মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের দাবি ব্লাস্টের
Published: 10th, December 2025 GMT
মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক সেবা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ সব ধরনের সহিংসতায় দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংগঠনটি এ দাবি জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে ব্লাস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকার–বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের সুপারিশের কথা তুলে ধরে। সেখানে ভুক্তভোগী পরিবার ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক সহায়তা প্রদান এবং সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
ব্লাস্ট বলেছে, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দেশে যেসব সহিংসতার ঘটনা ঘটছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত ও যথাযথ বিচার নিশ্চিত করা জরুরি।’
ব্লাস্ট বিশেষভাবে রাজনৈতিক বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট কারণে হয়রানিমূলক মামলা, গণগ্রেপ্তার, সংঘবদ্ধ সহিংসতা (মব ভায়োলেন্স), নারী ও শিশুর প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে। এ ছাড়া মিথ্যা ও অপতথ্যের মাধ্যমে হয়রানি, সাংস্কৃতিক কর্মী বিশেষ করে বাউলশিল্পীদের প্রতি সহিংসতা, আদালতে বিচারপ্রার্থীদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতসংক্রান্ত ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বলেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় নিহত ১১৪ জনের পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশের মরদেহ উত্তোলনের উদ্যোগকে ‘প্রশংসনীয়’ বলে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে ব্লাস্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার মরদেহ যথাযথভাবে পুনরায় সৎকারের সুযোগ পায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, গত তিন মাসে সারা দেশে ৬৩৬ জন নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ব্লাস্ট মনে করে, এই পরিসংখ্যান সমাজে নারী ও শিশুর নিরাপত্তাহীনতা এবং তাঁদের প্রতি সহিংসতাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘মানবাধিকার: প্রতিদিনের জীবনে অপরিহার্য’ উল্লেখ করে ব্লাস্ট সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সব মানুষের মানবাধিকার, আইনের শাসন ও সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ভবিষ্যতে এমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তি রোধ করা অত্যাবশ্যক বলে মনে করে সংগঠনটি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ১৫ দফা দাবি
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ১৫ দফা দাবি তুলে ধরেছে।
১০ ডিসেম্বর (আজ বুধবার) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। এ উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে মানবাধিকার সংগঠনটি। এ সময় জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগঠনটি ১৫ দফা দাবি তুলে ধরেছে।
কর্মসূচিতে অংশ নেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) কর্মকর্তা-কর্মচারী, তাঁদের পরিবার এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘স্পিক আপ’ প্রকল্পের তরুণেরা। এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালের এ দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। এ ঘোষণার মাধ্যমে স্বীকৃত হয়, মানবাধিকার সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। জন্মস্থান, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বিশ্বাস, অর্থনৈতিক অবস্থা কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে মানবাধিকার সর্বজনীন ও সবার জন্য সমান। প্রত্যেক মানুষ জন্মগতভাবেই এসব অধিকার লাভ করেন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের বাইরে গিয়েও প্রতিদিনই মানবাধিকার বিষয়ে জাগ্রত ও সোচ্চার থাকতে চাই। আইন ও সালিশ কেন্দ্র কখনো মানবাধিকার বিষয়ে কারও কাছে মাথা নত করেনি, কারও সঙ্গে আপস করেনি। যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, সেখানেই আইন ও সালিশ কেন্দ্র সব সময় সোচ্চারভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছে।’
নারী অধিকারের বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সংস্থার এই উপদেষ্টা মাবরুক মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘আইনের ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে কিন্তু নারী ও শিশুর প্রত্যয়ী সহিংসতাগুলো বন্ধ হয়নি। এটি নিয়েও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। আজ বুধবার, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে