আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি  মো. আবদুল হামিদের শ্যালক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল প্রফেসর ডাক্তার জিহাদ খান।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শূরা সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মো.

রমজান আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল প্রফেসর ডাক্তার জিহাদ খান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কমিটির মজলিসে শূরা সদস্য এবং রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এর আগে, তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হৃদরোগ বিভাগের প্রধান হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ এলাকার সন্তান।

আরো পড়ুন:

নতুন দলের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ খোলা থাকবে: জামায়াত

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধের দাবিতে রাজশাহীতে জামায়াতের বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলী বলেন, “আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল প্রফেসর ডাক্তার জিহাদ খানকে মনোনীত করা হয়েছে। এর আগে, গত ১ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জের অন্য পাঁচটি সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল। এ নিয়ে জেলার ছয়টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা শেষ হল।” 

এর আগে, কিশোরগঞ্জের পাঁচটি আসনে যাদের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে মনোনীত করা হয়েছিল তারা হলেন, কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে অধ্যক্ষ মোসাদ্দেক আলী ভূঁইয়া, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে কটিয়াদী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মোড়ল, কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম)আসনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক ও ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ রোকন রেজা, কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনে কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলী ও কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়াচর) আসনে ভৈরব উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা কবির হুসাইন।

এক প্রশ্নের জবাবে কিশোরগঞ্জ অধ্যাপক মো. রমজান আলী বলেন, “একই পরিবারে দুই ভাই দুই দল থেকে নির্বাচন করেন এমন নজির আমাদের দেশে বহু আছে। অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল প্রফেসর ডাক্তার জিহাদ খান সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শ্যালক এটা সত্যি। এতে কোন সমস্যা নেই। কারণ তিনি আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির মজলিসে শূরা সদস্য এবং খুবই গুণী মানুষ। চিকিৎসা সেবায় তার অনেক অবদান রয়েছে, এখনো তিনি মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।”

ঢাকা/রুমন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক শ রগঞ জ ইসল ম র র আম র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা

বাংলাদেশে পুলিশে পেশাদারি মনোভাব গড়ে না ওঠার জন্য এই বাহিনীকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহারকে দায়ী করছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, বিভাজিত সমাজে ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’—এমন নানা তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।

আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। যৌথভাবে এ বৈঠক আয়োজন করে প্রথম আলো ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতি। বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। একটি প্রবন্ধ তুলে ধরেন পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (অবসরপ্রাপ্ত) ও বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি ইয়াসমিন গফুর।

নিজের পেশাজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা বলেন, ‘আমি দুই সরকারপ্রধানের (সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গেই কাজ করেছি। অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেয়ে একটা ভদ্রতা, সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে হয়। দেখা করলে অনেক কথার পরও বা অল্প কথার পরও ‘এ কি আমাদের?’—এমন কথা শুনলে প্রথমেই বিব্রত বোধ করতে হয়।’

সরকারের পরিবর্তনে পুলিশে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে প্রভাবিত হওয়ার উদাহরণ দিয়ে মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘বাড়ি ফরিদপুর যদি হয় বা ফরিদপুরের আশপাশে হয়, কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট হবে না। আবার আরেক সময় বগুড়ায় বাড়ি, ঝিনাইদহে বাড়ি, দিনাজপুরের বাড়ি, তাহলে চাকরিতে নেওয়া যাবে না বা ক্ষেত্রবিশেষে পদোন্নতি হবে না।’ এ ধরনের মনোভাব থেকে বের হতে না পারলে পুলিশ বাহিনীর সংস্কার বা পেশাদারি মনোভাব ফেরানো কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরও আচরণের পরিবর্তন না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে নুরুল হুদা বলেন, ‘এক অদ্ভুত ব্যাপার। এখানে দুই হাজারের মতো লোক মারা গেল। অথচ বিহেভিয়ারে চেঞ্জ নেই।’

দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঠিকভাবে কাজ করতে না পারার অন্তরায় হিসেবে নিয়োগে দুর্নীতি এবং সমাজে বিভাজনকে চিহ্নিত করেন সাবেক এই পুলিশপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এই যে প্রচুর সংখ্যার লোক পয়সা দিয়ে চাকরিতে ঢুকেছে বা এখানে হলে...অনেক পয়সা হয়, এই অ্যাটিচিউড (আচরণ) থাকলে তো ল এনফোর্সমেন্ট (আইনশৃঙ্লা নিয়ন্ত্রণ) মুশকিল। আর ল এনফোর্সমেন্টের আরেকটা বড় জিনিস হচ্ছে আমি যে সমাজে কাজ করতে যাচ্ছি, সেই সমাজ কতখানি বিভাজিত।’

সংস্কারের পটভূমিতে স্বাধীন পুলিশ কমিশনের কর্মপদ্ধতি জানতে চেয়েছেন নুরুল হুদা। পুলিশ রিমান্ডের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

এই গোলটেবিল বৈঠকে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম আকবর আলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি কাজী মো. ফজলুল করীম বৈঠকে অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গজারিয়ায় পরিবারকে জিম্মি করে অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট
  • পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত, সচিব কমিটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠাবে
  • পুলিশ লাইনসগুলো গোপন কারাগারে রূপান্তরিত হয়েছিল: নূর খান
  • মাঝে মধ্যে শুনতে হয়, ‘উনি কী আমাদের লোক’: আইজিপি
  • ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা
  • মবের ঘটনা নানাভাবে রাজনীতিকরণ করা হয়: এনসিপি নেতা আদীব