দেশব্যাপী চলমান ধর্ষণের প্রতিবাদ, ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে দিনব্যাপী উত্তাল ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। এ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ক্লাস-পরীক্ষা বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৩৬টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

তবে তাদের এই আন্দোলনের ফলে সেশনজটে পড়তে হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড.

মামুন আহমেদ।

রবিবার (৯ মার্চ) ঢাবির আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণায় শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়বে কি-না জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, “ধর্ষণের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের একটি সংবেদনশীল বিষয়। যেসব বিভাগ ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছে, তাদের সেশনজটের শঙ্কা নেই।”

তিনি বলেন, “যেকোন পরিস্থিতিতে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেশনজটের শঙ্কায় পড়েন, তাহলে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করি। যেমন- অল্প সময়ে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া, অনলাইন ক্লাস, ছুটির দিনেও ক্লাস এবং সেমিস্টার গ্যাপ কমানো। অতীতের মতো এবারো যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া হবে।”

রবিবার এ প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়, লোক প্রশাসন, রসায়ন, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, ভূতত্ব, ইংরেজি, ভাষা বিজ্ঞান, বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীদের।

এছাড়া, শিক্ষক নেটওয়ার্ক ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আংশিক অথবা পূর্ণাঙ্গ ব্যাচ তাদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেওয়া ৩৬ টি বিভাগগুলো হলো- লোক প্রশাসন, রসায়ন, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, ভূতত্ব, ইংরেজি, ভাষা বিজ্ঞান, বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, তথ্য গ্রন্থাগার ও ব্যবস্থাপনা, পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, মার্কেটিং, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ, ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুইরেন্স, টেলিভিশন, চলচিত্র ও ফটোগ্রাফি, ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, মুদ্রণ ও প্রকাশনা, সংগীত, ম্যানেজমেন্ট, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, স্বাস্থ্য অর্থনীতি, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য, পদার্থ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, উদ্ভিদবিজ্ঞান, দর্শন, ভাষাবিজ্ঞান, প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন, ESOL, গণিত, পরিসংখ্যান বিভাগ।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ল স পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার পরিবারের ৭ সদস্যের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম ও সুলতান মাহমুদ।

আগামী ১১ ও ১৩ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের ঠিক করা হয়েছে।

মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যরা হলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি)।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের পক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত।

এর আগে গত ২০ জুলাই পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি এই আদালতে বদলি হয়।

দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে মামলাগুলো বিচারের জন্য অন্য আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় গত এপ্রিলে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। তিনটি মামলায় তাঁদের ছাড়াও সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।

২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করে দুদক।

পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ