‘যারা বলে বেড়াচ্ছিল নির্বাচন হবে না, তাদের মুখে চুনকালি পড়ল’
Published: 11th, December 2025 GMT
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষিত নির্বাচনি তফসিল এবং আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটকে স্বাগত জানিয়েছে জুলাই অভ্যুত্থান ও সংস্কারকে ধারণকারী তিন দলীয় ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের পক্ষে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভূঁইয়া এক বার্তায় এই তথ্য জানান।
যৌথ বিবৃতিতে জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম এবং আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, এতদিন যেসব সুযোগ সন্ধানী এবং সংস্কারবিরোধী চক্র নির্বাচন হবে না বলে গল্প ছড়িয়েছে, নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে তাদের মুখে চুনকালি পড়ল।
সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে নেতারা বলেন, সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করে সরকার জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।”
একই সাথে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করে নেতারা বলেন, সকল দলের প্রতি সমান আচরণ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখনো সম্ভব হয়নি।
বেশ কয়েক জায়গায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে জোট নেতারা বলেন, “এই পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ১৪ শত শহীদ ও হাজারো আহত মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।”
গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, প্রধান উপদেষ্টা যেখানে ঘোষণা দিয়েছেন, এবারের নির্বাচন হবে ইতিহাসের সেরা নির্বাচন; সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোভাব এখনো ততটা জনবান্ধব নয়।
অতিদ্রুত পেশাদার ও নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে তাগিদ দেন তিন নেতা।
উদ্বেগের সঙ্গে নেতারা বিবৃতিতে বলেন, সকল শর্ত পূরণ করার পর এমনকি হাইকোর্টের আদেশ সত্ত্বেও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনকে নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না। এ ধরনের আচরণ জনমনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে শঙ্কা তৈরি করবে।
সকল নেতিবাচক আচরণ ও প্রশ্নবোধক কর্মকাণ্ড পরিহার করে নির্বাচন কমিশন ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জোটটির নেতারা।
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দীর্ঘদিনের কোয়ান্টাম রহস্যের সমাধান করলেন বিজ্ঞানীরা
প্রায় ১০০ বছর আগে আলবার্ট আইনস্টাইনের প্রস্তাবিত একটি পরীক্ষা আবার করার মাধ্যমে কোয়ান্টাম মেকানিকসের একটি মূল নীতিকে নিশ্চিত করেছেন চীনের একদল বিজ্ঞানী। নতুন এ পরীক্ষার মাধ্যমে একটি কণার পথ ও তার তরঙ্গসদৃশ আচরণ একই সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা যায় না বলে প্রমাণ করা হয়েছে। নতুন এই প্রমাণ কোয়ান্টাম বস্তুর প্রকৃতি সম্পর্কে নিলস বোরের ধারণাকে সমর্থন করে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
১৯২৭ সালে ব্রাসেলসের সলভে কনফারেন্সে কোয়ান্টাম মেকানিকসের ভিত্তি নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়। বিজ্ঞানী আইনস্টাইন এই তত্ত্ব সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করতেন। তিনি বিজ্ঞানী বোরের সম্পূরকতার নীতিকে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করেন। বোরের মতে, ফোটনের মতো কোয়ান্টাম কণা একই সঙ্গে কণা ও তরঙ্গ উভয় রূপেই আচরণ করতে পারে। তবে এই দুটি বৈশিষ্ট্য একসঙ্গে পরিমাপ করা অসম্ভব।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইন তাঁর একটি চিন্তামূলক ডাবল–স্লিট পরীক্ষার একটি সংশোধিত সংস্করণ প্রস্তাব করেন; যার মাধ্যমে দেখা যায়, দুটি বৈশিষ্ট্য সম্ভবত একই সঙ্গে পরিমাপ করা যেতে পারে, যা আবার বিজ্ঞানী বোরের তত্ত্বের পরিপন্থী হতো। কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের এই চ্যালেঞ্জ কেবল তাত্ত্বিকই ছিল। চীনের বিজ্ঞানী পান জিয়ানওয়েইয়ের নেতৃত্বে ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অব চায়নার একদল বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের ধারণাকে বাস্তবে একটি পরীক্ষায় রূপান্তরিত করেছেন।
বিজ্ঞানীরা অত্যন্ত সংবেদনশীল যন্ত্রাংশ তৈরি করেছেন, যা একটি একক ফোটনের ক্ষুদ্র গতিও শনাক্ত করতে পারে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, কণার পথ পরিমাপের চেষ্টা করলে ব্যতিচার ধরন নষ্ট হয়ে যায়। আবার ব্যতিচার প্যাটার্ন পর্যবেক্ষণ করলে কণার পথ নির্ধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই ফলাফল বোরের তত্ত্বকে প্রমাণ করে। কণার বৈশিষ্ট্য সম্পূরক ও একই সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা যায় না। নতুন এই পরীক্ষাকে পদার্থবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে স্বাগত জানানো হচ্ছে।
কোয়ান্টাম কণার এমন অস্বাভাবিক আচরণ বাস্তবতার একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য, এটি কোনো পরীক্ষামূলক ত্রুটি নয়। গবেষণাটি ফিজিক্যাল রিভিউ লেটারসে প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষাটি বিজ্ঞানী বোরের কোপেনহেগেন ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে দীর্ঘদিনের বিতর্কের নিষ্পত্তি করেছে।
সূত্র: এনডিটিভি
https://www.ndtv.com/science/chinese-scientists-test-einsteins-100-year-old-thought-experiment-confirm-bohrs-quantum-theory-9763355