কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বাসা থেকে নিখোঁজ শিশু বিজয় (১ মাস) হোসেনের দুই দিনেও সন্ধান মেলেনি।
শিশুটির মায়ের অভিযোগ, শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিজয়কে প্রতিবেশী সেজে এক নারী বাসা থেকে নিয়ে পালিয়ে যান। তবে রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুন্ডি এলাকার পাকুড়িয়া গ্রামের বাবুল হোসেন বাবু ও সোনিয়া দম্পতির সন্তান বিজয় হোসেন। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাসা থেকে শিশুটি চুরি হয় বলে ওই দিন বিকেলে পরিবারের পক্ষ থেকে জিডি করা হয়। এরপর থেকে শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ শুরু করে পুলিশ।
শিশুটিকে উদ্ধারের দায়িত্বে থাকা দৌলতপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদশা বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত শিশুটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি।”
পুলিশ ও শিশুর পরিবারের লোকজন জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিজয়কে ঘরের বারান্দায় শুইয়ে রেখে তার মা সোনিয়া খাতুন গোসল করতে যান। এসময় প্রতিবেশী সেজে একজন নারী এসে শিশুটিকে আদর করার কথা বলে নিয়ে যান। পরে শিশুটির আর সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
শিশুর বাবা বাবুল হোসেন বাবু বলেন, “ক্ষেতের কাজ শেষে বাড়ি ফিরে দেখি বাসায় বাচ্চা নেই। প্রতিবেশী সেজে এক নারী এসে বাচ্চাকে নিয়ে যায়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও বাচ্চাকে পাওয়া যায়নি।”
নিখোঁজ শিশুর মা সোনিয়া খাতুন বলেন, “বাচ্চার গোসল ও খাওয়ানো শেষ করে বারান্দায় শুইয়ে রেখে বাড়ির টিউবওয়েলে গোসল করছিলাম। এসময় প্রতিবেশী সেজে এক নারী এসে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে বাড়ির বাইরে নিয়ে যান। পরে তিনি আর ফেরত আসেননি।”
খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “বাচ্চাটি উদ্ধারে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। শিশুটির বাবা বাবু হোসেনের দুজন স্ত্রী। পারিবারিক কলহের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারব।”
ঢাকা/কাঞ্চন/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস