টেকনাফে নৌকাসহ ৪ জেলেকে অপহরণ করল আরাকান আর্মি
Published: 11th, February 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে মাছ ধরার সময় নৌকাসহ চার জেলেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর মুখ এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয়। টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণ নৌ-ঘাটের সভাপতি বশির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপহৃত জেলেরা হলেন- টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা ও নৌকার মাঝি মো.
আরো পড়ুন:
বান্দরবানে অনুপ্রবেশকালে ৩৩ রোহিঙ্গা আটক
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে জান্তা ও একটি সশস্ত্র জোটের যুদ্ধবিরতি
দক্ষিণ নৌ-ঘাটের সভাপতি বশির আহমেদ বলেন, “আজ সকালে নাফ নদে মাছ ধরতে যান জেলেরা। আরাকান আর্মির সদস্যরা এসে জেলেদের অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় স্থানীয় জেলে পল্লীগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি বিজিবি ও প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “জেলেদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। তাদের উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।”
এর আগে, গত বছরের ৬ অক্টোবর শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট থেকে ছয়টি ট্রলার নিয়ে ৫৮ জন জেলে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যান। ৯ অক্টোবর তাদের অপহরণ করে মিয়ানমার নৌ বাহিনী। এ সময় তারা একটি ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি চালালে তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হন। যার মধ্যে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে জেলেদের দেশে ফেরত আনা হয়।
এছাড়া, গত বছরের ১৫ অক্টোবর মিয়ানমারের রাখাইনে অনুপ্রবেশ করা আরাকান আর্মির হাতে আটক বাংলাদেশি ১৬ জেলেকে বিজিবির মাধ্যমে ফেরত আনা হয়েছিল।
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণ আর ক ন আর ম
এছাড়াও পড়ুন:
লিবিয়ায় তিন বাংলাদেশিকে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে স্বজনদের কাছে মুক্তিপণ দাবি
লিবিয়ায় মুক্তিপণের দাবিতে তিন বাংলাদেশি নাগরিককে অপহরণের পর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। তাদের দাবি, অপহরণকারীরা নির্যাতনের ভিডিও ও অডিও পাঠিয়ে একটি ব্যাংক নম্বরের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছে। এতে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে স্বজনদের। ইতিমধ্যে মুক্তিপণের কিছু অর্থ পাঠিয়েছে দুটি পরিবার।
ওই তিন প্রবাসী হলেন আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের গুডুম্বা গ্রামের গোলাম রব্বানী, একই ইউনিয়নের পুন্ডুরিয়া দক্ষিণ মণ্ডলপাড়া গ্রামের আবদুল করিম ও সোনামুখী ইউনিয়নের রামশালা গ্রামের রুহুল আমিন। প্রায় ১৫ দিন আগে গোলাম রব্বানীকে এবং ৬-৭ দিন আগে অন্য দুজনকে অপহরণ করা হয়। রুহুল আমিন ও আবদুল করিম সম্পর্কে শ্যালক-ভগ্নিপতি।
গোলাম রব্বানীর স্ত্রী মোছা. জুথি আক্তার জানান, তাঁর স্বামী ২০১৫ সালে লিবিয়ায় যান এবং ২০২৩ সালে ছুটি কাটিয়ে আবার সেখানে ঠাঁই নেন। জিলথান শহরে রঙের কাজের কথা বলে স্থানীয় একটি বাঙালি মাফিয়া চক্র তাঁকে অপহরণ করে। গত ৩০ নভেম্বর রব্বানীর ফোন থেকেই তাঁকে কল দিয়ে অপহরণের কথা জানানো হয় এবং ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের মতিঝিল করপোরেট শাখার একটি হিসাব নম্বরে এই টাকা জমা দিতে বলা হয়। এর পরপরই নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো হয়। এখন অপহরণকারীরা ১৫ লাখ টাকা চাইছে বলে জানান তিনি।
জুথি আক্তারের ভাষ্য, ‘ওই টাকা না দিলে তারা (অপহরণকারীরা) আমার স্বামীকে হত্যা করবে, বলে হুমকি দিচ্ছে। স্বামীকে উদ্ধারে প্রবাসী কল্যাণের ওয়েজ অর্নার বোর্ডের সহযোগিতা চেয়ে মহাপরিচালকের কাছে আমি ৮ ডিসেম্বর একটি আবেদন করেছি।’
অপহৃত আবদুল করিমের স্ত্রী তাসলিমা বিবি বলেন, দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে লিবিয়ায় থাকা তাঁর স্বামী গত বছর প্রায় আট মাস দেশে ছিলেন। প্রায় সাত মাস আগে তিনি আবার লিবিয়ায় ফিরে যান। ৬ ডিসেম্বর রঙের কাজ দেখানোর কথা বলে তাঁকে ডেকে নেওয়া হয়। পরে আটকে রেখে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরিবারের সদস্যরা এরই মধ্যে কিছু টাকা ওই ব্যাংক নম্বরে পাঠাতে বাধ্য হয়েছেন।
অপহৃত রুহুল আমিনের স্ত্রী আছিয়া বেগম বলেন, ঘটনার দিনে স্বামী ফোন করে জানিয়েছিলেন, তিনি কাজ দেখতে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর একটি গাড়ির ছবি পাঠান। পরদিন তাঁর ফোন থেকেই নির্যাতনের অডিও পাঠিয়ে ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। কষ্ট করে এক লাখ টাকা পাঠিয়েছেন তাঁরা।
আক্কেলপুর থানার এসআই গণেশ চন্দ্র বলেন, গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নির্যাতনের ভিডিও ও মুক্তিপণের বিষয়টি নিয়ে থানায় এসেছিলেন। তাঁকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনলিবিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলো ১৭০ জনকে১৮ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনলিবিয়া টু ইতালি: ‘মৃত্যুর পথে’ কেন মরিয়া যাত্রা১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫