খুলনায় যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ, জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ
Published: 7th, February 2025 GMT
খুলনায় যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। আজ শুক্রবার বিকেলে নগরের টুটুল নগর মোস্তফার মোড় এলাকায় আয়োজিত কর্মসূচি থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান নিহত গৃহবধূর স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
নিহত মারিয়া সুলাতানা বৈশাখী (২২) নগরের মুজগুন্নী ভিক্টোরিয়া ক্লাবের বিপরীতে সরদার বাড়ির মাসুম বিল্লাহর স্ত্রী। মারিয়ার বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য মারিয়াকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। ৪ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনার দিনই খালিশপুর থানায় মারিয়ার স্বামী মাসুম বিল্লাহ (৩৪) ও শাশুড়ি নুরজাহান বেগমের (৫৫) বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে হত্যার অভিযোগে মামলা করা হয়।
আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মারিয়ার বাবার বাড়ি নগরের টুটুলনগর মোস্তফার মোড় এলাকায় স্বজন ও প্রতিবেশীরা দীর্ঘ মানববন্ধন তৈরি করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে মারিয়া হত্যার বিচার দাবি জানানো হয়। এ সময় তাঁরা আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় তাঁরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও করেন।
মারিয়ার বাবা মোহাম্মদ মিলন হোসেন বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে স্বামী ও শাশুড়ি দুজন সব সময় অত্যাচার করত। যৌতুকের টাকা চাইত। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আমি একাধিকবার যৌতুক দিয়েছি। মাসখানেক আগেও আমার মেয়েকে যৌতুকের টাকা এনে দিতে বলায় সে রাজি না হওয়ায় স্বামী ও শাশুড়ি মিলে মারধর করে।’
মিলন হোসেন বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর মেয়েকে মারধর করে মেরে ফেলে হাসপাতালে নেওয়া হয়। মেয়ের মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে জামাতাসহ তাঁদের সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে হুমকি দেন। তাঁরা মারিয়ার মৃতদেহ বাবার বাড়িতে নিয়ে দাফন করার জন্য চাপ দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানায় মৃত অবস্থায় মারিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। মারিয়ার শরীরে মারধরের আঘাতের চিহ্ন ছিল।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা খালিশপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, আইনানুগ প্রক্রিয়ায় তদন্ত চলছে। আসামি দুজন পলাতক আছে। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫