কানাডায় পাচার হওয়া অর্থ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে দেশটির সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঢাকায় কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ সহযোগিতা চান। খবর বাসসের।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার শাসনামলের ওলিগার্ক ব্যবসায়ী, তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বাংলাদেশ থেকে শত শত বিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করেছে। যার একটি অংশ কানাডায় পাচার হয়েছে, বিশেষ করে টরন্টোর কুখ্যাত ‘বেগমপাড়া’ এলাকায় সম্পদ কেনার মাধ্যমে।’ তিনি কানাডায় পাচার হওয়া সম্পদ শনাক্ত, জব্দ এবং পুনরুদ্ধারে সহায়তা চান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা আমাদের জনগণের টাকা চুরি করে বেগমপাড়ায় সম্পদ কিনেছে। আমরা এই সম্পদ পুনরুদ্ধারে আপনাদের সহায়তা চাই। এটি আমাদের জনগণের সম্পদ।’
ড.

ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার চুরি হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তাকে স্বাগত জানান কানাডার হাইকমিশনার। সম্পদ পুনরুদ্ধারের এ উদ্যোগে কানাডা সরকার সহায়তা করবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। তিনি জানান, কানাডার সরকার চিহ্নিত ব্যক্তিদের পাচার করা অর্থ জব্দ এবং তা পুনরুদ্ধারের জন্য একটি ‘প্রক্রিয়া’ চালু রেখেছে।

হাইকমিশনার আরও জানান, বাংলাদেশে গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া সংস্কার কর্মসূচিতে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য তাঁর দেশ প্রস্তুত। রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আপনারা যে মহৎ কাজ করছেন, আমরা তা সমর্থন করি। ইতোমধ্যে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা প্রশংসনীয়। আমরা জানতে আগ্রহী, আরও কীভাবে আপনাদের সাহায্য করতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, কানাডা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করতে কানাডার একজন মন্ত্রী শিগগির দেশে আসবেন। 
অধ্যাপক ইউনূস নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, আমরা কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে চাই। কানাডীয় কোম্পানিগুলো তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করুক।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে বহু বাংলাদেশি কানাডায় বসবাস ও পড়াশোনা করছে। তাই ঢাকায় কানাডার একটি ভিসা অফিস স্থাপন করা প্রয়োজন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সহয গ ত ইউন স সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে ফিরতে রাজি হয়েছে, জানালেন ট্রাম্প

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্ত এলাকায় সব ধরনের গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে রাজি হয়েছে। শুক্রবার থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ কথা জানিয়েছেন। 

ট্রাম্প একে একে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেতের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। শুক্রবার এসব ফোনালাপের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশ দুটির অবস্থান জানান ট্রাম্প। 

আরও পড়ুননিজেদের ভূখণ্ড থেকে কম্বোডিয়ার বাহিনীকে সরিয়ে দিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে থাইল্যান্ড০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজের ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেন, ‘তাঁরা (থাইল্যান্ড আর কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী) আজ সন্ধ্যা থেকেই সব ধরনের গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে রাজি হয়েছেন। মালয়েশিয়ার দুর্দান্ত প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সহায়তায় প্রস্তুত করা যে শান্তি চুক্তিতে আমার এবং তাঁদের দুজনের সই রয়েছে, সেটায় ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা।’ 

সপ্তাহজুড়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে চলা সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন। দেশ দুটির বিরোধপূর্ণ সীমান্তের দুপাশে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। 

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে গত জুলাইয়ে প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপ ও মালয়েশিয়ার প্রত্যক্ষ উদ্যোগে দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়। থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে তাদের বাণিজ্য সুবিধা স্থগিত করার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। 

আরও পড়ুনকম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে সংঘাতে থাই সেনা নিহত, পাল্টা বিমান হামলা থাইল্যান্ডের০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

অক্টোবরে আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের সম্মেলনে অংশ নিতে ট্রাম্প মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে যান। তখন থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার যুদ্ধবিরতি চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে সই হয়। চুক্তিতে সই করেন দেশ দুটির প্রধানমন্ত্রীরা। সই করেন ট্রাম্পও। 

থাইল্যান্ড গত নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থগিত করে। সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে কয়েকজন থাই সেনা আহত হওয়ার পর ব্যাংককের পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে। 

আরও পড়ুনথাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া কেন সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়েছে, সমাধান কোন পথে ২৬ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ