ভারত থেকে আমদানি করা ৫ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে এসেছে। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এ চাল এনেছে খাদ্য অধিদপ্তর।
সোমবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে খাদ্য অধিদপ্তরের ভারত থেকে আমদানি করা ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চালের প্রথম চালান ৫ হাজার ৭৫০ টন বাংলাদেশে এসেছে। এ চাল নিয়ে এমভি ফু থানহ ৩৬ জাহাজটি মংলা বন্দরে ভিড়েছে।
জাহাজে থাকা চালের নমুনা সংগ্রহ করে ভৌত পরীক্ষা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে উল্লেখ করে ইমদাদ ইসলাম বলেন, দ্রুতই জাহাজ থেকে চাল খালাস শুরু হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১১ জানুয়ারি উন্মুক্ত দরপত্র চুক্তির আওতায় ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাডা বন্দর থেকে ২৬ হাজার ৯৩৫ মেট্রিক টন চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছিল এমভি এসডিআর ইউনিভার্স।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যালয়ের ভবন বানাতে পাহাড়ে কোপ, দরপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত
চট্টগ্রামে পাহাড় কাটার অভিযোগ উঠেছে নগরের হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয় চত্বরে নতুন ভবন নির্মাণের নামে প্রায় দেড় মাস ধরে পাহাড় কাটা হয়েছে। তবে অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর এখন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড়ের একটি অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। কাটা হয়েছে বেশ কয়েকটি গাছ। এগুলো পরিষ্কার করে জমি সমতল করার কাজও চলছে।
চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ নুরুল আমিন ভবন নির্মাণের জন্য ছাড়পত্র চেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আবেদন করেন। কিন্তু ২৭ ফেব্রুয়ারি অধিদপ্তরের পরিচালক সোনিয়া সুলতানা লিখিতভাবে জানিয়ে দেন, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুসারে পাহাড় বা টিলা কাটা যাবে না। তবু বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের প্রস্তুতিমূলক কাজের আড়ালে পাহাড় কাটা চলতে থাকে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক নিজামী পাহাড় কাটার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে, তাই ভবন নির্মাণ করা দরকার। পাহাড়টি সামান্য কাটার কথা ছিল। কিন্তু বেশি কাটা হয়েছে। তবে তিন সপ্তাহ ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে।
এক সপ্তাহের মধ্যে দরপত্র বাতিল করা হবে। ভবন নির্মাণ আর এগোবে না। কোনো পাহাড় কাটা হবে না। পাঁচতলা ভবনটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা।মো. কামরুল আহসান, নির্বাহী প্রকৌশলী, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরপরিবেশ অধিদপ্তর ২ ডিসেম্বর গিয়ে পাহাড় কাটার কাজ বন্ধ করে দেয়। জানতে চাইলে অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম নগর কার্যালয়ের পরিচালক সোনিয়া সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, পাহাড় ও গাছ কেটে ভবন তৈরির কোনো সুযোগ নেই। আইন অমান্য করে পাহাড় কাটা হলে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে তিনি ভবন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক এ এস এম এমদাদুল কবীরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ এস এম এমদাদুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়টি ঘটে থাকলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। শিগগিরই বিদ্যালয়ে প্রতিনিধিদল পাঠাবেন। কতটুকু পাহাড় কাটা হয়েছে, কেন কাটা হয়েছে—এসব বিষয় খতিয়ে দেখবে ওই কমিটি।
দরপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত
মহসিন স্কুলের ভবন নির্মাণ চলছে ‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায়। এ প্রকল্পে সারা দেশে ৩২৩টি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের আরও চারটি সরকারি বিদ্যালয়ে ৬ থেকে ১০ তলা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু মহসিন স্কুলে অনুমতি ছাড়া পাহাড় কাটার অভিযোগ ওঠায় এ প্রকল্পের দরপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে দরপত্র বাতিল করা হবে। ভবন নির্মাণ আর এগোবে না। কোনো পাহাড় কাটা হবে না। পাঁচতলা ভবনটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নথি বলছে, ২০১৫ সাল থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাহাড় কাটার অভিযোগে মামলা হয়েছে ৮০টি। কিন্তু অধিকাংশ মামলাই অর্থদণ্ডে নিষ্পত্তি হয়েছে।পাহাড় কাটার ঘটনায় পরিবেশকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ২ ডিসেম্বর দুপুরে পাঁচ পরিবেশকর্মী ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক নিজামীর কাছে পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চান। তাঁরা প্রধান শিক্ষককে বলেন, পাহাড় কেটে ভবন হতে পারে না।
পরিবেশকর্মী রিতু পারভী বলেন, ‘গাছ কাটার খবর শুনে গিয়ে দেখি পাহাড়ও কাটা হচ্ছে। আরও কাটার প্রস্তুতি ছিল। আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণের আর কোনো উদাহরণ তৈরি হতে দেব না।’
পাহাড়ের সঙ্গে কাটা হয়েছে কয়েকটি গাছ। সম্প্রতি তোলা