বিপিএলে ফিক্সিং: অভিযুক্তদের বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে
Published: 11th, December 2025 GMT
বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবে কারও নাম প্রকাশ না করলেও এটা সবারই জানা যে ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগেই আসন্ন বিপিএলের নিলামে রাখা হয়নি বিতর্কিত ৯ ক্রিকেটারের নাম। আজ গুলশানের নাভানা টাওয়ারে অনুষ্ঠিত বিসিবির ইন্টিগ্রিটি ইউনিটের প্রধান অ্যালেক্স মার্শালের প্রায় ৪৫ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনেও উচ্চারণ করা হয়নি ওই ক্রিকেটারদের নাম।
তবে মার্শাল ৯ ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়ার কারণ ও ২৬ ডিসেম্বর শুরু হতে যাওয়া এবারের বিপিএলকে সুরক্ষিত রাখতে নেওয়া পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতই জানিয়েছেন। মার্শাল বলেছেন, বিপিএলকে ফিক্সিং থেকে নিরাপদ রাখার উদ্দেশ্যেই কিছু খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাকে এবার টুর্নামেন্টে রাখা হচ্ছে না।
বাদ পড়া খেলোয়াড়েরা আগেই দাবি তুলেছেন, প্রমাণ ছাড়াই নাকি তাঁদের বিপিএলের নিলাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে আজ বিসিবির আইনজীবী মাহিন সরকার বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই (প্রমাণ আছে)। না হলে উনি (অ্যালেক্স মার্শাল) কেন এটা সুপারিশ করবেন?’
বিপিএলের সর্বশেষ আসরে ওঠা ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তদন্তে সাবেক বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে বিসিবি। তাঁদের দেওয়া ৯০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অ্যালেক্স মার্শালের করা অধিকতর তদন্তের পর বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল এবারের টুর্নামেন্ট থেকে কিছু খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
মার্শালের কথা থেকে পরিষ্কার—ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে ট্রাইব্যুনালে। তিনি বলেন, ‘হয়তো আমরা মোবাইল নেব পরীক্ষা করার জন্য, প্রমাণ খুঁজব। আর্থিক লেনদেন দেখব। কয়েক মাস পর যখন পুরো কেসটা তৈরি হবে, তখন ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত নেবে, অভিযুক্ত অপরাধী নাকি অপরাধী নয়। যদি তারা অপরাধী প্রমাণিত হয়, তাহলে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হবে।’
আরও পড়ুনবিপিএলে ফিক্সিং রোধে প্রতিটি দলের সঙ্গে থাকবেন দুজন সিআইডি সদস্য ০১ ডিসেম্বর ২০২৫বিসিবির দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, বিপিএল ছাড়া অন্যান্য ঘরোয়া টুর্নামেন্টে তাঁদের খেলতে বাধা নেই। কিন্তু কেউ যদি অভিযুক্ত হন, তাহলে তাঁকে কেন সব টুর্নামেন্টেই নিষিদ্ধ করা হবে না, এমন প্রশ্ন ওঠেই। এ ব্যাপারে বিসিবির আইনজীবীর ব্যাখ্যা, ‘এ মুহূর্তে ওনার (অ্যালেক্স মার্শালের) কাজের পরিধি শুধু বিপিএলেই সীমাবদ্ধ। এখানে যা কিছু আসবে বা পরামর্শ দেওয়া হবে, সেটা এ–সংক্রান্তই।’
শুধু খেলোয়াড় নয়, বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির কয়েকজন কর্মকর্তাকেও এবারের বিপিএলের বাইরে রাখছে গভর্নিং কাউন্সিল। অ্যালেক্স মার্শাল জানিয়েছেন, অভিযোগ পেলে যে কারও বিরুদ্ধেই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘যদি এমন (অভিযুক্ত) কেউ থাকে যার অংশ নেওয়াটা ঠিক হবে না, তাহলে তারা অংশ নিতে পারবে না। কিন্তু তদন্ত চলমান বলে এ ব্যপারে কথা বলার সময় আমাকে সতর্ক থাকতে হচ্ছে।’
ফিক্সিংয়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে কঠোর কোনো আইন নেই। তবে খেলাধুলায় জুয়া ও ফিক্সিং ঠেকাতে এ–সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের সুপারিশ করেছে তিন সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটি। এ ব্যাপারে বিসিবির আইনজীবী বলেন, ‘এটা নিয়ে বিভিন্ন এজেন্সি ও বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী সংস্থার সঙ্গে আমাদের কথা হচ্ছে। খেলাধুলায় ফিক্সিং ও এ–সংক্রান্ত দুর্নীতিকে যেন অপরাধ হিসেবে দেখা হয়, আমরা এ রকম একটি আইন প্রণয়নের সুপারিশ করব।’
আরও পড়ুনবিপিএলের সূচি প্রকাশ: কবে, কোথায়, কখন কার ম্যাচ০২ ডিসেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব প এল র র ব প এল তদন ত অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর–৪ আসনে অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ
ফরিদপুর-৪ আসনের অধীন ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দা উপজেলার সঙ্গে জুড়ে দেওয়াসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেটের অংশটুকু অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি হামিরদী ও আলগী ইউনিয়ন পরিষদকে ফরিদপুর–৪ সংসদীয় আসনে অন্তর্ভুক্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট নোটিফিকেশন জারি করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
রায়ের পর রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ফরিদপুরের-৪ আসনের অধীন ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দা উপজেলার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেটের এই অংশটুকু অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এই দুই ইউনিয়ন পরিষদকে আগের মতো ফরিদপুর–৪ সংসদীয় আসনে অন্তর্ভুক্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনে জুড়ে দেওয়ার গেজেট গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর প্রতিবাদে গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রথমে দুই মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। সেদিনের কর্মসূচি থেকে তিন দিনের সময়সীমা বেঁধে যাওয়া হয়। কিন্তু দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ৯ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে আবার অবরোধ শুরু হয়। এরপর তিন দিন সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এদিকে ইসির ৪ সেপ্টেম্বরের প্রজ্ঞাপনকে চ্যালেঞ্জ করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর ৪ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. শহিদুল ইসলাম বাবুল ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহবুবুর রহমান দুলালসহ পাঁচজন গত ৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে ওই রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. কাউছার, নাঈম সরদার ও আশরাফুল করিম। ইসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাবিবুর রহমান।