রূপগঞ্জে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার মামলার আসামি ইব্রাহিম রিমান্ডে
Published: 17th, March 2025 GMT
রূপগঞ্জে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় ইব্রাহিম (৫৩) এর ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১৭ মার্চ) সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহীদুল ইসলাম চৌধুরীর আদালতে আসামিকে হাজির করে ১০দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলেও আদালত শুনানি শেষে ৭দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রূপগঞ্জ থানা মামলা নং - ৩০(৩)২৫।
রিমান্ডকৃত আসামির মো.
মামলার শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নারায়ণগঞ্জ জেলা নিপীড়িত নারী ও শিশুদের আইনী সহায়তা সেলের সদস্য নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ.এম আনোয়ার প্রধান ও এড. আসমা হেলেন বিথি এবং মহানগর সেলের সদস্য জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. হুমায়ন কবির ও এড. সামসুন নূর বাঁধন। এছাড়াও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাত বছরের শিশু ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় আসামি ইব্রাহিমকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, আমরা পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলা জুড়ে নিপীড়িত নারী ও শিশুদের আইনী সহায়তা দেওয়ায় জন্য প্রস্তুত রয়েছি। কেউ যদি এধরনের বৈঞ্চনার শিকার হন তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন আমরা বিনা পয়সায় সামাজিক ও আইনি সহযোগিতা করবো।
এদিকে আসামি পক্ষের জনৈক আইনজীবী পিটিশন দাখিল করলেও আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ রূপগঞ্জে আলোচিত সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় আসামি ইব্রাহিমকে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর থানার জয়নগর মাযাইর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব-১১।
শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় তথ্যটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যম কর্মীদের নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১ সদর দফতরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (স্কোয়াড কমান্ডার) মো.শামসুর রহমান।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার রূপসি বাঘবাড়ি এলাকায় চকলেট কিনে দেবার কথা বলে নিজ দোকানের ভেতরে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে কাঁচামাল ব্যবসায়ী ইব্রাহিম। এসময় শিশুটি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে ইব্রাহিম সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
পরে এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তারের দাবিতে এলাকাবাসী রাত নয়টা থেকে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে রাত ১১টায় রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম এবং জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মেহেদী ইসলামসহ থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
পরে তারা শিশুটিকে উদ্ধার করলে ডাক্তারি পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য রাতেই পুলিশ হেফাজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পরদিন ১৪ মার্চ (শুক্রবার) ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার বাদী হয়ে ইব্রাহিমকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এ ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হলে বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হয়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ ল র পগঞ জ আইনজ ব জ র কর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরাও বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে: হাইকোর্ট
শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ দিতে পারবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নেওয়া সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি রেজাউল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রায় দেন।
একই সঙ্গে ২০০৮ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালার আলোকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে পরীক্ষার আয়োজন করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষা আগামী ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
আইনজীবীদের তথ্যমতে, শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ১৭ জুলাই এক স্মারকে জানায়। এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কেরানীগঞ্জ পাবলিক ল্যাবরেটরি স্কুলের পরিচালক মো. ফারুক হোসেন, শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিসহ ৪২ জন চলতি বছর রিটটি করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে ওই স্মারকের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য স্থগিত করেন। শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতিসংক্রান্ত ১৭ জুলাইয়ের ওই স্মারক (ম্যামো) কেন আইনগত কর্তৃত্ব–বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে ২০০৮ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালার আলোকে বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নিয়াজ মোর্শেদ। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ ইজাজ কবির।
পরে আইনজীবী নিয়াজ মোর্শেদ প্রথম আলোকে বলেন, শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ দিতে পারবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গত ১৭ জুলাইয়ে স্মারক অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। ২০০৮ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালা অনুসারে সব বেসরকারি অর্থাৎ বেসরকারি নিম্নমাধ্যমিক, রেজিস্ট্রার্ড কিন্ডারগার্টেন, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রেজিস্টার্ড/অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত/স্থাপনা ও প্রাথমিক অনুমতিপ্রাপ্ত চালু বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ জন্য ১৫ দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের ফলে শুধু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই নয়, এসব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ১৯৮১ সালে প্রবর্তন করা হয় বলে জানান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৫ সালে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পায়। ২০০৮ সাল পর্যন্ত এটি চলে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নতুন নীতিমালার আলোকে পিএসসি পরীক্ষা হয়। এতে যারা ভালো করত, তাদের বৃত্তি দেওয়া হতো। তবে করোনার সময় ২০২০ ও ২০২১ সালে তা বন্ধ ছিল। ২০২২ সালে আবার বৃত্তি পরীক্ষা শুরু হয়, তবে তা প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার নীতিমালার (সংশোধিত–২০১৬) আলোকে। বিভিন্ন কারণে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে এটি বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০২৫ সালে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে। বেসরকারি শিক্ষার্থীরাও প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে—এমন নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। তারা যাতে পরীক্ষা দিতে পারে সে জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।