আওয়ামী লীগ আমলে গুমের শিকার তিন ছাত্রদল নেতার সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন
Published: 10th, December 2025 GMT
বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ‘গুমের শিকার’ হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রদল নেতার সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে অংশ নিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারাও।
আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে ছাত্রদল ও শিক্ষকনেতারা মাজহারুল ইসলাম রাসেল, আসাদুজ্জামান রানা ও আল আমিনের সন্ধান দাবি করেন। একই সঙ্গে তাঁরা ‘গুমের শিকার’ সব নেতা-কর্মী ও নাগরিককে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। এ ছাড়া কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোর নির্যাতন, হামলা ও হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেন বক্তারা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জকসু) ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা বলেন, ‘আজ ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে অনেকে গুমের শিকার হয়েছেন। কতজনের বিচার চাইব আমরা?’
খাদিজাতুল কোবরা আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন দেশে আমরা আমাদের ভাইদের সন্ধানে দাঁড়িয়েছি। আমরা এমন একটি দেশ চাই, যেখানে কেউ গুম হবে না, সবাই ন্যায্য বিচার পাবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আমলে অনেক বিএনপি নেতা গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। অনেক শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের হাতে হামলার শিকার হয়েছে। আমাদের অনেক ভাই গুম হয়েছে, অনেককে ফিরে পেয়েছি। কিন্তু আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের তিন ভাইকে এখনো আমরা খুঁজে পাইনি।’
মেহেদী হাসান বলেন, ‘বিগত ১৭ বছর আমরা মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছি। প্রশাসনের যারা গুম ও খুনের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচার চাই। যারা হয়রানির শিকার তাদের সহমর্মিতা জানাচ্ছি। সামনের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল কাজ করবে।’
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো.
রইছ উদ্দীন প্রশ্ন রাখেন, ‘১০ ডিসেম্বর আসে, আর আমরা মানববন্ধন করে তাদের সন্ধান চাই, স্মরণ করি, আবার পরদিন ভুলে যাই। তাদের পরিবারের এখন কী অবস্থা, আমরা কি তা জানি?’
এ সময় রইছ উদ্দীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা গুম হয়েছে, সব ক্যাম্পাসে তদন্ত কমিটি হয়েছে। দুঃখজনক বিষয়, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়নি। আমি এই দিনে আহ্বান জানাচ্ছি, এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা গুম হয়েছে, তাদের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হোক।’
মানববন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র র সন ধ ন ন বল ন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ১৫ দফা দাবি
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ১৫ দফা দাবি তুলে ধরেছে।
১০ ডিসেম্বর (আজ বুধবার) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। এ উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে মানবাধিকার সংগঠনটি। এ সময় জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগঠনটি ১৫ দফা দাবি তুলে ধরেছে।
কর্মসূচিতে অংশ নেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) কর্মকর্তা-কর্মচারী, তাঁদের পরিবার এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘স্পিক আপ’ প্রকল্পের তরুণেরা। এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালের এ দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। এ ঘোষণার মাধ্যমে স্বীকৃত হয়, মানবাধিকার সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। জন্মস্থান, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বিশ্বাস, অর্থনৈতিক অবস্থা কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে মানবাধিকার সর্বজনীন ও সবার জন্য সমান। প্রত্যেক মানুষ জন্মগতভাবেই এসব অধিকার লাভ করেন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের বাইরে গিয়েও প্রতিদিনই মানবাধিকার বিষয়ে জাগ্রত ও সোচ্চার থাকতে চাই। আইন ও সালিশ কেন্দ্র কখনো মানবাধিকার বিষয়ে কারও কাছে মাথা নত করেনি, কারও সঙ্গে আপস করেনি। যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, সেখানেই আইন ও সালিশ কেন্দ্র সব সময় সোচ্চারভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছে।’
নারী অধিকারের বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সংস্থার এই উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘আইনের ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে কিন্তু নারী ও শিশুর প্রত্যয়ী সহিংসতাগুলো বন্ধ হয়নি। এটি নিয়েও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। আজ বুধবার, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে