সদস্যদের নামে ভুয়া ঋণ তোলেন মাঠ সংগঠক
Published: 23rd, January 2025 GMT
খুলনার কয়রায় দরিদ্র নারীদের জন্য ‘সমন্বিত পল্লী কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্পে’র (ইরেসকো) প্রায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকল্পটির মাঠ সংগঠক জাহানারা খাতুন সমিতির সদস্যদের নামে ঋণ বিতরণ দেখিয়ে প্রকল্পের ব্যাংক হিসাব থেকে ওই টাকা তুলে নিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রকল্প পরিচালকের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা। বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে তদন্ত চলছে।
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) কয়রা উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাঁচটি সমিতির ১২৫ সদস্যের নামে ৪৮ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই টাকা সদস্যদের মাঝে বিতরণ না করে মাঠ সংগঠক জাহানারা খাতুন নিজেই তুলে নেন। নিয়ম অনুযায়ী, মাঠ সংগঠককে সমিতির সদস্যদের ঋণের তালিকা প্রস্তুত করে পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার কাছে পাঠাতে হয়। পরে তিনি অনুমোদন দেন। ঋণগ্রহীতার নামের তালিকা মাঠ সংগঠকের মাধ্যমেই ব্যাংকে যায়।
অভিযোগ উঠেছে, মাঠ সংগঠক জাহানারা খাতুন ঋণগ্রহীতার ভুয়া তালিকা তৈরির পর প্রকল্পের ব্যাংক হিসাব থেকে নিজেই টাকা তুলে নেন। তিনি প্রকল্পের নিয়ম উপেক্ষা করে এক অর্থবছরে একজন ঋণগ্রহীতার ভিন্ন ভিন্ন নাম (ফাতিমা খাতুন, ফাতিমা উল্লাহ, ফাতিমা আক্তার) দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া টাকা তোলার জন্য ঋণগ্রহীতার স্বামীর নামও পরিবর্তন করেছেন। ঋণের কিস্তির টাকা অনাদায়ী হওয়ায় ব্যাংক হিসাব তলবের পর এসব অনিয়ম ও জালিয়াতি ধরা পড়ে।
কয়রার সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (এআরডিও) মো.
এআরডিওর বক্তব্যের সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাহানারা ২০১৩ সালে পাইকগাছা পল্লী উন্নয়ন অফিসের দায়িত্বরত ‘পল্লী প্রগতি’ প্রকল্প ছেড়ে কয়রা পল্লী উন্নয়ন অফিসে ইরেসকো প্রকল্পে যোগদান করেন। পাইকগাছায় কর্মরত থাকা অবস্থায় কয়েকটি সমিতির সদস্যদের নামে ঋণ দেখিয়ে প্রায় ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। পাইকগাছা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদ মুরাদ বলেন, ‘এটি অনেক আগের ঘটনা। আমি এখানে যোগদানের পর ওই মাঠ সংগঠকের অনিয়মের কথা জেনেছি। তাঁর কর্মকালীন প্রায় ৩৪ লাখ টাকা ঋণ অনাদায়ী। ওই সব ঋণগ্রহীতার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।’
এসব বিষয়ে জানতে জাহানারা খাতুনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। পরে গতকাল বুধবার অফিসে গেলে তিনি এ প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
বিআরডিবির উপপরিচালক মো. নাসির উদ্দীন বলেন, মাঠ সংগঠক জাহানারা খাতুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা থেকে একটি দল গত সপ্তাহে এসে তদন্ত করে গেছে। তাদের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ঠ স গঠক জ হ ন র প রকল প ন কর ম ঋণ দ খ কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল