ভুয়া জামিনে বেরিয়ে আসা দুই আসামি গ্রেপ্তার
Published: 7th, February 2025 GMT
হবিগঞ্জে ভুয়া জামিননামা দিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে যাওয়া দুই পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে ফের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আসামিরা হলেন– সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ থানার পাগলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের সজলু মিয়ার ছেলে আজাদ মিয়া ও একই থানার লেবু মিয়ার ছেলে সোয়েব মিয়া। এর আগে ৫ জানুয়ারি শান্তিগঞ্জ থানা এলাকায় দিনভর অভিযান পরিচালনা করা হয় তাদের গ্রেপ্তারে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আলমগীর কবির জানান, এ ঘটনায় পলাতক আরও দুইজনসহ জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কারাগার থেকে ভুয়া জামিননামায় বেরিয়ে যাওয়া দুইজনই মাদক মামলার আসামি ছিলেন।
৬ জানুয়ারি জেলার মাধবপুরে ৩৫ কেজি গাঁজাসহ র্যাবের হাতে ধরা পড়েন ৪ মাদককারবারি। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ২৬ জানুয়ারি বিবাদীদের জামিন আবেদন করা হয়।
এদিকে ২৯ জানুয়ারি বিরোধীপক্ষের আইনজীবী ওই দুই আসামির জামিনের ব্যাপারে আদালতে যান। পরে আদালত সূত্রে জানতে পারেন মাদক মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামির মধ্যে আজাদ মিয় ও সোয়েব মিয়া কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেস। পরে ৩০ জানুয়ারি আইনজীবী ফয়সল এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য আদালতে গিয়ে জানতে পারেন আসামিরা জামিনে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ আছেন। তারা ভুয়া জামিননামা তৈরি করে জিআরও অফিসে কর্মরত একজনের সহায়তায় তা জেলা কারাগারে পাঠিয়ে বেরিয়ে যান। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার সন্দেহে জিআরওর সহযোগী হোসাইন মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিয়ে-তালাকের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: হাইকোর্ট
বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
আদালত বলেছেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে, যাতে প্রতিটি তথ্য সরকারি ব্যবস্থায় সুরক্ষিত থাকে; ডেটাবেজ সম্পূর্ণ কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য হয় এবং নাগরিকেরা বিশেষ করে নারীরা সহজেই তথ্য যাচাই করতে ও ডিজিটাল কপি সংগ্রহ করতে পারেন।
বিবাহ ও তালাকের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশনে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এবং তিন ব্যক্তি ২০২১ সালের ৪ মার্চ রিট করেন।
রিট আবেদনের ভাষ্য, বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর তথা ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। স্বামী বা স্ত্রী বিয়ের তথ্য গোপন করে অনেক ক্ষেত্রে আবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ডিজিটাল আর্কাইভের অনুপস্থিতিতে অনেক সময় সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তা ও জটিলতা দেখা যায়।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পারিবারিক জীবনের বৃহত্তর সুরক্ষায় বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ডিজিটালাইজেশনের জন্য কেন্দ্রীয় একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য পুরোপুরি ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রুল নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দিয়ে রায় দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান, তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশে পরিবারের নিরাপত্তা, নারীর সুরক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, আইনগত স্বচ্ছতা এবং সবচেয়ে বড় বিষয় বিয়ে–তালাকসংক্রান্ত প্রতারণা বন্ধে ঐতিহাসিক এক পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে গোপন বিয়ে, একাধিক বিয়ে লুকানো, পূর্ববর্তী তথ্য গোপন, তালাক প্রমাণের জটিলতা—এসব সমস্যা ব্যাপকভাবে কমবে।