ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে ‘অভিযোগ বাক্স’ খুলেছেন শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আজ সোমবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মিঞা এ–সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছেন। পত্রটি জেলা ও দায়রা জজসহ আদালতের সব বিচারক, আদালত পুলিশ, সরকারি কৌঁসুলি (পিপি), আইনজীবী সমিতি ও প্রেসক্লাবে পাঠানো হয়েছে।

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেয়ালে একটি অভিযোগ বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া মুঠোফোন নম্বর, হোয়াটসঅ্যাপ, ই–মেইলেও অভিযোগ জানাতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা।

সম্প্রতি শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির একটি সভায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের ঘুষ দেওয়ার টাকার হার নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। গত বৃহস্পতিবার ওই টাকার হার নির্ধারণের জন্য করা একটি সভার রেজল্যুশন (কার্যবিবরণী) আদালতের বিভিন্ন কর্মচারী, আইনজীবী ও আইনজীবীর সহকারীদের দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে। আইনজীবী সমিতির ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যার প্রেক্ষিতে শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

ওই চিঠিতে বলা হয়, বিচারপ্রার্থী জনতা, আইনজীবী ও সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের আওতাধীন যেকোনো আদালত বা শাখায় বিচারিক সেবা গ্রহণের সময় কোনো প্রকার ঘুষ, দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ থাকলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বাইরে দেয়ালে স্থাপিত অভিযোগ বক্সে ও নির্ধারিত নম্বরে সরাসরি ফোন করে, হোয়াটসঅ্যাপ ও ই–মেইলে জানানোর আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া কোনো ধরনের ঘুষ গ্রহণ বা প্রদানের ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ভিডিও, অডিও, ছবি ও কোনো প্রমাণ থাকলে সেগুলো জানানোর অনুরোধ করা হয়। প্রতিটি মাধ্যমে গৃহীত অভিযোগ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সামছুল হক সরকার বলেন, ‘শরীয়তপুরে আদালতের কোনো কর্মচারী ঘুষ-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয়। আইনজীবী সমিতি আমাদের বদনাম করার জন্য বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করেছেন। আমরা দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। আদালতের কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে কোনো পক্ষ বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি করতে পারে। যার কারণে এ–সংক্রান্ত অভিযোগ, ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

বিয়ে-তালাকের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: হাইকোর্ট

বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

আদালত বলেছেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে, যাতে প্রতিটি তথ্য সরকারি ব্যবস্থায় সুরক্ষিত থাকে; ডেটাবেজ সম্পূর্ণ কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য হয় এবং নাগরিকেরা বিশেষ করে নারীরা সহজেই তথ্য যাচাই করতে ও ডিজিটাল কপি সংগ্রহ করতে পারেন।

বিবাহ ও তালাকের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশনে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এবং তিন ব্যক্তি ২০২১ সালের ৪ মার্চ রিট করেন।

রিট আবেদনের ভাষ্য, বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর তথা ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। স্বামী বা স্ত্রী বিয়ের তথ্য গোপন করে অনেক ক্ষেত্রে আবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ডিজিটাল আর্কাইভের অনুপস্থিতিতে অনেক সময় সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তা ও জটিলতা দেখা যায়।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পারিবারিক জীবনের বৃহত্তর সুরক্ষায় বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ডিজিটালাইজেশনের জন্য কেন্দ্রীয় একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।

রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য পুরোপুরি ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রুল নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দিয়ে রায় দেওয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান, তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশে পরিবারের নিরাপত্তা, নারীর সুরক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, আইনগত স্বচ্ছতা এবং সবচেয়ে বড় বিষয় বিয়ে–তালাকসংক্রান্ত প্রতারণা বন্ধে ঐতিহাসিক এক পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে গোপন বিয়ে, একাধিক বিয়ে লুকানো, পূর্ববর্তী তথ্য গোপন, তালাক প্রমাণের জটিলতা—এসব সমস্যা ব্যাপকভাবে কমবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানে নোবেলজয়ী মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি গ্রেপ্তার
  • বিপিএলে ফিক্সিং: অভিযুক্তদের বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে
  • আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর–৪ আসনে অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ
  • বিয়ে-তালাকের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: হাইকোর্ট
  • মানিকগঞ্জ শহরে ককটেল বিস্ফোরণ
  • রিট খারিজ, জোটে গেলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান বহাল
  • মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী ৬ দিন, তাঁর স্বামী ৩ দিনের রিমান্ডে
  • গাজীপুর কারাগারে ‘আয়নাবাজির’ ঘটনায় আদালতে মামলা, আইনজীবীকে শোকজ