চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা’ ছাত্রী হলে ৫ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার দাবি করেছেন ছাত্রীরা। এই আদেশ প্রত্যাহারের জন্য তাঁরা প্রশাসনকে তিন দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফেরও পদত্যাগ চেয়েছেন তাঁরা।

আজ রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এই দাবি জানান। বিকেল পাঁচটায় নগরের ষোলশহর রেলস্টেশনে এই সম্মেলন হয়। এতে গত বৃহস্পতিবার বহিষ্কার হওয়া পাঁচ ছাত্রী উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন রওজাতুল জান্নাত, উম্মে হাবিবা বৃষ্টি, সুমাইয়া শিকদার, মাইসারা জাহান ও জান্নাতুল মাওয়া।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুমাইয়া শিকদার। এতে তিনি পাঁচটি দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো, অন্যায়ভাবে দেওয়া বহিষ্কারাদেশ তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রত্যাহার, প্রক্টরিয়াল বডি অপসারণের আগে নতুন করে এই ঘটনার বিচারপ্রক্রিয়া না চালানো, হলে হামলাকারী শিক্ষার্থীদের বিচার করা, ছাত্রীদের সঙ্গে উগ্র আচরণ ও নারীবিদ্বেষী বিভিন্ন মন্তব্য করা ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের বিচার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীদের নিয়ে অবমাননাকর ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়া প্রক্টরের পদত্যাগ ও ক্যাম্পাসে ফ্যাসিবাদের চিহ্ন হিসেবে পরিচিত সব স্থাপনার নাম পরিবর্তন করা।

যে ব্যাখ্যা দিলেন ছাত্রীরা

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রীরা জানান, ‘গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে হলের সামনে একদল শিক্ষার্থী ভাঙচুর করতে আসে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা হয়। কিন্তু এই ঘটনায় ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের একপাক্ষিকভাবে দোষারোপ করা হয়েছে।

ছাত্রীরা দাবি করেন, সেদিন রাত সাড়ে ১১টায় বেশ কিছু শিক্ষার্থীর একটি জটলা মিছিল নিয়ে হলের সামনে এসে সরাসরি ভাঙচুর শুরু করে। এ ঘটনার তাৎক্ষণিকতায় অপ্রস্তুত নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও অশোভন আচরণ করা হয়। হলের ভেতরে থাকা আবাসিক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্লোগানের মাধ্যমে নানা ধরনের নারীবিদ্বেষমূলক কটূক্তি করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে ছাত্রীরা জানান, ‘প্রচণ্ড হট্টগোল ও ভাঙচুরের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে হলে অবস্থানরত আবাসিক শিক্ষার্থীরা নিচে নেমে আসেন। তখন গেটের অপর প্রান্তে ভাঙচুরকারী শিক্ষার্থীদের একজন অনুমতি ছাড়া ছাত্রীদের ভিডিও ধারণ করছিলেন। তখন মেয়েরা প্রতিবাদ জানাতে পাশের ছোট গেটের তালা ভেঙে মূল ভবনের বাইরে হল আঙিনায় নেমে আসে।’

তখনই সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে একজন ছাত্রীদের ‘হাসিনার দোসর’ ও ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে গালি দেন। ছাত্রীরা অপমানজনক আচরণের তীব্র প্রতিবাদ করেন। আধা ঘণ্টা ধরে চলতে থাকা এসব ঘটনায় প্রক্টরকে জানানো হলেও তিনি আশানুরূপ ব্যবস্থা নেননি বলে ছাত্রীদের দাবি। নিরাপত্তা সংকটে ভুগতে থাকা ছাত্রীরা পরে প্রতিবাদ জানিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে যান। সেখানে গাড়ি থেকে নেমেই একজন অশোভন আচরণ শুরু করেন। গাড়ি থেকে নামা ব্যক্তিরাও ‘হাসিনার দোসর’ ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে গালাগাল শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা প্রথমে বুঝতেই পারেননি যে তাঁরা প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য।

তাঁরা বলেন, প্রশাসনকে তাঁরা একাধিকবার হলের নাম পরিবর্তন ও ফটকের সামনে থাকা নৌকা অপসারণ করার কথা জানিয়েছেন। প্রশাসনের কাছে দুইবার লিখিত আবেদনও দিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসন সেটা করেনি। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার এই দায়ভার প্রশাসন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।

প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রীরা জানান, প্রশাসন ছাত্রীদের হল এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বারবার বলার পরও প্রক্টর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেননি। ছাত্রীদের সঙ্গে সহকারী প্রক্টর অশোভন আচরণ করেছেন। হাসিনার দোসর, ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়েছেন। অশোভন আচরণ করা সহকারী একজন প্রক্টরকে একজন ছাত্রী আঘাত করেছেন, যা অনুচিত ও বিচারযোগ্য। রাতের বেলা ছাত্রদের মেয়েদের হলে আসা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ প্রশাসন নিজেদের অপরাধ ও অপকর্ম ঢাকতেই কেবল মেয়েদেরই শাস্তি দিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

পাবনায় বিষাক্ত মদপানে ২ যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ

পাবনায় বিষাক্ত মদপানে দুই যুবক মারা গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে তারা মারা যান। উভয় পরিবার তাদের মৃত্যুর বিষয় নিয়ে কোনো তথ্য বা কথা বলতে রাজি হননি। ঘটনার পর থানায় অভিযোগও করেনি পরিবারের সদস্যরা।

মারা যাওয়ারা হলেন- পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার সঞ্চিত সরকারের ছেলে সুমন সরকার (৩৫) এবং রাধানগর মক্তব এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে মামুন হোসেন (৩২)। তারা দুইজনই স্থানীয় একটি ব্যান্ড সাউন্ড প্রতিষ্ঠানের সদস্য। একই সঙ্গে বাদ্যযন্ত্র শিল্পি হিসেবে পরিচিত।

আরো পড়ুন:

এটা অবহেলা, আমি বিচার চাই: সাজিদের বাবা

রংপুরে বিভাগীয় ইজতেমা শুরু, ২ মুসল্লির মৃত্যু 

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাতে দুই যুবক একটি অনুষ্ঠান শেষে মদপান করেন। তারপর তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাদের।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুখি খাতুন বলেন, “একজনকে রাত ১২টা এবং অপরজনকে রাত ৩টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। একজন হাসপাতালে মারা গেলে তাকে তার স্বজনরা নিয়ে চলে যান। আরেকজন রাজশাহী নেওয়ার পথে মারা গেছেন।”

পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুলাল হোসেন বলেন, ‍“হাসপাতালের নথিপত্র অনুযায়ী তাদের মৃত্যুর কারণ মদ্যপান উল্লেখ করা হয়েছে। কোথা থেকে, কীভাবে, কী মদ পানে তারা মারা গেছেন এ বিষয়ে তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।”

তিনি আরো বলেন, “মারা যাওয়াদের একজন হিন্দু হওয়ায় তার সৎকার করেছেন পরিবারের সদস্যরা। অপরজনের মরদেহ থানায় আনা হয়েছে। এখনো মৃত্যুর বিষয়ে কোনো পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করেনি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘কলেজ জীবনে ভাবতাম, আমি সুন্দর নই আমার শরীর ঠিকঠাক নেই’
  • ক্যানসার, ৩৬ অস্ত্রোপচার—গানে ফেরার গল্প শোনাবেন ‘বেজবাবা’
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ১১০ বোতল ফেন্সিডিলসহ কারবারি গ্রেপ্তার
  • পাবনায় বিষাক্ত মদপানে ২ যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ
  • নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানালেও সতর্ক থাকার আহ্বান গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের
  • ‘যারা বলে বেড়াচ্ছিল নির্বাচন হবে না, তাদের মুখে চুনকালি পড়ল’
  • নির্বাচন আচরণবিধি অনুসারে মাসুদুজ্জামানের ব্যানার-পোস্টার অপসারণ
  • ডিজির সঙ্গে তর্ক, ক্ষমা চেয়ে দায়িত্বে ফিরলেন সেই চিকিৎসক
  • ক্ষমা পেয়ে কাজে যোগ দিলেন চিকিৎসক ধনদেব চন্দ্র বর্মণ
  • বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রেখে কর্মবিরতি ও শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা