ট্রাকচালক থেকে মহাকাশ প্রকৌশলী তিনি
Published: 16th, February 2025 GMT
যুক্তরাজ্যের ডেভিড বাউটফ্লোর পেশায় লরিচালক ছিলেন। কিন্তু তিনি আরও ভালো কিছু করার চেষ্টা করছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তাঁর শখ ছিল মহাকাশ ও উড়োজাহাজ চালনার। কিন্তু তাঁর পটভূমি থেকে মহাকাশে কাজ করা কল্পনার বাইরে ছিল। অথচ কল্পনার বাইরের সেই বিষয়টিকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন ডেভিড। নিজ চেষ্টায় তিনি হয়েছেন মহাকাশ প্রকৌশলী (স্পেস ইঞ্জিনিয়ার)। কীভাবে সম্ভব হলো?
৩১ বছর বয়সী ডেভিড ৯ বছর ধরে হসপিটালিটি নিয়ে কাজ করেছেন। চেশায়ার কাউন্টির একটি গ্যাস্ট্রো-পাবের মহাব্যবস্থাপক হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বুঝতে পারছিলেন, এটা তাঁর আসল ক্যারিয়ার নয়। এর থেকে আরও ভালো কিছু করা সম্ভব, এই ভাবনাটা তিনি সব সময় ভাবতেন।
ডেভিড বাউটফ্লোর বলেন, ছোটবেলা থেকেই তাঁর মহাকাশ ও উড়োজাহাজ চালনার আগ্রহ শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে তাঁর প্রাথমিক অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে কনকর্ড।
ডেভিড জানতে পারেন, পোর্টসমাউথ ইউনিভার্সিটি লন্ডনভিত্তিক ব্রিটিশ মাল্টিন্যাশনাল অ্যারোস্পেস, ডিফেন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন সিকিউরিটি কোম্পানির (বিএই সিস্টেম) সঙ্গে প্রথমবারের মতো স্পেস সিস্টেম ডিগ্রি শিক্ষানবিশ চালু করেছে। তবে এর কোর্স ফি অনেক। তবু এই কোর্স করতেই হবে। চার বছরের স্পেস সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই কোর্সে চাকরি করার অনুমতি দেয়। তাই কোর্স ফি জোগাড় করতে তিনি লরিচালকের পেশা বেছে নেন।
ডেভিড বলেন, ‘এই কোর্সে চান্স পাওয়ার কথা শুনে সবাই ভেবেছিল, আমি মিথ্যা বলছি।’ তিনি আরও বলেন, ট্রাকচালক থেকে মহাকাশ ইঞ্জিনিয়ার হতে যাচ্ছি, এই বিষয় অনেকেই ভালোভাবে দেখেনি।
কোর্সের একাডেমিক দিকটি চারটি মডিউল তাপগতিবিদ্যা, প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল সিস্টেম এবং গণিত, বক্তৃতা ও পরীক্ষাগার নিয়ে গঠিত। ডেভিডের সঙ্গে আরও চারজন এই শিক্ষানবিশ কোর্সে যোগ দেন। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন ২১ বছর বয়সী অ্যালিস ওভারেন্ড। অ্যালিস পোর্টসমাউথ কোর্সে আবেদন করার আগেই স্যাটেলাইট সমাবেশ ও পরীক্ষায় কাজ করেছিলেন। কিন্তু ২০২৩ সালে ভার্জিন অরবিটের মাধ্যমে মহাকাশে একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সেই কাজ ব্যর্থ হয়। এই ঘটনা অ্যালিসের মনে গভীর ছাপ ফেলে।
ডেভিডদের দলের সবচেয়ে কনিষ্ঠ সদস্য হলেন ১৮ বছর বয়সী জর্জ স্মিথ। পদার্থবিদ্যা, গণিত ও প্রকৌশলে ‘এ’ লেভেল থেকে তিনি সরাসরি এই কোর্সে যোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই কোর্সের প্রতি আমার আকর্ষণ ছিল। এই কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, মহাকাশ একটি বিস্তৃত সেক্টর। তিনি একদিন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ছাড়িয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। যদি সবকিছু ঠিকঠাক মতো করা যায়, তাহলে একদিন তিনি নভোচারী হবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে এই কোর্স জর্জ স্মিথের প্রত্যাশা পূরণ করেছে। তিনি এখন স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে।
বিএই সিস্টেমের মহাকাশ কৌশলের প্রধান এলিজাবেথ সিওয়ার্ড। একজন পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে নিজস্ব পটভূমি থাকা সত্ত্বেও সিওয়ার্ড মনে করেন, ‘মহাকাশে একটি পাদবেদী (পেডেস্টাল) স্থাপন করার প্রবণতা আছে। কিন্তু সত্য হলো আমাদের অন্যান্য ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আরও বেশি লোকের প্রয়োজন। মহাকাশে কাজ করতে আগ্রহী যে কেউ, যেমন প্রকল্প পরিচালক বা আইনজীবীদেরও প্রয়োজন আছে।’
এডিনবার্গের হ্যারিয়ট-ওয়াট বিশ্ববিদ্যালয়ে অরবিটাল মেকানিকসের শিক্ষক স্টেফানি ডোচার্টি। তিনি শেখান, কীভাবে একটি উপগ্রহ সঠিক পথে চলে। এটি মহাকাশ কোর্সের অংশ। তিনি বলেন, মহাকাশ খাতে দক্ষতার চেয়ে বিশেষীকরণ কম গুরুত্বপূর্ণ। নিয়োগকারীরা সমস্যা সমাধানের দক্ষতা চান।
২০১১ সালে স্পেস শাটলের গ্রাউন্ডিংয়ের পর ডেভিড অনুভব করেছিলেন, মহাকাশ অনুসন্ধান ‘এক ধাপ পিছিয়ে গেছে’। বর্তমানে তিনি বলেছেন, ইলন মাস্কের স্পেসএক্স পুনর্ব্যবহারযোগ্য লঞ্চারগুলোর সাফল্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
মহাকাশের পড়াশোনার বাইরে কী করেন? এই প্রশ্নের জবাবে স্মিথ বলেন, ‘আমাদের অধিকাংশই ভিডিও গেম খেলে। অ্যালিস ওভারেন্ডও এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত।’
ডেভিড বলেন, ‘আমরা সবাই গেমিং পছন্দ করি। স্কুবা ডাইভিং আমাদের আরেকটি জনপ্রিয় বিনোদন। স্কুবা ডাইভিং মহাকাশে কাজ করার জন্য ভালো প্রশিক্ষণ।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুই মিনিটের বিতর্কিত দৃশ্য দিয়ে আলোচনায়, পরে বলিউডকে বিদায় জানান সেই অভিনেত্রী
বলিউডের ইতিহাসে এমন অনেক অভিনেত্রী আছেন, যাঁরা শূন্য থেকে শুরু করে রাতারাতি পরিচিতি পেয়েছেন; পরে আবার হঠাৎই হারিয়ে গেছেন। কিমি কাতকার তেমনই একজন। ১৯৮০-এর দশকে বলিউডে তিনি ছিলেন আলোচিত ও সাহসী অভিনেত্রীদের একজন।
কিমির উত্থান
আশির দশকটি বলিউডে সৃজনশীল ও পরিবর্তনের সময় ছিল, যেখানে অনেক প্রতিভাবান অভিনেতা-অভিনেত্রী তাঁদের ছাপ ফেলেছেন। কিমি ছিলেন সেই সময়ের অন্যতম উদীয়মান নায়িকা। পর্দায় সাহসী দৃশ্যের জন্য তিনি ব্যাপক পরিচিতি পান। যদিও তাঁর চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত; কিন্তু এর মধ্যেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন।
মুম্বাইতে জন্ম নেওয়া কিমি ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মডেল হিসেবে, পরে তিনি চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। ১৯৮৫ সালে ‘অ্যাডভেঞ্চার অব টারজান’ দিয়ে আলোচিত হন তিনি। সিনেমার সাফল্য তাঁকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে। হেমন্ত বীরজের সঙ্গে জুটি বেঁধে তিনি দর্শকদের মন মাতিয়ে দেন। তবে এ ছবিতেই একটি নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করে রাতারাতি আলোচনায় আসেন। দৃশ্যটি নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘সেই সময় আমি জানতাম না এই দৃশ্য কতটা বিতর্কিত হবে। কিন্তু অভিনয় আমার জন্য সব সময় ছিল সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জ।’ এরপর ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে অমিতাভ বচ্চন, অনিল কাপুর, গোবিন্দ ও আদিত্য পঞ্চোলির সঙ্গেও সিনেমা করেন তিনি। তাঁর নাচ ও অভিনয়ের দক্ষতা দর্শকদের কাছে তাঁকে প্রিয় করে তোলে।
‘অ্যাডভেঞ্চার অব টারজান’-এ কিমি কাতকার। আইএমডিবি