৩৭ বছর পর নির্বাচন ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনে, নতুন সভাপতি সাঈদ আহমেদ
Published: 24th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) ২০২৫-২৬ মেয়াদের নির্বাহী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন গ্লোবাল ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান সাঈদ আহমেদ। এ ছাড়া সংগঠনটির প্রথম সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ডেলটা লাইফ ইনস্যুরেন্সের পরিচালক আদিবা রহমান আর সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অগ্রণী ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান কাজী সাখাওয়াত হোসেন। গতকাল রোববার ঢাকার নয়াপল্টনে বিআইএর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তাঁরা নির্বাচিত হন।
১৯৮৮ সালে সংগঠনটি গঠন হওয়ার পর এবারই প্রথম সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন। বিআইএর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিআইএ জানিয়েছে, নির্বাচিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ক্রিস্টাল ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, বাংলাদেশ ন্যাশনালের ইনস্যুরেন্সের পরিচালক তায়েফ বিন ইউসুফ, সিটি ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান হোসেইন আখতার, রিপাবলিক ইনস্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী এ কে এম সরোয়ার জাহান জামিল, গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী ফারজানা চৌধুরী, সন্ধানী লাইফের চেয়ারম্যান মুজিবুল ইসলাম, ফারইস্ট ইসলামি লাইফের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, বেঙ্গল ইসলামি লাইফের ভাইস চেয়ারম্যান আমিন হেলালী, বেস্ট লাইফের পরিচালক সৈয়দ বদরুল আলম, এনআরবি ইসলামিক লাইফের পরিচালক আরিফ সিকদার, পপুলার লাইফের মুখ্য নির্বাহী বি এম ইউসুফ আলী, প্রগতি লাইফের মুখ্য নির্বাহী জালালুল আজিম, জেনিথ ইসলামি লাইফের মুখ্য নির্বাহী এস এম নুরুজ্জামান এবং ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী মো.
বিমা খাতে এমডি তথা মুখ্য নির্বাহীদের বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরাম নামে একটি সংগঠন রয়েছে, যার সদস্য মুখ্য নির্বাহীরাই। কিন্তু চেয়ারম্যানদের সংগঠন হিসেবে পরিচিতি থাকলেও বিআইএর কমিটিতেও মুখ্য নির্বাহী বা সাধারণ পরিচালকেরাও এবার নির্বাচিত হয়েছেন।
জানতে চাইলে বিআইএর নতুন সহসভাপতি কাজী সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহীরা বিআইএর কমিটিতে এখন পর্যন্ত থাকতে পারছেন। আশা করছি, ভবিষ্যতে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে এর একটি সুরাহা করা হবে।’
১৯৮৮ সালে বিআইএ গঠিত হয়। বর্তমানে সংগঠনটির সদস্যসংখ্যা ৮০, তবে ভোটার ৭৬ জন। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৫৩ জন সদস্য। ২০১১ সাল থেকে টানা সংগঠনটির সভাপতি ছিলেন শেখ কবির হোসেন, যিনি বিমা খাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা হিসেবে পরিচিত। তাঁর এমন পরিচিতির কারণে বিআইএতে স্বাভাবিক নির্বাচন হতো না বলে জানা গেছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ২০ আগস্ট বিআইএ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ কবির হোসেন।
শেখ কবির হোসেনের পদত্যাগের পর গত বছরের অক্টোবরে সভাপতির দায়িত্ব পান মেঘনা লাইফ ও কর্ণফুলী ইনস্যুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ। এর আগে তিনি সংগঠনটির প্রথম সহসভাপতি ছিলেন। আগামী ৮ এপ্রিল ২০২৩-২৪ মেয়াদের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
মেয়াদ শেষের আগে কেন নির্বাচন, এমন প্রশ্নের জবাবে নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সামনে রোজা চলে আসায় আমিই অনুরোধ করেছিলাম নির্বাচনটা যাতে আগে শেষ করা যায়। ১ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্বে আছি। তবে ৩৭ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন হয়েছে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ব চ ত হয় ছ ন স গঠনট র ব আইএর ইসল ম আহম দ ব আইএ সদস য প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদলের কমিটি নেই ১৪ মাস, স্থবির কার্যক্রম
দীর্ঘ ১৪ মাস ধরে কমিটি নেই নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের। একইভাবে কমিটি নেই নোয়াখালীর ৯ উপজেলার চারটিতে। বাকি পাঁচ উপজেলায় আহ্বায়ক কমিটি থাকলেও তা মেয়াদোত্তীর্ণ। এমন অবস্থায় নোয়াখালীতে ছাত্রদলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। ওই কমিটিতে সভাপতি পদে আজগর উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মো. নোমান ছিলেন। দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। শিগগিরই নতুন কমিটি গঠন করা হবে। তবে ১৪ মাসেও নতুন কমিটি গঠন করা হয়নি।
কমিটি না থাকার কারণে দলের ভেতর জবাবদিহির জায়গাও নষ্ট হচ্ছে। এ সুযোগে কেউ কেউ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন, যা সামগ্রিকভাবে দলের জন্য ক্ষতিকর।সাবেক সহসভাপতি, নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলজেলা ছাত্রদলের একাধিক সাবেক নেতার সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। তাঁরা বলেন, কমিটি না থাকায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ বাড়ছে। যে যাঁর মতো দায়সারাভাবে সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করছেন। জেলা শাখার তদারকি না থাকায় অধীন ইউনিটগুলোর কার্যক্রমও ঝিমিয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা ছাত্রদলের সাবেক দুই নেতা বলেন, গত বছর কমিটি বিলুপ্তির পর নতুন কমিটি গঠন হবে—এ আশায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা দেখা দিয়েছিল। তবে এসব নেতা-কর্মী এখন হতাশ হয়ে পড়েছেন। আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলের কার্যক্রমে গতি বাড়াতে দ্রুত কমিটি গঠন করা উচিত বলে জানান তাঁরা।
জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মো. নোমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল, এটা সত্য। কিন্তু কী কারণে কমিটি হঠাৎ বিলুপ্ত করা হলো, তা আমরা জানি না। তবে দলের স্বার্থে বলব, দ্রুত নতুন কমিটি ঘোষণা করা উচিত। তা না হলে দল সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের একজন আনোয়ার হোসাইন। তিনি বিগত কমিটিতে সহসভাপতির পদে ছিলেন। আনোয়ার হোসাইন বলেন, দীর্ঘদিন কমিটি না থাকার কারণে সংঘবদ্ধভাবে দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। তা ছাড়া কমিটি না থাকার কারণে দলের ভেতর জবাবদিহির জায়গাও নষ্ট হচ্ছে। এ সুযোগে কেউ কেউ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন, যা সামগ্রিকভাবে দলের জন্য ক্ষতিকর।
চার উপজেলায় কমিটি নেই, পাঁচটিতে মেয়াদোত্তীর্ণজেলার মতো নোয়াখালীর চার উপজেলাতেও ছাত্রদলের কমিটি নেই। এসব উপজেলা হলো চাটখিল, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সুবর্ণচর। এর বাইরে জেলার বাকি পাঁচ উপজেলার মধ্যে চারটিতে আহ্বায়ক কমিটি থাকলেও সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে চার বছর আগে। এসব উপজেলা হলো সদর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী। এ ছাড়া অপর উপজেলা হাতিয়ায় গত ১২ আগস্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এক মাসের জন্য গঠিত এই আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদও শেষ হয়েছে।
জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাকসুসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে এত দিন আমাদের ব্যস্ততা ছিল। এ কারণে জেলা কমিটিগুলোর দিকে নজর দেওয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমানে জেলা কমিটি দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শিগগিরই নোয়াখালীতে নতুন কমিটি দেওয়া হবে।’