পোষ্য কোটা বাতিল ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান নেন।

এরপরই দুপুর পৌনে ২টার শিক্ষার্থীরা বটতলা থেকে একটি মিছিল বের করে বিভিন্ন হল, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে অবস্থান নেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের অনশনের মুখে পোষ্যকোটা সংস্কারের প্রতিবাদে কর্মবিরতি ঘোষণা করে মিছিল নিয়ে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে আসেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনা জানাজানি হলে দুপুর পৌনে ২টার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বটতলা এলাকা থেকে একটি মিছিল নিয়ের করে বিভিন্ন হল, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরোধ করে রাখেন।

বিক্ষোভে ‘দাবি মোদের একটাই পোষ্য কোটার বাতিল চাই’, ‘হলে হলে খবর দে পোষ্য কোটার কবর দে’, ‘সংস্কার না বাতিল,  বাতিল বাতিল’, ‘শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

এর আগে, সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২ টায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সংস্কারের আশ্বাস দিলে অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে, বিকেলে উপাচার্য রেজিস্ট্রার, ট্রেজারার ও প্রক্টরসহ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে এলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের উপর্যুপরি স্লোগানে উপাচার্য কোন কথা বলতে পারেননি। তবে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্রদলের কর্মীরা প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা করেছেন বলে অভিযোগ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।

পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চার দফা দাবি উত্থাপন করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানা হলে পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচিতে দেওয়ার হুশিয়ারি দেন তারা।

দাবিগুলো হলো- পৌষ্য কোটা সম্পূর্ণ  বাতিল করতে হবে; আজ যারা কর্মচারীদের আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ ও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের চিহ্নিত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাকরিচ্যুত করতে হবে; পরবর্তীতে কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারী যদি ক্যাম্পাস অচল করার ঘোষণা দেয় তাদেরও চাকরিচ্যুত করতে হবে এবং ব্যাংক হিসাব স্থগিত করতে হবে।

আন্দোলনরত ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহরাব তূর্য বলেন, “দুদিন অনশন করার পর প্রশাসন যৌক্তিক সংস্কারের আশ্বাস দিলে আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আজ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা মিছিল করে এবং আমাদের একজন শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করেন। এখন আমাদের একটাই দাবি, পোষ্য কোটা বাতিল করতে হবে। উপাচার্য কোন সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে আমরা আগামীকাল থেকে পুরো জাহাঙ্গীরনগর অচল করে দেব।”

কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভে অফিসার সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান বাবুল উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে। তিনি আশুলিয়া থানা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বহিষ্কৃত কর্মকর্তা।

আন্দোলন নিয়ে শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সোহেল রানার ফেসবুক পোস্ট

এছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গুপ্ত সংগঠনের এ, বি, সি টিম বলে অভিহিত করেছেন শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সোহেল রানা। এক ফেসবুক পোস্টে এ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ভিডিওচিত্র শেয়ার দিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

অন্যদিকে, পোষ্য কোটার জন্য আগের সব সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্মকর্তা–কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান বাবুল বলেন, “পোষ্য কোটা একটি প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা। বাংলাদেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই এ সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। যতদিন পর্যন্ত পূর্বের সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহাল করা না হবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।”

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রশাসনিক ভবন ছেড়ে চলে গেলেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সেখানেই অবস্থান করতে দেখা গেছে। সমস্যার সমাধানে শিক্ষার্থীদের কাছে সময় চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ ন র কর ম

এছাড়াও পড়ুন:

জাহাঙ্গীরনগরে সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু, আসনপ্রতি পরীক্ষার্থী ১২১

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষে কলা ও মানবিকী অনুষদ, আইন অনুষদ এবং তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটভুক্ত সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ছাত্রীদের প্রথম পালায় ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। এ বছর ছাত্রীদের তিন পালায় এবং ছাত্রদের আলাদা তিন পালায় মোট ছয় পালায় সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

আরও পড়ুননাসা ইন্টার্নশিপ, হাইস্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের সুযোগ৫ ঘণ্টা আগে

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেদ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা যায়, এ বছর সি ইউনিটে ৪৪০টি আসনের বিপরীতে মোট আবেদন জমা পড়ে ৫৩ হাজার ৪০১টি। সে হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে ১২১ জন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব সৈয়দ মোহাম্মদ আলী রেজা বলেন, ‘আজ সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে ষষ্ঠ শিফটের মাধ্যমে পরীক্ষা শেষ হবে। এখন পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা চলছে। কোনো অভিযোগ পাইনি।’

আরও পড়ুনভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে ত্রুটি, ৮০টির জায়গায় প্রশ্ন ৭৮টি১৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে মারধরের অভিযোগ
  • আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবি, ঢাবিতে ছাত্রদলের দুই কর্মীর আমরণ অনশন
  • হুমায়ুন ফরীদির জীবনে কত গল্প...
  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১৭২ জনের বিরুদ্ধে মামলা জাবি ছাত্রদলের 
  • ফাগুনের রঙে বিষাদ ছড়ানো হুমায়ুন ফরীদি
  • জাহাঙ্গীরনগরে সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু, আসনপ্রতি পরীক্ষার্থী ১২১
  • পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গেস্টরুম’ সংস্কৃতির অবসান, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি
  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ই’ ইউনিটের ফল প্রকাশ, দেখুন
  • তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে কর্মসূচি ঘোষণা
  • অপূর্ণাঙ্গ প্রশ্নে জাবির ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা