কোরআন পোড়ানোর পরই রাবি থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্ত
Published: 4th, February 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলসহ মসজিদে পবিত্র কোরআন শরিফ পোড়ানোর ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার করছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিট।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে আরএমপির ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার মো.
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হলের মুক্তমঞ্চ, শহীদ জিয়াউর রহমান হল, শহীদ হবিবুর রহমান হল, মাদার বখ্শ হল, মতিহার হল, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক হলের মসজিদের মেঝেতে ও শেলফে পবিত্র কোরআন শরিফ পোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। পবিত্র কোরআন শরীফের এরূপ অবমাননার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মপ্রাণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
আরএমপির বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের নির্দেশনায় আরএমপির মতিহার থানা পুলিশের পাশাপাশি আরএমপি সিটিটিসি এবং সাইবার ক্রাইম ইউনিট একটি চৌকস টিম মামলাটির তদন্ত শুরু করে। তদন্তের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও অন্যান্য স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে পবিত্র কোরআন শরিফ পোড়ানোর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, আরএমপি সিটিটিটি বিভাগ ও সাইবার ক্রাইম ইউনিটের একটি সমন্বিত অভিযানিক দল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সহায়তায় ফেরদৌস রহমানকে ময়মনসিংহের ভালূকা থানার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ফেরদৌস রহমান ফরিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর মসজিদে পবিত্র কোরআন শরিফ পোড়ানোর ঘটনার সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেন। তার বক্তব্যসহ অন্যান্য বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ঘটন রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
নিখোঁজের একদিন পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার, আরেকজনের খোঁজ মেলেনি এখনও
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে সিফাত (১১) ও সাদাব (৪) নামে দুই শিশু নিখোঁজের একদিন পর পরিত্যক্ত একটি ডোবা থেকে সিফাতের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপর শিশু সাদাবের সন্ধান মেলেনি এখনও।
শনিবার চরশাখচূড়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, পাগলা থানার চরশাখচূড়া ও দিঘীরপাড় গ্রামে শুক্রবার দুপুরে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় দুই শিশু।
নিহত শিশুদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সৌদি প্রবাসী নূর ইসলামের ছেলে ও চরশাখচূড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র সিফাত শুক্রবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল। দিনভর তার স্বজনরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন। তবে কোথাও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশু সিফাতের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা প্রকাশ করেন স্বজনরা। এই সুযোগে এক প্রতারক চক্র অপহরণের কথা বলে নিহত শিশুটির পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণের নামে কিছু টাকা আদায়ও করে নিয়ে যায়।
শনিবার সকাল ৭টার দিকে শিশুটির বাড়ি থেকে আনুমানিক ১৫০ গজ দুরে একটি পরিত্যক্ত পুকুরে তার মরদেহ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী। পরে তারা পাগলা থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। তবে, সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী মরদেহের শরীরে দৃশ্যমান কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
নিহত শিশু সিফাতের মা সাবিনা (৪০) অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। তাদের কোনও শক্র নেই। তবে গ্রামের শহিদুলের ছেলে আরমান তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে বাড়িতে এসে ঝগড়া করে এবং তাদের ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছিলেন।
এ ঘটনার পর থেকে আরমান গা ঢাকা দিয়েছেন বলে এলাকাবাসী জানান।
নিহত শিশু সিফাতের মামা জিসান (৩০) জানান, আমার ভাগিনা নিখোঁজ হওয়ার পর যখন খোঁজাখুঁজি করছি, এমন সময় আমার দুলাভাই নুর ইসলাম প্রবাস থেকে ফোন করে বলেন, উনার কাছে ২০ হাজার টাকা চেয়েছে ছেলেকে জীবিত উদ্ধারের জন্য। আমাকে অপহরণকারীদের ফোন নম্বর দিলে আমি ওদের সাথে যোগাযোগ করি এবং তাদের দেওয়া নম্বরে প্রথমে ২ হাজার টাকা বিকাশ করি। পরে অপহরণকারীরা উল্টা-পাল্টা কথা বললে আমি আর টাকা দেইনি।
পুলিশ জানায়, শিশু সিফাতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারঘুরিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী আল আমিনের সাড়ে চার বছর বয়সী ছেলে সাদাব গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার দিঘীরপাড় গ্রামে তার মায়ের সঙ্গে নানার বাড়িতে থাকতো। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সে ঘর থেকে বের হয় খেলার জন্য।
শিশুটির পরিবার জানায়, গত দুইদিন ধরে সে নিখোঁজ। বাড়ির আশেপাশের সব পুকুর ও সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির খোঁজ না পেয়ে চরম উৎকণ্ঠায় আছে শিশুটির পরিবার।
শিশুটির মা সুমাইয়া আক্তার (২৩) দাবি করেন, তার একমাত্র ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির নানা সুলতান মিয়া পাগলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে।
পাগলা থানার ওসি মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেছেন, শিশু সিফাতের ঘটনা অপহরণ ও মুক্তিপণের কোনও বিষয় নয়। এখানে পূর্বশত্রুতাসহ সম্ভাব্য বেশ কয়েকটি কারণ নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। নিখোঁজ শিশু সাদাবকে উদ্ধারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।
এদিকে, একই দিনে দুইজন শিশু নিখোঁজ হওয়া এবং একজন শিশুর মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।