বাঙালির জীবনে পিঠা কেবল একটি খাবারই নয় বরং এটি ঐতিহ্য, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। বিশেষ করে শীতকালে পিঠা তৈরির ধুম পড়ে যায় গ্রামাঞ্চলে। কালের বিবর্তনে কংক্রিটের শহরে এই ঐতিহ্যের প্রচলন উঠে গেলেও রাজধানীর মিরপুরস্থ সরকারি বাঙলা কলেজ মাঠে সুস্বাদু ও বাহারি রঙের পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছিল প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা।   
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাঙলা কলেজ বিজনেস অ্যান্ড ক্যারিয়ার ক্লাবের সহযোগিতায় রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দিনব্যাপী চলে ‘তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’। এই আয়োজনে বাংলা সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির স্বাদ এবং ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে ফুটে উঠে। কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বাংলা সংস্কৃতির এই আয়োজন মিলনমেলায় রূপ নেয়।
‘জুলাই বিপ্লবকে’ অর্থবহ করতে তারুণ্যের প্রতীক হিসেবে ‘৩৬ জুলাইকে’ সকলের মাঝে তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী শক্তিকে প্রদর্শনে এই উৎসবের আয়োজন হয়।
 
এদিন সকালে উৎসবের উদ্বোধন করেন বাঙলা কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুল হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মিটুল চৌধুরী, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক নাহিদা পারভীন। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অন্যান্য কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকরাও এতে অংশ নেন।
আয়োজনের শুরুতে অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুল হাসান বলেন, “পিঠা উৎসব আমাদের শেকড়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। আমাদের লক্ষ্য, তরুণ প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করা। তারুণ্যের এই উৎসব, প্রচেষ্টারই একটি উদাহরণ। এরকম আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ তৈরি করবে।”
 
উৎসবে ২০টি স্টলে দেশের ঐতিহ্যবাহী ৫০ প্রকারের বেশি পিঠার প্রদর্শনী করা হয়। নকশি পিঠা, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠাসহ নানা স্বাদের পিঠার ঘ্রাণে মুখরিত ছিল পুরো প্রাঙ্গণ। এসব স্টলে পসরা সাজিয়ে বসে কলেজের সব বিভাগ, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা, বাঙলা কলেজ সাংবাদিক সমিতি (বাকসাস), বিএনসিসি, স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন বাঁধন, রেডক্রিসেন্ট, গার্লস গাইড, লিও ক্লাব, বাঙলা কলেজ ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি সোসাইটি এবং রোভার স্কাউটস।
 
উৎসবকে আরো রঙিন করে তোলে জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে নাচ, গান, আবৃত্তি ও নাটক পরিবেশন করেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনগুলোয় প্রথম আলোর জমজমাট আয়োজন
২৭ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে প্রথম আলোর। ৪ নভেম্বর ২০২৫ সংখ্যাটিতে লেখা থাকবে বর্ষ ২৮, সংখ্যা ১। যা কিছু ভালো, তার সঙ্গে প্রথম আলো—এই স্লোগান নিয়ে ১৯৯৮ সালের ৪ নভেম্বরে বেরিয়েছিল প্রথম আলোর প্রথম সংখ্যা। ঝকঝকে ছাপা, রঙিন ছবি, ১২ পৃষ্ঠার কাগজ, প্রতিদিন নতুন নতুন ফিচার পাতা, দলনিরপেক্ষতার অঙ্গীকার, বস্তুনিষ্ঠতার চর্চা, পেশাদারত্বের উৎকর্ষ আর নতুনকে মেনে নেওয়ার অবিরাম প্রয়াস—সব মিলিয়ে প্রথম আলো হয়ে ওঠে বাংলাদেশের মানুষের এক অপরিহার্য সঙ্গী। হয়ে ওঠে পরিবারেরই একজন। অল্প কয়েক বছরের মধ্যে প্রথম আলো লাভ করে সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকের সম্মান। নানা রকমের বাধা, প্রতিকূলতা পেরিয়ে সত্যে তথ্যে প্রথম আলো আজ শুধু একটা কাগজ নয়, একটা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মও। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বে প্রথম আলো লাভ করেছে বাংলাভাষী পাঠকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা, তেমনি ওয়ান–ইফরা বা ইনমার মতো আন্তর্জাতিক সংগঠন থেকে এ গণমাধ্যম লাভ করছে সম্মানজনক স্বীকৃতি, বিশ্বসেরা আর এশিয়া সেরার পুরস্কার।
প্রথম আলোর ঢাকা অফিস থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এরই মধ্যে বেজে উঠেছে উৎসবের আনন্দলহরী। জেলায় জেলায় চলছে প্রথম আলোর লেখক–সুধী পাঠক আর শুভানুধ্যায়ীদের সম্মিলনীর প্রস্তুতি। কাগজে, অনলাইনে, ভিডিও, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের জন্য কর্মী আর অংশীজনদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে কর্মচাঞ্চল্য।
প্রথম আলো কাগজটি মোট ৪ দিন প্রকাশিত হবে বর্ধিত কলেবরে। ৪ দিনে থাকবে ৪টি ক্রোড়পত্র। লিখবেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে সেরা লেখকেরা। থাকবে দেশবরেণ্য শিল্পীদের আঁকা প্রচ্ছদ।
৪ নভেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার বের হবে ‘বৈষম্য পেরিয়ে’
২০২৪ সালের বিপুল অভ্যুত্থানে ছাত্র–জনতা পথে এসেছিল বৈষম্যের বিলোপ চেয়ে। এই ক্রোড়পত্রে লেখকেরা খুঁজে দেখছেন রাষ্ট্রের ক্ষমতাকাঠামোয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ও রাজনীতির অঙ্গনে বৈষম্যের রূপ। খোঁজার চেষ্টা করেছেন উত্তরণের উপায়।
৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার প্রকাশ পাবে ‘বৈষম্যের অন্দরে’
সমাজ আর জনগোষ্ঠীর গভীরে থেকে যাওয়া বৈষম্য প্রতিফলিত হয় রাষ্ট্রে। আবার রাষ্ট্রীয় বৈষম্য সামাজিক বৈষম্যকে ভিত্তি দেয়। দেশের নারী–লেখক ও ভাবুকেরা উন্মোচন করে দেখিয়েছেন সমাজে ছড়িয়ে থাকা নানা বৈষম্যের চেহারা।
৬ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার আসছে ‘তারুণ্যের দিগন্ত’
তরুণদের সামনে নতুন পৃথিবীর আহ্বান। কিন্তু সে আহ্বানে সাড়া দেওয়ার পথে শত বাধা ও বৈষম্যের প্রাচীর। আবার তরুণেরাই সেসব বৈষম্যের বাধা উপড়ে ফেলে এগিয়ে চলেন। তরুণদের পথের সেসব বাধা আর বাধা পেরোনোর গল্প নিয়ে এই ক্রোড়পত্র।
৭ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার প্রকাশিত হবে ‘আলোর গল্প’
সাংবাদিকতা শেষ পর্যন্ত জনমানুষের জন্য। সত্য ও তথ্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য প্রথম আলো সেসব মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ। প্রথম আলোর নানা উদ্যোগের লক্ষ্যও মানুষ। এই ক্রোড়পত্র গত একটি বছরে প্রথম আলোর সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের গল্পের সমাবেশ।
অনলাইনে থাকছে আকর্ষণীয় আয়োজন
লেখা, ছবি, ভিডিও, পডকাস্টসহ নানা কনটেন্ট দিয়ে সাজানো হবে প্রথম আলো ডটকম, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দালোকিত দিনগুলোতে প্রথম আলো ডটকম থাকবে জমজমাট। পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, টিকটকসহ সামাজিক মাধ্যমগুলোতে প্রথম আলোর ফলোয়ারদের জন্য থাকবে বাড়তি কিছু, উৎসবের উপহার।
প্রথম আলোর কর্মীরা মিলবেন প্রীতিসম্মিলনীতে
৪ নভেম্বর প্রথম আলো তার সব কর্মীকে নিয়ে আয়োজন করতে যাচ্ছে প্রীতিসম্মিলনী। রাজধানীর একটি বড় মিলনায়তনের একাধিক হলরুমজুড়ে বসবে এই আসর। তাতে সারা দেশের প্রথম আলো প্রতিনিধি, ঢাকার সর্বস্তরের স্টাফদের সঙ্গে যোগ দেবেন প্রথম আলোর আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরাও। থাকবেন অতিথি বক্তা ও শিল্পীরা।
প্রথম আলো বন্ধুসভার একটি করে ভালো কাজ
এরই মধ্যে সারা দেশে প্রথম আলোর শতাধিক বন্ধুসভা ‘একটি করে ভালো কাজ’ শীর্ষক কর্মসূচি পালন করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সুধী সম্মিলনী আয়োজনের জন্য প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বন্ধুসভা কাজ করে চলেছে উৎসাহের সঙ্গে। ঢাকা বন্ধুসভাও ১৩ নভেম্বর আয়োজন করতে যাচ্ছে বন্ধুদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎসব।
২০২৩ সালে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্লোগান ছিল ‘হারবে না বাংলাদেশ।’ গত বছর প্রথম আলো বলেছিল ‘জেগেছে বাংলাদেশ’। সত্যে তথ্যে ২৫, সত্যে তথ্যে ২৬ পেরিয়ে এল ২৭ বছর পূর্তির উৎসব।
প্রথম আলো আজকের দিনে, যখন চারদিকে ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি, যখন দেশবাসী অনিশ্চয়তার ধোঁয়াশার মধ্যে দিগন্তে তাকিয়ে আছেন আলোকরেখার জন্য, তখন প্রথম আলো ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কী স্লোগান নিয়ে আসছে? জানা যাবে আর কয়েক ঘণ্টা পরই।