কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহানের বাড়িতে রাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে তাঁর স্ত্রী আকলিমা বেগম (৬৭) স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। 

তবে কারা দিয়েছে, তা নিশ্চিত করতে পারেননি শাহজাহানের ছোট ভাই অ্যাডভোকেট আরকান মিয়া। তিনি বলেন, বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.

শাহজাহানের বাড়ি হিলচিয়া ইউনিয়নের মৈতপুর গ্রামে। ৫ আগস্টের পরও বাড়িতে আগুন, লুটপাট চালানো হয়। ভাইয়ের নামে কয়েকটি মামলা রয়েছে। বর্তমানে তিনি পলাতক। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে একদল লোক আবার তার বাড়িতে আগুন দেয়। তবে কাউকে চিনতে পারিনি। এতে ভয় পেয়ে ভাবী আকলিমা বেগম স্ট্রোক করেন। রাত ১১টার দিকে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুরাদ হোসেন বলেন, আগুন ও মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। তবে কিভাবে আগুন লেগেছে, এটা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। কেউ এ বিষয়ে থানায় অভিযোগও করেনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ আওয় ম ল গ

এছাড়াও পড়ুন:

আদিবাসী দিবসে স্বীকৃতি চান পাহাড়িরা

দীর্ঘ বছর ধরে ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি না পাওয়ায় হতাশ পাহাড়ের আদিবাসীরা। তারা মনে করেন, পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি ফিরে আসবে। তাই দ্রুত পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ পাহাড় আর সমতলের সকল আদিবাসীদের, আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন পাহাড়ের আদিবাসীরা।

৯ আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবসকে ঘিরে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এমএন লারমার দল ও বিভিন্ন সংগঠন খাগড়াছড়িতে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সেসব কর্মসূচি উপলক্ষ্যে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন পাহাড়িরা। 

পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সমতলের সকল আদিবাসীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি দীর্ঘদিনের কিন্তু এতদিন পরেও সেই স্বীকৃতি না পাওয়ায় হতাশার কথা জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসকৃত বিভিন্ন জাতিস্বত্তার মানুষ। 

তারা জানিয়েছেন, আদিবাসী হিসেবে তাদের নিজস্ব ঐহিত্য, ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, কালচারসহ সবকিছু থাকা সত্ত্বেও বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকার তাদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। তাদের ভূমি অধিকারও হরণ করা হয়েছে।

আদিবাসী বিষয়ক জাতীয় কোয়ালিশন, জেলা সমন্বয়কারী, নমিতা চাকমা বলেন, “পাহাড়ের ১৯০০ সালের আইন অনুসারে প্রথাগত আইনের মাধ্যমে ভূমির দখলি সত্ত্বটা বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। তাই তাদের অনেকের ভূমির কোনো দলিল বা কাগজপত্র নেই। আর এই সুযোগে আমাদের ভূমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ১৯৭৪ সালের পর পাহাড়ে বাঙ্গালী পুর্নবাসন শুরু করার পর থেকে পাহাড়ের ভূমি বেদখল হয়ে গেছে, এখনো যাচ্ছে। বেদখলকৃত ভূমি উদ্ধার করার জন্য ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক ভূমি কমিশন করা হয়, সেই কমিশনে প্রায় ১৬ হাজার আবেদন জমা পড়লেও কমিশনের কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেই।”

ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরনার্থীর সভাপতি অজিত বরণ চাকমা বলেন, “ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরনার্থীদের সাথে সরকারের যে ২০ দফা প্যাকেজ চুক্তি ছিল, তাও বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই পাহাড়ের আদিবাসীরা মনে করেন, পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিলে পাহাড়ের আদিবাসীদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত হবে আর স্থায়ী শান্তি ফিরে আসবে।”

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির এমএন লারমা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা বলেন, “আদিবাসী স্বীকৃতির দাবিটা দীর্ঘ বছরের। পাহাড়-সমতল মিলিয়ে ৪৪/৪৫টি জাতিসত্ত্বা আছে বাংলাদেশে। বিগত সরকারের কাছে জোর দাবি ছিল, দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল- সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারের কাছে দাবি দাওয়া পেশ করে আসছি। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হলেও আমাদের দাবি সরকারের কাছেই। দেশে যে সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকুক বা যে সরকার আসুক, আমাদের দাবি আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি।”

তিনি আরো বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমরা আশা করেছিলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের দাবি নিয়ে যথেষ্ট নমনীয় হবেন, আন্তরিক হবেন কিন্তু সে ধরনের কোন আলামত দেখছি না। আগামীতে যে সরকার ক্ষমতায় আসুক, আদিবাসী হিসেবে যেন স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে আদিবাসীরা যেসব অধিকার ভোগ করে, বাংলাদেশের আদিবাসীরাও যেন সেসব অধিকার ভোগ করতে পারেন।”

ঢাকা/রূপায়ন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ