পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ ও আদালত ঘেরাও কর্মসূচির পর আদালত অঙ্গনে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে বিচারকাজ থেকে বিরত রয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের চার বিচারক। এতে  দু’দিন ধরে আদালতের স্বাভাবিক বিচারিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অন্য আদালতগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চললেও আগের কর্মচাঞ্চল্য নেই। 

এদিকে বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে বিচারকাজ থেকে বিরত থাকা চার বিচারকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্টে জিএ (জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) কমিটির বিশেষ সভা আহ্বান করেছেন প্রধান বিচারপতি। 

সুপ্রিম কোর্ট সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই চার বিচারককে অন্যত্র বদলি করা হবে। তাদের বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

আদালত সূত্র জানায়, জেলা জজ আদালত ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতসহ পঞ্চগড়ের বিভিন্ন আদালতে ১৭ জন বিচারক রয়েছেন। ২৬ জানুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের মুখে জেলা ও দায়রা জজসহ চার বিচারক চার দিনের ছুটি নেন। তবে বিচারকাজ স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস এম রেজাউল বারীকে বিশেষ দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি গত সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারকাজ পরিচালনা করলেও আজ কোনো জামিন শুনানি করেননি। এতে আদালতের স্বাভাবিক বিচারকাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় আইনজীবীরা। 

জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জমিরুল ইসলাম বলেন, আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক চলছে। 

জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আহসান হাবিব বলেন, আদালতে বিচারকাজের স্বাভাবিক গতি নেই। চার বিচারক ছুটিতে আছেন। অন্য বিচারকরা আদালত পরিচালনা করছেন। কিন্তু অনেক বিচারপ্রার্থী আদালতে এসে মামলা শুনানির নতুন তারিখ নিয়ে ঘুরে গেছেন।

পাবলিক প্রসিকিউটর আদম সুফি বলেন, বিচারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। চার বিচারককে বদলি করা হবে, না তারাই কাজে যোগ দেবেন বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের জন্য সবাই অপেক্ষা করছেন।

জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ করেন পরীক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে ওই দিনই বিক্ষোভে যুক্ত হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। তখন বিক্ষোভের মুখে নিয়োগ কমিটির পক্ষ থেকে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

বিয়ে-তালাকের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: হাইকোর্ট

বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

আদালত বলেছেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে, যাতে প্রতিটি তথ্য সরকারি ব্যবস্থায় সুরক্ষিত থাকে; ডেটাবেজ সম্পূর্ণ কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য হয় এবং নাগরিকেরা বিশেষ করে নারীরা সহজেই তথ্য যাচাই করতে ও ডিজিটাল কপি সংগ্রহ করতে পারেন।

বিবাহ ও তালাকের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশনে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এবং তিন ব্যক্তি ২০২১ সালের ৪ মার্চ রিট করেন।

রিট আবেদনের ভাষ্য, বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর তথা ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। স্বামী বা স্ত্রী বিয়ের তথ্য গোপন করে অনেক ক্ষেত্রে আবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ডিজিটাল আর্কাইভের অনুপস্থিতিতে অনেক সময় সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তা ও জটিলতা দেখা যায়।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পারিবারিক জীবনের বৃহত্তর সুরক্ষায় বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ডিজিটালাইজেশনের জন্য কেন্দ্রীয় একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।

রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য পুরোপুরি ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রুল নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দিয়ে রায় দেওয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান, তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশে পরিবারের নিরাপত্তা, নারীর সুরক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, আইনগত স্বচ্ছতা এবং সবচেয়ে বড় বিষয় বিয়ে–তালাকসংক্রান্ত প্রতারণা বন্ধে ঐতিহাসিক এক পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে গোপন বিয়ে, একাধিক বিয়ে লুকানো, পূর্ববর্তী তথ্য গোপন, তালাক প্রমাণের জটিলতা—এসব সমস্যা ব্যাপকভাবে কমবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানে নোবেলজয়ী মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি গ্রেপ্তার
  • বিপিএলে ফিক্সিং: অভিযুক্তদের বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে
  • আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর–৪ আসনে অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ
  • বিয়ে-তালাকের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: হাইকোর্ট
  • মানিকগঞ্জ শহরে ককটেল বিস্ফোরণ
  • রিট খারিজ, জোটে গেলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান বহাল
  • মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী ৬ দিন, তাঁর স্বামী ৩ দিনের রিমান্ডে
  • গাজীপুর কারাগারে ‘আয়নাবাজির’ ঘটনায় আদালতে মামলা, আইনজীবীকে শোকজ