আয়মান ও মুনজেরিনের প্রেমের গল্প
Published: 12th, February 2025 GMT
স্কুলের নাম ‘টেন মিনিট স্কুল’, এই স্কুলের দুই শিক্ষক আয়মান সাদিক আর মুনজেরিন শহিদ। তাদের দশ বছরের জানাশোনা। একজন আরেকজনের প্রেমে পড়েছেন কিনা বুঝে ওঠার আগেই অন্যরা বুঝে যায় তাদের প্রেম আছে, বাতাসে গুঞ্জন ছড়িয়ে যায়। তবে কি না বলেও প্রেম হয়?— হ্যাঁ এমন উদাহরণও আছে। আয়মান-মুনজেরিনের প্রেম আর বিয়ের গল্প অনেকটা সেই রকম। ভালেন্টাইন সপ্তাহে আজ জানবো তাদের প্রেম, বিয়ে আর সংসারের গল্প।
আয়মান সাদিকের জন্ম কুমিল্লায় ১৯৯২ সালে। বেড়ে ওঠা ঢাকায়। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে। আয়মান সাদিক বাংলাদেশের বৃহত্তম ইন্টারনেটভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টেন মিনিট স্কুল-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। বাবা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা। আয়মান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই টিউশন করাতে শুরু করেন। একের পর এক আয়মানের টিউশনির সংখ্যা বেড়েই চলছিল। এরপর আয়মান ভেবেছিলেন যে শিক্ষকতা পেশাতে আমি ভালো করতে পারব। সেই থেকেই পথ চলা শুরু আয়মান সাদিকের।
অন্যদিকে মুনজেরিন শহীদের জম্ম ১৯৯৬ সালে চট্রগ্রামে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজিতে। উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন বিখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনলাইনে জনপ্রিয় একজন ইংরেজি শিক্ষিকা তিনি। ছোটবেলায় তিনি হতে চেয়েছিলেন আর্কিটেক্ট। ভালো আঁকাআঁকি করতেন তিনি। পরিবার চেয়েছিলেন তিনি ডাক্তার হোক। কিন্তু তিনি হয়ে উঠেছেন ইংরেজি শিক্ষক।
আরো পড়ুন:
ফেসবুকে তুমুল প্রেম, প্রেমিককে দেখে অবাক প্রবাসীর স্ত্রী
আজ ‘প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরা দিবস’
আয়মান ও মুনজেরিনের প্রথম দেখা ২০১৪ সালে। আয়মান ও মুনজেরিনকে নিয়ে তার চারপাশ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব জায়গায় ছিলো গুঞ্জন। আয়মানের বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তাইয়েবুর আয়ামানের মাকে জিজ্ঞেস করেন, আচ্ছা, ওর কি মুনজেরিনের সঙ্গে কিছু আছে? ওকে জিজ্ঞেস করো তো। আয়মানের বাবাকে এই কথা বলেছিলেন তার চাচা। এরপর আয়মানের মা সকালবেলা আয়মানকে জিজ্ঞেস করে, আচ্ছা, তোর আর মুনজেরিনের কি বিয়ের পরিকল্পনা আছে?’ শুনে আয়মান বলেছিলেন, ‘মন্দ বলোনি। খারাপ হয় না।’ বেশ কয়েকদিন পর আয়মান কোন একটা কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, এ সময় আয়মানের বাবা আয়মানকে ফোন করেন। ফোন ধরে আয়মানের চাচা বলেন, আচ্ছা, ১৯ জুলাই সেনাকুঞ্জ খালি আছে। আয়মান যেন আকাশ থেকে পড়লেন। তখনো আয়মান ভাবেনি আনুষ্ঠানিক বিয়ের কথা। এর ঠিক চার মাস পর ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ডিওএইচএসে মসজিদে বিয়ে সারেন আয়মান ও মুনজেরিন। ছোটবেলা থেকেই এই মসজিদে নামাজ পড়তেন আয়মান। এখানেই সাদামাটা পাঞ্জাবি পড়ে বিয়ে করেন তিনি। আয়মান বলেন, বিয়ের দিন আমার এক ফ্রেন্ডও আমার মতো পাঞ্জাবি পড়েছিলো (হাসি) এরপরদিন হলো গায়ে হলুদ। আর ২৩ সেপ্টেম্বর সেনাকুঞ্জে হয় বিবাহোত্তর সংবর্ধনা।
আয়মানকে বিয়ের কারণ ও দাম্পত্য সম্পর্কে নিয়ে মুনজেরিন বলেন, ‘‘আরমান হচ্ছে এমন একজন যার টেম্পার কম, রাগ কম। অনেক ঠান্ডা মেজাজের। আমাদের পুরো রিলেশনশিপে কোন কিছু নিয়েই আয়মানের কোন ইগো কাজ করে না। আয়মানের ভেতর ডমিনেট করে রাখার কোন টেন্ডেন্সই নেই। এসব কারণে আমাদের ফ্যামিলির লাইফটা অনেক বেশি পিসফুল। আমি অনেক লাকি ফিল করি। আমি আশা করি সময়ের সাথে সাথে এই জিনিসটা আমাদের দুইজনের ভেতর আরো বেশি থাকবে। আমি যদি খাবার দাবার প্রস্তুত করি আয়মান তাহলে সেগুলো আমাকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। আমরা দুইজন দুজনের লাইফ ইজি করার চেষ্টা করি।
বিয়ের ক্ষেত্রে আয়মানের কোন দিকটা বেশি টেনেছিল মুনজেরিনকে? এমন প্রশ্নের উত্তরে মুনজেরিন বলেন, আমি কোনো দিন দেখিনি শত্রুরও অমঙ্গল চেয়েছে আয়মান। ও সব সময় সবার ভালো চায়। নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে অন্যের পাশে থাকে। এটাই ওর প্রতি আমাকে দুর্বল করেছিল।
কীভাবে প্রেমে পড়লেন তারা? এমন প্রশ্নের উত্তরে আয়মান বলেন, আসলে তেমন কিছুই নয়। আমাদের ১০ বছরের জানাশোনা। একসঙ্গে টেন মিনিট স্কুল এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে নানা প্ল্যান নিয়ে প্রায়ই আমাদের আলাপ হয়। যা প্রেমের গুঞ্জন হয়ে ওঠে সবার কাছে। প্রেমের গুঞ্জন আমার বাবা, মায়ের কাছেও চলে যায়। একদিন বাবা আমার মায়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র ন বল ন গ ঞ জন
এছাড়াও পড়ুন:
তাম্বুন পেরমাই থেকে বেগান সেরাই, এক দিনে ৮১ কিমি
গ্রামের ভেতরের সরু রাস্তা ধরে এগিয়ে চলেছি। রাস্তায় বাংলাদেশের পতাকা দেখে অনেক শ্রমিক ভাই আমাদের হাত উঠিয়ে শুভেচ্ছা জানাল। মুনতাসীর ভাইয়ের সাইকেলের পেছনে লাঠির মাথায় বাঁধা বাংলাদেশের পতাকা। দেশের পতাকা আর নিজের দেশের লোক অনুমান করলে এই দূর দেশে যে কোন প্রবাসীর মনে ডাক দিবে। তাদের অনেক কৌতূহল আমাদের ব্যাপারে। বাংলাদেশ থেকে কেউ এখানে সাইকেল চালাতে আসতে পারে এমন কিছু তারা ভাবতেও পারেনি!
বেলা তিনটার মধ্যে গ্যালাক্সি হোটেল পেয়ে গেলাম। বেশ পরিপাটি সুন্দর। এখন আমরা তিনজন, এক রুমে সবাই। ভোরবেলায় বের হওয়ার সুবিধাটা এখন বোঝা গেলো! গরমে বেশি ক্লান্ত হবার আগেই হোটেলে ঢুকে চিল করা যাচ্ছে। বিশ্রাম আমাদের পরদিনের রসদ যোগাবে।
যথারীতি ভোরবেলাতেই বের হলাম। প্রতিদিন বের হওয়ার সময় একটা আতঙ্কের মধ্যে কাটে। মালয়েশিয়াতে ওয়েদারের ঠিক-ঠিকানা নাই। এই ঝুম বৃষ্টি, আবার ফকফকা। আবার ভোরবেলা রাইড শুরু করতে হলে ঘুম থেকে উঠতে হয় আরো আগে। সব কিছু গুছিয়ে আবার সাইকেলে বাঁধো তারপর রওনা হও।
সকালের বেশ খানিকটা দূরত্ব অতিক্রম করে আসার পরে ‘নেবুঙ তাবাং’ নামে এক জায়গায় নাস্তার জন্য থামি। রাস্তার পাশেই খাবারের দোকান থেকে রোজ সকালে দুই পরোটা আর দুই ডিমে আমাদের প্রাতরাশ। খরচা বেশি নয়। তবে ডিম পোচটা একটু বুঝিয়ে দেওয়া লাগতো। আজকেও সেফকে বুঝিয়ে বলছিলাম, ইংরেজিতে তাদের বুঝতে কষ্ট হচ্ছিল, তখন দেখি বাঙালি এক ভাই আমাদের চিনতে পেরেছেন। সে এসে সহযোগিতা করল। তার নাম হাবিব, বাড়ি নওগাঁ। কয়েক বছর হলো এখানে কাজ করছে। কুয়ালালামপুর থেকে অনেক দূরে বাংলাদেশীরা কাজের জন্য এসেছে। সবারই ভিন্ন ভিন্ন গল্প।
দেশী মানুষের দেখা পেলাম প্রায় সব জায়গাতেই। সাইকেল চালাতে কেউ এত দূর পর্যন্ত চলে আসতে পারে তাদের মাথায় এটা ধরতেই চায় না। আর খাবারের ব্যাপারে বলতে গেলে বাংলাদেশীরা যে দেশেই যাক ভাত-মাছ মসলা দিয়ে মাংস এগুলো খোঁজে। মালয়েশিয়ান খাবারেও নানা বেচিত্র্য আছে। ঐতিহাসিক অভিবাসন, বিদেশী শক্তির উপনিবেশ স্থাপন এবং তার বৃহত্তর স্বদেশের মধ্যে এর ভৌগোলিক অবস্থানের ফলে, বর্তমান সময়ে মালয়েশিয়ার রন্ধনশৈলী মূলত মালয়, চীনা, ভারতীয়, ইন্দোনেশিয়ান, থাই, ফিলিপিনো এবং আদিবাসী বোর্নিয়ান এবং ওরাং আসলির ঐতিহ্যের মিশ্রণ, যার মধ্যে আরব, থাই, পর্তুগিজ, ডাচ এবং ব্রিটিশ রন্ধনপ্রণালীর হালকা থেকে তীব্র প্রভাব রয়েছে। তবে মালয়েশিয়ানদের আমাদের মতো প্রধান খাদ্য হলো ভাত। বিদেশে এলাম একটু নতুন জিনিস ট্রাই করবো, এখানেও ভাত খেলে কি চলে! কিন্তু কিছুদিন পর সেই ভাতই খেতে মন চায়- কি জ্বালা!
নাস্তা শেষ করতেই ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। পথের পাশে আম গাছ থেকে কয়েকটা আম পেড়েছিলাম। নাস্তা করে সেগুলো লবণ দিয়ে খেতে বসলাম। বাকি পথ বৃষ্টি মাথায় নিয়েই চলতে হলো। ৪৭ কিলোমিটার চালিয়ে ‘বেগান সেরাই’তে চলে এলাম। আজকে থাকবো হোটেল কুলান ইন। মুসলিম হোটেল, খুব পরিপাটি সুন্দর। পাশেই একটা পাকিস্তানি রেস্তরাঁ- বিসত্রো জালেল। পেট ভরে ভাত মাছ মুরগি শাক-সবজি খেলাম। রাতে খেলাম সুপ। হোটেলের পেছনে একটা পেঁপে গাছ ছিল, পাখি পাকা পেঁপে খেয়ে খেয়ে বেশুমার। এরা গাছের ফল ছেড়ে না মনে হয়, আম গাছেও এত আম কেউ মনে হয় দেখেই না। একজনকে বলতেই বিশাল এক পেঁপে পেড়ে দিলো। সুইচ আর্মি নাইফটা দিয়ে কেটে কেটে খেয়ে আমরাও বেশুমার হলাম। কড়া মিষ্টি। মন তৃপ্ত হলো। সকাল থেকে বৃষ্টির পর সুন্দর রোদ উঠেছে। জামাকাপড় ধুয়ে শুকাতে দিলাম। এখন শুধু রিলাক্স।
পরদিন ভোর ৫টা ১০-এ শুরু করলাম। ভরের আলো ফোটার আগেই ১৫ কিলোমিটার চালিয়ে ফেলেছি, এরপর ২৭ কিলোমিটার পরে নাস্তার জন্য থামলাম। আজকের পথটা বেশ সুন্দর। অনেক গাছগাছালি আছে পথে। নাস্তার সময় একজন মালয় সাইক্লিস্টের সঙ্গে পরিচয় হলো, তিনি আমাদের সাইকেলের সাথে ব্যাগবোচকা দেখে বুঝতে পেরেছিলেন আমরা অনেক দূর থেকে এসেছি আর সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা। তারাও মালয়েশিয়াতে দল বেঁধে বিভিন্ন রুটে সাইকেল চালায়। আমাদের রুট সম্পর্কে জানতে চাইলে ম্যাপে দেখালাম। তিনি সহজ একটা রাস্তার কথা বললেন, তবে আমরা অপেক্ষাকৃত কম ট্রাফিক আছে এমন রুট বেছে নিলাম। এখানে মেইন রোডের সঙ্গে প্যারালালি গ্রামের রাস্তার মতো ছোট রাস্তা চলে গেছে। তারপর অনেক দূরে দূরে গিয়ে আবার সেই মেইন রোডের সঙ্গে মিলেছে। সুবিধা হলো সাইকেলের সঙ্গে বড় গাড়ির সংযোগ হচ্ছে না এবং গাছগাছালির ছায়া পাওয়া যাচ্ছে। মালয়েশিয়াতে পাম গাছের আধিক্য অনেক এবং মূল দেশীয় উপার্জনের একটা বড় অংশ আসে সয়াবিন ও পাম থেকে। দুই-ই তেলবীজ। তবে তেলের দাম কম বলে মনে হলো না। ১ লিটার তেলের দাম ২৪০ টাকারও বেশি। এর কোনো কারণ খুঁজে পেলাম না।
একটা সরু রাস্তায় উঠলাম একপাশে লম্বা ক্যানেল চলে গেছে, আর দুপাশে নানা ফলফলাদির গাছ। একটা কলাগাছে কলা পেকে আছে, ছিড়ে নিলাম কিছু। পেঁপে গাছে পাকা পেঁপে ঝুলে আছে নিলাম একটা। বড় বড় কাঁচা আম রাস্তার থেকে হাত দিলেই ছোঁয়া যায় তাও নিলাম। সাইকেলে এমনিতেই জিনিসপত্র বোঝাই করা, তার মধ্যে আর বেশি কিছু নেবার সুযোগ নেই। ফ্রেস জিনিস পথে বসে খাবো বলে সঙ্গে নিলাম। এখানে বাড়িঘরগুলো বেশি উঁচু না। একতলা বড়জোড় দোতলা। ভারত শ্রীলঙ্কাতে যেমন বাড়ির প্যাটার্ন হয় তেমন ধরনের বাড়ি দেখলাম এই অঞ্চলে। শহরের দিকে উঁচু দালানে ভরপুর। আরেক রাস্তায় উঠে একটা নারকেল গাছের বাগান দেখতে পেলাম। রাস্তার ধারেই সারি করে গাছ এবং মজার জিনিস হলো গাছগুলো এক মানুষ সমান। তাও আবার বোদকা বোদকা হলুদ ডাব। এমনভাবে ড্যাবড্যাব করে ডাবগুলো আমাদের দিকে চেয়ে আছে যে খুব লোভ হলো এবং জল তেষ্টাও পেলো। ততক্ষণে গগন তেঁতে উঠেছে।
চঞ্চলকে বললাম- এই দাঁড়া, চট করে ডাবের জল খেয়ে নেই। আশেপাশে এমন কাউকে দেখছিও না যার কাছে অনুমতি নিতে পারি। আবার পথে এতো বার বিরতি দিলে এই তেঁতে ওঠা আবহাওয়াতেই বেশিক্ষণ চালাতে হবে, তাই মুনতাসীর ভাইও তেমন একটা থামতে চায় না। সাইকেল সাইড করে বড়সড় একটা ডাব কান্ড থেকে মুচড়ে মুচড়ে আলাদা করলাম, এরপর কচি ডাবের গায়ে ছুরি চালিয়ে দিলাম আর ফিনকি দিয়ে ডাবের জল চোখ-মুখ ভিজিয়ে দিলো। মিষ্টি জলের স্বাদ পেলাম। চারকোনা করে কেটে একটা মুখ বানালাম এরপর ঢকঢক করে গিলে নিলাম। পরেরটা মিস ফায়ার, জল নেই। আরো কয়েকটা পেড়ে চঞ্চল আর মুনতাসিরকে দিলাম। মন ভরে উঠল। সারভাইভাল টেকনিক স্কিলও ঝালাই হলো। অন্যদিন পথের ধারে দোকানে ডাব খেয়েছিলাম ১৫ রিঙ্গিত দিয়ে, কি সুন্দর করে কেটে ডাবের পানি প্রথমে বড় সাইজের মগে নিলো, তাতে সুগার সিরাপ দিলো, আইস দিলো এবং ডাবের নরম শাঁস কুড়িয়ে সেই পানিতে ছেড়ে দিলো- কলিজা ঠান্ডা!
আরেকটা বড় রাস্তায় ওঠার পর এক এলাহী কাণ্ড দেখলাম। মটরবাইকের বহর যাচ্ছে, সামনে মালয় পুলিশের বাইকও রয়েছে বেশ কিছু। যেমন আমাদের দেশে রাজনৈতিক নেতারা কোথাও গেলে শোডাউন করে তেমন। আমরাও এমন কিছুই মনে করেছিলাম, ভিভিআইপি কেউ যাচ্ছে পেছনে মটরবাইকের বহর। স্পিড কমে হলেও ১২০ কিলোমিটার হবে। সেই বহর যাচ্ছে তো যাচ্ছেই, বিশ পঞ্চাশ একশ, দুইশো, চারশ পাঁচশ আরো বেশি হবে অনুমান করি। এ কি দেখলাম বাবা এক ঝলক! আমাদের রীতিমত পথের পাশে সাইড করে থামিয়ে দেওয়া হলো, বিপরীত পথের গাড়িগুলোকেও। পুরো রাস্তায় বাইক শুধু। কত মডেলের যে মটরবাইক এবং স্কুটি দেখলাম! ভাবলাম এতো জোরে জোরে যে চালাচ্ছে, একটা এদিক সেদিক হলে পেছনের গুলাও অক্কা পাবে নির্ঘাত। পরে লোক মুখে শুনলাম ছুটির দিনে বাইকার গ্রুপগুলো এমন দলবেঁধে লং ড্রাইভে বের হয়। পুলিশ তাদের রাস্তা খালি করার জন্য প্রটেকশন দেয়। এলাহি কারবার! সত্যিই বিদেশ বিভূঁইয়ে কত কিছু দেখার এবং জানার সৌভাগ্য হয়। এ জন্য ধর্মেও বলেছে ‘জ্ঞান অর্জনের জন্য সুদূর চীনে যাও’।
বেলা ৩টার মধ্যে আমরা হোটেল লাম সেং-এ উঠে গেলাম। এই পাড়াটা চাইনিজ অধ্যুষিত। হোটেলের উল্টা পাশে রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে হলো আরেক বিপত্তি। এরা ইংরেজি কেউ বোঝে না। গুগলে ইংরেজি লিখে তার চাইনিজ তর্জমা করে আকারে ইঙ্গিতে দেখিয়ে এই বেলায় কিছু খাওয়া গেলো। সন্ধ্যায় অবশ্য অন্য এক চাইনিজ রেস্তোরাঁতে আমাদের খাবারের অর্ডার ঠিক ঠিক নিতে পেরেছিল। খাবারগুলো বেশ মজার। কালামারি ফ্রাই, কোয়েতাও সুপ, ফ্রাইড রাইস, চিকেন ফ্রাই, চিল্ড বিয়ার। সব মিলিয়ে আজকে ৮১ কিলোমিটার চালানো হলো।
তারা//