ভালোবাসা দিবসে যুক্তরাষ্ট্রে ৩ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার উপহার–বাণিজ্য
Published: 13th, February 2025 GMT
ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে এবার ২ হাজার ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলারের উপহারসামগ্রী বেচাকেনা হবে। প্রিয়জনকে ফুল, গয়না, চকলেটসহ বিভিন্ন ধরনের উপহারসামগ্রী দিতে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করবেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারীরা। ডলারের বর্তমান বাজারদরে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ওই দেশের ৫৬ শতাংশ ভোক্তা ভালোবাসা দিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি পরিবারের গড়ে ১৮৮ ডলার ৮১ সেন্ট খরচ হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশন (এনআরএফ) ভালোবাসা দিবসের অর্থনীতির এ বছরের বাজার নিয়ে এই প্রাক্কলন করেছে। ইউএস চেম্বার অব কমার্সের ওয়েবসাইটেও এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
ভালোবাসা দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা কত খরচ করেন, এর একটি ধারণা নেওয়া যাক। এ বছর ভালোবাসা দিবসের প্রাক্কলিত খরচের পরিমাণ, চলতি অর্থবছরের বাংলাদেশের বাজেটের ৪২ শতাংশের সমান। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
ভালোবাসা দিবসে প্রেমিক-প্রেমিকা, আত্মীয়স্বজনসহ প্রিয়জনকে উপহার দেওয়া এখন একটি রীতিতে পরিণত হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বে এটি রীতিমতো উৎসবের পর্যায়ে চলে গেছে। ভালোবাসা দিবসে উপহার হিসেবে ফুল, গয়না, চকলেট—এসবেরই চল বেশি। তবে অনেকে প্রিয় মানুষকে গাড়ির মতো দামি উপহারও দেন। আবার দামি হোটেল থাকা, খাওয়াসহ বেড়ানোর পেছনেও বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করেন। ফলে ভালোবাসার উপহারসামগ্রীর বাজার চাঙা হয়, অর্থনীতিও গতি পায়।
আগামীকাল শুক্রবার বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। পশ্চিমা বিশ্বে এ নিয়ে হইচই শুরু হয়ে গেছে। নব্বইয়ের দশক থেকে বাংলাদেশেও ভালোবাসা দিবস জনপ্রিয় হতে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের যত বেচাকেনা
দ্য সোসাইটি অব আমেরিকান ফ্লোরিস্টস জানিয়েছে, এবারের ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ফুল ব্যবসায়ীরা ২৫ কোটি ফুল প্রস্তুত করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে চকলেট-ক্যান্ডির মতো মিষ্টান্ন ভালোবাসা দিবসের উপহার হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। এবার ৫৬ শতাংশ আমেরিকান ক্যান্ডি কেনার পরিকল্পনা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ালেটহাবস ২০২৫ সমীক্ষা অনুসারে, এ বছর ভালোবাসা দিবসে ৬০ লাখ আমেরিকান বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারেন। ৩৬ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন, ভালোবাসা দিবসে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া বেশ রোমান্টিক।
ভালোবাসা দিবসে শুধু প্রিয়জনকে নয়, কুকুর-বিড়ালের মতো প্রিয় প্রাণীকেও উপহার দেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটাল ওয়ান শপিংয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর ভালোবাসা দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা পোষা প্রাণীকে উপহার দিতে ১৫০ কোটি ডলার খরচ করেছেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। একটি কুকুর গড়ে ৩১ ডলার ২৪ সেন্টের উপহার পেয়েছে। আর পোষা বিড়াল পেয়েছে ২৭ ডলার ৪২ সেন্টের উপহার।
ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে রেস্তোরাঁর ব্যবসাও বেশ জমজমাট থাকে। প্রিয়জনকে নিয়ে রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে যান অনেকে। তবে গতবারের মতো এবারও সপ্তাহের কর্মদিবসে (শুক্রবার) পড়েছে ভালোবাসা দিবস। ফলে রেস্তোরাঁয় ‘টেক আউট (খাবার কিনে নিয়ে যাওয়া)’ বিক্রি বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতবার ভালোবাসা দিবসে এই ‘টেক আউট’ বিক্রি ৪৬ শতাংশ বেড়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র য়জনক আম র ক ন র উপহ র
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শাখা সভাপতি এসএম ফরহাদ।
আগামী ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট এই কর্মসূচিগুলো অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজনে থাকছে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, বিপ্লবী নাটক, গান, কবিতা, আলোচনা সভা ও বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী। কর্মসূচির সূচনা হবে ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) ভোর ৫টায় প্রতীকী সাইকেল র্যালির মাধ্যমে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে গণভবন পর্যন্ত যাবে।
আরো পড়ুন:
মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপকে চলছে বেরোবি
তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
সকাল ৯টায় টিএসসিতে থাকবে সাধারণ নাস্তার আয়োজন। এর পরপরই প্রদর্শিত হবে ‘জুলাই বিপ্লব’ ভিত্তিক একটি প্রামাণ্যচিত্র। একইসঙ্গে বিপ্লবী গান ও কবিতা পরিবেশিত হবে । সকাল ১০টা থেকে শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের মুখে অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা শোনার আয়োজন থাকবে।
দুপুর ২টায় একটি মাইম পরিবেশনা ও নাটক মঞ্চস্থ হবে। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টা ও সাড়ে ৫টায় পরপর আরো দুটি নাটক প্রদর্শিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় ব্যতিক্রমী আয়োজন ‘প্ল্যানচ্যাট বিতর্ক’ অনুষ্ঠিত হবে। এটি একটি প্রতীকী বিতর্ক, যেখানে গণআন্দোলনে নিহতদের উত্তরাধিকার ও আত্মিক উপস্থিতিকে ঘিরে আলাপ-প্রতিআলাপের একটি রূপক পরিসর গড়ে উঠবে ।
৬ আগস্ট দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির শুরুতেই থাকবে রাজনৈতিক ও দার্শনিক আলোচনা সভা। সকাল ১০টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পলায়নের ১ বছর: প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি ও ডাকসু নির্বাচন’ বিষয়ে আলোচনা হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তে ইসলাম প্রসঙ্গ’ শীর্ষক মতবিনিময়ের মাধ্যমে পর্দা নামবে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির।
কর্মসূচির তৃতীয় দিন ৭ আগস্ট দিনব্যাপী চলবে বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। সেখানে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ ও গণআন্দোলন সংশ্লিষ্ট নানা দলিল, ছবি ও ভিডিও উপস্থাপন করা হবে।
সার্বিক বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি এসএম ফরহাদ বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণজাগরণ ও ছাত্র প্রতিরোধ ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। সেই ঘটনার স্মরণে এবং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের পথরেখা নির্ধারণের প্রয়াসে ঢাবির টিএসসি প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখা আয়োজন করতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘আমরাই ৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।”
তিনি বলেন, “এ আয়োজন হবে শিল্প, সংস্কৃতি, স্মৃতি ও রাজনৈতিক ভাবনার এক সংমিশ্রণ। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের অভিজ্ঞতা আমাদের অনুপ্রেরণা। আর সংস্কৃতির মাধ্যমে আমরা সেই প্রতিরোধ চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী