জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদরা ‘জুলাই শহীদ’ নামে অভিহিত হবেন
Published: 27th, February 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদরা ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতরা ‘জুলাই যোদ্ধা’ নামে অভিহিত হবেন।
গত ৯ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূসকে আমন্ত্রণ
বিএনপির বর্ধিত সভায় ঐক্যের ডাক, ভোটের জোর প্রস্তুতিতে চোখ
এতে জানানো হয়, ৮৩৪ জন জুলাই শহীদের তালিকা গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে। জুলাই শহীদ পরিবার এককালীন ৩০ লাখ টাকা পাবেন। এর মধ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা এবং ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই, ২০২৫-এ জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা পাবেন।
শহীদ পরিবারকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা প্রদান করা হবে। শহীদ পরিবারের সক্ষম সদস্যরা সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার পাবেন।
জুলাই-২৪ এর যোদ্ধারা তিনটি মেডিক্যাল ক্যাটাগরি যথা- ক্যাটাগরি এ, ক্যাটাগরি বি এবং ক্যাটাগরি সি অনুযায়ী সুবিধা পাবেন। ক্যাটাগরি এ.
ক্যাটাগরি এ শ্রেণি নিম্নোক্ত প্রক্রিয়ায় আর্থিক অনুদান ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাবেন-তাদের এককালীন ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে। ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে। তাদের মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আজীবন চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। এছাড়া উপযুক্ত মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে দেশি-বিদেশি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পাবেন। কর্মসহায়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন সুবিধা পাবেন। তারা পরিচয়পত্র পাবেন এবং পরিচয়পত্র দেখিয়ে সরকারের বিভিন্ন সুবিধা পাবেন।
গুরুতর আহত ক্যাটাগরি বি'তে ৯০৮ জন জুলাই যোদ্ধা তালিকাভুক্ত, যারা পর্যাপ্ত চিকিৎসার পর শারীরিক অসামর্থ্যতার নিরিখে অন্যের আংশিক সহায়তায় জীবনযাপনে সক্ষম হবেন বলে প্রতীয়মান। গুরুতর আহত জুলাই যোদ্ধাদের এককালীন ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ১ লাখ টাকা দেওয়া হবে। ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে। তাদের মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে।
কর্মসহায়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি অথবা আধা-সরকারি কর্মসংস্থান পাবেন। তারা পরিচয়পত্র পাবেন এবং পরিচয়পত্র দেখিয়ে সরকারের বিভিন্ন সুবিধা পাবেন।
আহত ক্যাটাগরি সি তে ১০ হাজার ৬৪৮ জন জুলাই যোদ্ধা তালিকাভুক্ত হয়েছেন, যারা চিকিৎসার পর বর্তমানে সুস্থ হয়েছেন।
আহত জুলাই যোদ্ধারা নিম্নোক্ত প্রক্রিয়ায় আর্থিক অনুদান ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাবেন- তাদের এককালীন ১ লাখ টাকা দেওয়া হবে, মাসিক ১০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে, পুনর্বাসন সুবিধা পাবেন, পরিচয়পত্র পাবেন এবং পরিচয়পত্র দেখিয়ে সরকারের বিভিন্ন সুবিধা পাবেন।
ঢাকা/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র একক ল ন জন জ ল ই সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রেপ্তার বমদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অপরাধের অভিযোগ আনুন, না হয় মুক্তি দিন
পার্বত্য চট্টগ্রামে বম জনগোষ্ঠীর ৫৯ সদস্যকে বিনা বিচারে বন্দী রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ থাকলে হয় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনতে হবে, না হয় তাঁদের মুক্তি দিতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে লেখা একটি চিঠিতে এমন আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। চিঠিটি শুক্রবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বম জনগোষ্ঠীর আটক সদস্যদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কিছু সুপারিশও করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় চলমান সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে ২০২৪ সালের ৭ এপ্রিল থেকে বম জনগোষ্ঠীর ১৪২ সদস্যকে নির্বিচার গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে তিনটি শিশু। ১৮ মাসও পর তিন শিশুসহ ৫৯ জনকে বিনা বিচারে বন্দী করে রাখা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৮০ জন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন উল্লেখ করে অ্যামনেস্টির চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ২০২৪ সাল থেকে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের তিনজন হেফাজতে মারা গেছেন। এখনো যাঁরা বন্দী, তাঁরা গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের এপ্রিলে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে দুটি ব্যাংকে ডাকাতি এবং এক ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে জিম্মি করার অভিযোগের পর তদন্তের অংশ হিসেবে বিপুলসংখ্যক বম নাগরিককে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিবর্তনমূলক বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। এতে বলা হয়েছে, এর সঙ্গে দণ্ডবিধির আওতায় ডাকাতি, অপহরণসহ আরও বেশ কিছু অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। যদিও ডাকাতির ঘটনায় একজনকে জড়িত থাকার দায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তথ্যপ্রমাণ ব্যবহার করা হয়নি।
চিঠিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ বম জনগোষ্ঠীর ৫৯ সদস্যকে স্বেচ্ছাচারীভাবে বন্দী করে রেখেছে। তাঁদের অন্যায্য ফৌজদারি ব্যবস্থা এবং বর্ণবৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সংস্থাটির আহ্বান—পর্যাপ্ত গ্রহণযোগ্য প্রমাণ থাকলে দ্রুত গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো ফৌজদারি অপরাধে অভিযোগ আনতে হবে অথবা তাঁদের মুক্তি দিতে হবে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে অ্যামনেস্টি আরও বলেছে, বন্দী থাকা ব্যক্তিদের জন্য পর্যাপ্ত আইনগত প্রতিনিধি এবং যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। গ্রেপ্তারের ভয় ছাড়াই তাঁদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজনদের দেখা করার অনুমতি দিতে হবে। এ ছাড়া বম জনগোষ্ঠীর ওপর দমন–পীড়ন বন্ধ করতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির মানবাধিকার–সংক্রান্ত সব ধারা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে।