চট্টগ্রাম চেম্বারের নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থা কেটেছে
Published: 11th, December 2025 GMT
চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থা কেটেছে। আজ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের দেওয়া এক আদেশে বলা হয়, চেম্বারের নির্বাচনে ছয়টি টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপ শ্রেণির ৬ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এই প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিয়ে আদালতে রিট করেছিলেন এক ব্যবসায়ী। হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রিট শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম চেম্বারে ব্যবসায়ীদের ভোটে ১২ জন সাধারণ শ্রেণিতে, ৬ জন সহযোগী শ্রেণিতে এবং ৩ জন করে টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপ শ্রেণি থেকে পরিচালক নির্বাচিত হয়ে থাকেন। পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হন সভাপতি ও দুই সহসভাপতি। টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপ শ্রেণিতে এবার পরিচালক হওয়ার পথে ছিলেন তিনজন করে মোট ছয়জন। এই দুই শ্রেণিকে ‘পকেট ভোট’ উল্লেখ করে বাদ দেওয়ার দাবি জানায় একটি পক্ষ।
চেম্বার সূত্রে জানা যায়, টাউন অ্যাসোসিয়েশন তিনটি হলো বোয়ালখালী, হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। আর তিনটি ট্রেড গ্রুপ হলো চট্টগ্রাম টায়ার টিউব ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস গ্রুপ, চিটাগাং ডাইজ অ্যান্ড কেমিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার গ্রুপ এবং চিটাগাং মিল্ক ফুড ইমপোর্টার্স গ্রুপ। গত ৪ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে নিয়ম অনুযায়ী সদস্যপদ নবায়ন করা টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপের প্রতিনিধিদের নির্বাচনে অন্তর্ভুক্ত করতে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আদালত সূত্র জানায়, দুই শ্রেণির সদস্যের অংশগ্রহণ বাদ দিতে এফবিসিসিআইয়ের বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ বেলাল। আদালতেও এ বিষয়ে রিট করেন তিনি। ২২ অক্টোবর রিট শুনানির পর ওই দুই শ্রেণিকে ছাড়া নির্বাচন পরিচালনার জন্য রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ৪ সেপ্টেম্বরের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার ওপর স্থগিতাদেশ দেন আদালত। এরপর আপিলে যায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ৩০ অক্টোবর আপিল শুনানির পর দুই সপ্তাহের জন্য নির্বাচন স্থগিত করেন আদালত। একই সঙ্গে সমস্যা নিরসনের জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারজানা খান প্রথম আলোকে বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, নিয়ম অনুযায়ী সদস্যপদ নবায়ন করা ট্রেড গ্রুপ ও টাউন অ্যাসোসিয়েশন চিটাগং চেম্বারের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। এ আদেশের বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ী রিট করেছিলেন। শুনানি শেষে আদালত আজ আগের রুলটি বাতিল করেন। ফলে মন্ত্রণালয়ের আদেশের ওপর থাকা স্থগিতাদেশও বাতিল হয়েছে। সুতরাং নির্বাচনে অংশ নিতে তাঁদের বাধা নেই।
গত ১ নভেম্বর চেম্বারের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। সর্বশেষ এই চেম্বারে ভোট হয়েছিল ২০১৩ সালে। এরপর সব কমিটি গঠিত হয় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। নতুন করে নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে জানতে চেম্বারের নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান মনোয়ারা বেগমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
উত্তেজনার পারদ চড়ছে ওয়েলিংটন টেস্টে
ওয়েলিংটন টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ম্যাচের চিত্র দাঁড়িয়ে রোমাঞ্চের দারপ্রান্তে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসারদের ধারালো বোলিংয়ে মাঝে মাঝে চাপে পড়লেও ডেভন কনওয়ে ও অভিষিক্ত মিচেল হে-র জোড়া ফিফটিতে এগিয়ে থেকেই দিন শেষ করেছে নিউ জিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৭৩ রানের লিড নেওয়ার পর দিনশেষে সফরকারীরা এখনও পিছিয়ে ৪১ রানে; হাতে রয়েছে ৮ উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলাররা শুরুতে সুইং আর বাউন্সে কিউই ব্যাটারদের নানাভাবে কাঁপিয়েছে। আলগা শটে উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার ভুলও করেছে স্বাগতিকরা। তবে কনওয়ে ও হে সেই চাপ সামলে জুটি গড়ে ম্যাচে ফেরেন।
আরো পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ার দল ঘোষণা, অধিনায়ক কামিন্স
বিপিএলে খেলতে ১০ ক্রিকেটারকে ছাড়পত্র দিল পাকিস্তান
কনওয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম এবং ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন, করেন ৬০ রান। অন্যদিকে, ব্যাট হাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া মিচেল হে আত্মবিশ্বাসী ৬১ রানের ইনিংসে মুগ্ধ করেন। দুজনের মিলিত প্রচেষ্টায় নিউ জিল্যান্ড ৯ উইকেটে ২৭৮ রান তোলে। চোটের কারণে ব্লেয়ার টিকনার ব্যাট করেননি। তাতে ২৭৮ রানে থামে কিউইদের প্রথম ইনিংস।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতে নতুন বলে কেমার রোচ, জেডেন সিলস, ওজে শিল্ডস এবং অ্যান্ডারসন ফিলিপ দারুণ ধারায় ছিলেন। বল দুদিকেই সুইং করছিল, মাঝে মাঝে বাউন্সেও চাপে ফেলছিল ব্যাটারদের। কনওয়ে অবশ্য সুযোগ পেলেই কাট-ফ্লিকে বাউন্ডারি আদায় করে নেন, মারেন আটটি চার।
টম ল্যাথাম (১১) রোচের নিপ–ব্যাক ডেলিভারিতে বোল্ড হন। পরে অ্যান্ডারসন ফিলিপের বলে চকিত হয়ে বোল্ড হন কেন উইলিয়ামসন (৩৭)। মধ্যাহ্নভোজের পর রোচের ওয়াইড বল তাড়া করে ক্যাচ দেন রাচিন রবীন্দ্র। এরপর কনওয়ে ফেরেন জাস্টিন গ্রিভসের তুলনামূলক সহজ ডেলিভারিতে; লেগ সাইডে দুর্দান্ত ডাইভে ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক তেভিন ইমলাচ। ১১৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা বিপাকে নিউ জিল্যান্ড।
এই বিপদ কাটাতে ড্যারিল মিচেল (২৫) ও হে পঞ্চম উইকেটে ৭৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে দলকে লিডের কাছে নিয়ে যান। মিচেল ছিলেন সলিড, আর হে খেলেছেন সহজাত ভঙ্গিতে। তার খেলায় শট-কাট, পুল, সবই ছিল আত্মবিশ্বাসী।
তবে দুজনই শেষ পর্যন্ত লেগ সাইডে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন। মিচেল ফিলিপের বলে, হে শিল্ডসের শর্ট বলে পুল মিসটাইম করে। এরপর গ্লেন ফিলিপস (১৮) চেষ্টা করেছিলেন চাপ কমাতে। কিন্তু রোস্টন চেজের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন।
শেষদিকে জ্যাক ফাউকস (অপরাজিত ২৩) দৃঢ়তা দেখিয়ে পেসারদের ডিফ্লেকশন থেকে মূল্যবান রান যোগ করেন। ডাফি ও রে-ও কিছু বাউন্ডারি এনে স্কোর বাড়ান। রে তার প্রথম টেস্ট ইনিংসে ১৩ রান করে সিলসের বলে বোল্ড হন। এটা ছিল দ্বিতীয় দিনে সিলসের প্রথম উইকেট।
ব্যাটিংয়ে কিছুটা এলোমেলো হলেও বোলিংয়ে দিনের শেষ ভাগে আবার নিয়ন্ত্রণ নেয় নিউ জিল্যান্ড। মাত্র দশ ওভারেই দুই ওপেনারকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জন ক্যাম্পবেল রে-র ইনসুইংয়ে বোল্ড হন। পরের ওভারে নাইটওয়াচম্যান ফিলিপ প্রথমে ডিআরএসে বাঁচলেও পরের বলেই এলবিডব্লিউর শিকার হন।
শেষদিকে ব্র্যান্ডন কিং (১৫*) ও ক্যাভেম হজ (৩*) কোনো রকমে দিন পার করে দেন। তবে লিড কমাতে শুক্রবার সকালে তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।
ঢাকা/আমিনুল