৈধতা নিয়ে করা রিট খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

এর আগে নতুন ওই বিধান যুক্ত করে গত ৩ নভেম্বর আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। আগে কোনো রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নিলে জোটের শরিক যেকোনো দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেত। ওই বিধানসংবলিত অধ্যাদেশের ৯ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) মহাসচিব মোমিনুল আমিন গত ৩০ নভেম্বর ওই রিটটি করেন।

রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব প্রথম আলোকে বলেন, শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ অর্থাৎ রিট খারিজ করে দিয়েছেন। এতে করে গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) অধ্যাদেশের ৯ অনুচ্ছেদ বহাল থাকল। ফলে নির্বাচনে নিবন্ধিত একাধিক দল জোটভুক্ত হলেও নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করতে হবে।

রিট আবেদনকারীর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, আলোচনা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) অধ্যাদেশের ওই বিধানসংবলিত ৯ অনুচ্ছেদ সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের (২৮, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদ) সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, রুলে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। আইনসচিবসহ বিবাদীদের ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি নিয়ে আজ রুল ডিসচার্জ (খারিজ) দেন আদালত।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও রাশনা ইমাম, সঙ্গে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রেশাদ ইমাম ও আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী উপস্থিত ছিলেন।

এ মামলায় বিবাদী হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশ কংগ্রেস পক্ষভুক্ত হয়। এনসিপির পক্ষে আইনজীবী জহিরুল ইসলাম মুসা এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের পক্ষে আইনজীবী মো. ইয়ারুল ইসলাম শুনানিতে অংশ নেন।

উল্লেখ্য, জোট করলেও দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল বিএনপি। দলটি নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে তাদের আপত্তির কথা তুলে ধরে। তবে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি এই সংশোধনের পক্ষে। জোট করলেও নির্বাচনে অংশ নিতে হবে নিজ দলের প্রতীকে—শেষ পর্যন্ত এমন বিধান যুক্ত করেই ৩ নভেম্বর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।

আরও পড়ুনজোটে গেলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান প্রশ্নে রুল০১ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাদির ওপর হামলা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: সালাহউদ্দিন 
  • ষড়যন্ত্র ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে দলগুলোর সাড়া
  • জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান
  • ইবিতে হাদি হামলায় মহাসড়ক অবরোধ
  • নির্বাচন না হওয়ার ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে: আমীর খসরু
  • ষড়যন্ত্র রুখতে পারে গণতন্ত্রের প্র্যাকটিস: তারেক
  • বিপিএলে ফিক্সিং: অভিযুক্তদের বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে
  • মানিকগঞ্জ শহরে ককটেল বিস্ফোরণ
  • যে সরকার মামলা প্রত্যাহার করেছে, তাকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছি, এটা অবিশ্বাস্য: আদালতে শওকত মাহমুদ
  • রিট খারিজ, জোটে গেলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান বহাল