সেতু রক্ষা ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ
Published: 1st, February 2025 GMT
কুলাউড়ায় রাজাপুর সেতুসংলগ্ন এলাকা থেকে অবাধে বালু উত্তোলনের কারণে ঝুঁকির মুখে রয়েছে সেতুটি। স্থানীয়দের আপত্তির পরও অব্যাহত রয়েছে বালু তোলার কাজ। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন উপজেলার বাসিন্দারা। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট এলাকায় চলমান ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার দাবিও জানান তারা।
রাজাপুর সেতু রক্ষায় সংলগ্ন এলাকার বালুমহালের ইজারা বন্ধ, সেতুর উভয় পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং রাজাপুর ও ধলিয়া বেড়িবাঁধের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিতে শনিবার মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তিন ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
এদিন দুপুরে স্থানীয় সমাজসেবক আমির আলীর সভাপতিত্বে ও সংগঠক ফয়জুল হকের পরিচালনায় রাজাপুর সেতুর ওপর হাজীপুর, শরীফপুর ও পৃথিমপাশা ইউনিয়নবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি করেন। স্থানীয়দের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য দেন মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়া আসনের সাবেক এমপি নওয়াব আলী আব্বাছ খান, উপজেলা সিপিবির সভাপতি ও পৃথিমপাশা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ, পৃথিমপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকদ্দস আলী, ইসলামী আন্দোলনের নেতা মাওলানা আছলাম হোসেন রহমানী, উপজেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোশাররফ আলী, পৃথিমপাশা ইউপির সাবেক সদস্য আব্বাছ আলী, হাজীপুর ইউপি সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান রুমেল ও মনিরুজ্জামান হেলাল, প্রভাষক গিলমান আলী, সংগঠক সৈয়দ আতাউর রহমান, ছাত্র সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম, সংবাদকর্মী হাসান আল মাহমুদ রাজু, মাহদী হাসান প্রমুখ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মানববন্ধনে উপস্থিত ব্যক্তিরা জানান, উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তিন ইউনিয়ন হাজীপুর, শরীফপুর ও পৃথিমপাশার মানুষের দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল রাজাপুর সেতু। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে সেতু ও এর সংযোগ সড়ক নির্মাণে ৯৯ কোটি ১৭ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ব্যয়ে কুলাউড়া-পৃথিমপাশা-হাজীপুর-শরীফপুর সড়কের ১৪তম কিলোমিটারে ২৩২ দশমিক ৯৪ মিটার পিসি গার্ডার সেতু, সাড়ে সাত কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং প্রকল্পের কাজের জন্য জমি অধিগ্রহণের অনুমোদন দেয় একনেক। পরবর্তী সময়ে ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালে রাজাপুর সেতুর নির্মাণকাজ শেষ
হয়। সেতুর দু’পাশের সংযোগ সড়কের কাজ শেষ না করায় ওই সেতুতে এখনও শুরু হয়নি যান চলাচল। স্থানীয় লোকজন অপারগ হয়ে সেতুর দুই পাশে বালু দিয়ে ভরাট করা অস্থায়ী রাস্তা বানিয়ে তা ব্যবহার করছেন।
এদিকে রাজাপুর সেতু এলাকা থেকে নদীশাসন আইন না মেনে বর্তমান ইজারাদার অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন, যার কারণে সেতু চালু হওয়ার আগেই তা হুমকির মুখে পড়ে। বালু তোলার কারণে সেতুর পিলারের নিচ থেকে বালু ও মাটি সরে গিয়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। সম্প্রতি জেলা প্রশাসক বরাবর রাজাপুর সেতুর সংযোগ সড়কের কাজে ধীরগতির অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন পৃথিমপাশা, হাজীপুর ও শরীফপুর ইউনিয়নের ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমের আগে দ্রুত সংযোগ সড়কের কাজ সম্পন্ন করে সেতুতে যানবাহন চালু করা এবং সেতুর নিকটবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ ও ইজারা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার বেড়িবাঁধের কাজ দ্রুত শেষ করার কথাও জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বালুমহালের বর্তমান ইজারাদার খালেদ আহমদ জানান, সরকারি নিয়ম মেনেই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের কারণে সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তিনি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন জানান, রাজাপুর সেতুর উভয় পাশে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন না করতে ইজারাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাল পতাকা দিয়ে সীমানা নির্ধারণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়ছার হামিদ জানান, সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে চিঠি দিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে। তারপরও যদি সেতুর নিচ থেকে বালু তোলা হয়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনিও জানান, সেতুটির সংযোগ সড়কের কাজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই এ এলাকার মানুষের ভোগান্তি দূর হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন অলীদ জানান, রাজাপুর ও ধলিয়া এলাকার প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজে জটিলতা ছিল। এতে সেতুসংলগ্ন সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে। তা ছাড়া অর্থ সংকটের কারণে অনেক ঠিকাদার কাজ শুরু করতে দেরি করেছেন। চেষ্টা করা হচ্ছে এসব কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স য গ সড়ক ন র ম ণ স য গ সড়ক র ক জ র স য গ সড়ক এল ক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন, দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনর্বহাল এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ২১ দফা দাবিতে শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদের সভাপতিত্বে এবং একেএম মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নিউ নেশন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এ আর ফররুখ আহমেদ খসরু, ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মো: মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক মনির হোসেন, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম হানিফ, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার সাংবাদিক উজ্জল হোসেন মাসুম, দৈনিক ইয়াদ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মেহবুব মিয়া, দৈনিক পূর্বাভাস পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি, দৈনিক দেশ পত্রিকার সাংবাদিক মোখলেসুর রহমান তোতাসহ প্রমূখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতি কার্য্যকর, সাংবাদিকদের বেতন সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রনয়ন, সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি ২দিন নির্ধারণ, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, গনমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিল, আইন অনুযায়ী সাংবাদিকদের ন্যায্যা পাওনা আদায়ের জন্য পৃথক শ্রম আদালত স্থাপন সহ ২১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ আমরা মানববন্ধন করছি।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান অনতিবিলম্ভে আমাদের এসব দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি এম আর কালাম, নাহিদ আজাদ, বাংলাদেশ নিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ইমতিয়াজ আহমেদ, নিউজ টুয়েন্টিফোর টেলিভিশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি শরিফ সুমন, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি মোশতাক আহমেদ, বাংলাদেশের খবর পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি আল আমিন, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাব্বির হোসেন, মানব জমিনের ফতুল্লা প্রতিনিধি আবু সাঈদ পাটুয়ারী রাসেল, মুসলিম টাইমসের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সাইফুল্লাহ খালিদ রাসেল, চ্যানেল এস এর সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন মুল্লা, দৈনিক সংগ্রামের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ইখতিয়ার রাহয়ান, সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম আরজু, এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, সম্রাট প্রমুখ।