আরসার প্রধান আতাউল্লাহসহ গ্রেপ্তার ৬ জন ১০ দিনের রিমান্ডে
Published: 18th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহে পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের সশস্ত্র গ্রুপ আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী ওরফে আতাউল্লাহসহ বাকি ১০ সদস্যের ১০ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) র্যাব বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী ও অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দুটি মামলা করে।
গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন-আরাকান রোহিঙ্গা এআরএসএ সদস্য আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী ওরফে আতাউল্লাহ (৪৮), মোস্তাক আহাম্মদ (৬৬), মনিরুজ্জামান (২৪), সলিমুল্লাহ (২৭), মোসা.
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশি ২৬ জেলেকে ফেরত আনল বিজিবি
নাইক্ষ্যংছড়িতে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি আহত
মামলা সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৬ ও ১৭ মার্চ ময়মনসিংহ জেলার সদর থানা এলাকার নতুন বাজার গার্ডেন সিটি এবং নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ভূমি পল্লীতে পৃথক দুটি অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-১১। এ সময় নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে তিন নারীসহ এআরএসএ এর ১০ সদস্যকে আটক করে।
মামলা সূত্রে আরো জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে নগদ ২১ লাখ ৩৯ হাজার ১০০ টাকা, একটি চাকু, ধারালো দাতযুক্ত একটি স্টিলের মোটা চেইন ও চারটি হাত ঘড়ি উদ্ধার করা হয়। পরে মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী ও অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনে র্যাব বাদী হয়ে দুটি মামলা করে।
মামলার পর আটককৃতদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে প্রেরণ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনাল) খোরশেদ মোল্লা জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ভূমিপল্লী থেকে এআরএসএ এর একটি গ্রুপকে গ্রেপ্তার করা হলে, তাদের দেওয়া তথ্য মতে ময়মনসিংহ হতে অন্যাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তকারী কর্মকর্তারা দুটি মামলায় আদালতে ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ৬ জনকে দুই মামলায় ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
নারায়ণঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি মামলায় নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১ম আদালতের বিচারক মো. মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় শুনানি শেষে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দুই মামলায় বিচারক ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ঢাকা/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১০ দ ন র র ম ন ড ন র য়ণগঞ জ র স স দ ধ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ছেলের মুক্তি চেয়ে কাঁদলেন মা
জমিসংক্রান্ত বিরোধে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় সালিশ ডেকে আল-আমিন (২৮) নামে এক যুবককে আটকের পর নগরীর কেওয়াটখালীতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রাজনৈতিক মামলায় জেলে পাঠিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর মা আনোয়ারা বেগম।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে প্রতিকার চেয়ে অঝোরে কাঁদেন তিনি।
আল-আমিন নগরীর বলাশপুর এলাকার মৃত নুরুল ইসলাম ও আনোয়ারা বেগম দম্পতির সন্তান। ২০২১ সাল থেকে জমি নিয়ে আনোয়ারা বেগম ও প্রকৌশলী মনিরুজ্জামানের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। মনিরুজ্জামান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের উপ-প্রধান প্রকৌশলী। সেই দ্বন্দ্বের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে আনোয়ারা বেগমের অভিযোগ।
আনোয়ারা বেগম সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০২১ সালে বলাশপুরে স্বামীর পেনশনের টাকায় তিনি জমি কেনেন। এর আগে ২০০৮ সালে একই দাগে ৪ শতাংশ জমি কেনার দাবি করে ২০২২ সালে জোরপূর্বক জমিতে প্রাচীর দেন মনিরুজ্জামান। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ হলেও সুরাহা হয়নি। ৫ আগস্টের পর জমিতে বাড়ি করার উদ্যোগ নিলে বাধা দেন মনিরুজ্জামান।
আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘‘আমার ছেলে আল-আমিনসহ আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে মনিরুজ্জামান কোতোয়ালি মডেল থানাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে কোতোয়ালি থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম থানায় উভয় পক্ষকে ডাকেন।’’
‘‘শনিবার (২৬ জুলাই) রাত আটটায় থানার মধ্যেই দরবার শুরু হয়। চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। দরবারে যখন জমির কাগজপত্র আমাদেরগুলো ঠিক প্রমাণিত হয় তখন ওসি আল-আমিনকে তার রুমে নিয়ে পিটিয়ে হাড়গোড় ভেঙে ফেলার হুমকি দেন। পিছন পিছন আমি গিয়ে প্রতিবাদ করলে আমার সাথেও খারাপ ব্যবহার করেন তিনি। এরপর আল-আমিনকে লকাপে ঢুকিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দেন। ছেলে রাজি না হওয়ায় সাজানো রাজনৈতিক মামলায় তাকে জেল পাঠানো হয়েছে।’’ বলে অভিযোগ করেন আনোয়ারা বেগম।
আনোয়ারা বেগম এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘স্বামী মারা যাওয়ার পর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সন্তানদের মানুষ করেছি। আল-আমিন ক্রোকারিজের ব্যবসা করে পুরো সংসার চালায়। রাজনীতির সাথে কোনোভাবেই সে জড়িত নয়। অথচ ওসি তাকে রাজনৈতিক মামলায় জেলে ঢুকিয়েছে। মনিরুজ্জামানের টাকা ও ক্ষমতার কাছে আমি হেরে গেছি। এই দেশে কোনো বিচার নাই। আমার ছেলে যদি মুক্তি না পায় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে সে বিপথে গেলে পুলিশ, সমাজ এবং রাষ্ট্র এ জন্য দায়ী থাকবে।’’
‘‘ওসি সালিশের এক পর্যায়ে প্রভাবিত হয়ে আল-আমিনকে সালিশ থেকে আটক করে রাজনৈতিক মামলায় জেলে ঢুকিয়েছে। এ সময় হাতে-পায়ে ধরেও লাভ হয়নি,’’ উল্লেখ করে আনোয়ারা বেগম কড়জোরে ঘটনার সঠিক বিচারের পাশাপাশি আল-আমিনের মুক্তি দাবি করেন।
এ দিকে আল-আমিনের বিরুদ্ধে মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১টা ৩৫মিনিটে পুলিশের টহল টিম আকুয়া ভাঙ্গাপুল এলাকায় অবস্থানকালে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, সদরের উত্তর দাপুনিয়ার সরকারি পুকুরপাড়ে একদল সন্ত্রাসী রাস্তা বন্ধ করে গাড়ি ভাংচুর ও দাঙ্গাহাঙ্গামা করছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৫টি মশাল, ২০টি লাঠি, ৩০টি ইটের টুকরো, ২৫টি কাচের টুকরো জব্দ করে। এ ঘটনার পরদিন পুলিশ কোতোয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় আল-আমিনকে সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে ওসি মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আল-আমিন যুবলীগ করে। কারণ যুবলীগের নেতাকর্মীদের সাথে তার ছবি রয়েছে।’’
আল-আমিনকে থানায় সালিশ ডেকে পরে আটক করা হয়েছে কিন্তু মামলায় দেখানো হয়েছে তাকে কেওয়াটখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘‘এ
বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবে।’’
জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, ‘‘আল-আমিনের মা ছেলের মুক্তির দাবিতে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে। আমি শুনেছি। তার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
মিলন//