বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেছেন, ‘দেশের ১৭ কোটি মানুষ ভোটের আশায় আছে। এখনো যুবসমাজ একটা ভোট দিতে পারে নাই। সেই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। সংস্কারের নামে যারা কালক্ষেপণ করতে চায়, আমি বলব, তারা দেশের ভালো চায় না। তারা গণতন্ত্র চায় না, তারা দেশের শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু।’

আজ বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর শহরের অম্বিকা ময়দানে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামা ওবায়েদ এ কথাগুলো বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা যুবদল।

শামা ওবায়েদ বলেন, ‘আমরা জানি, যদি সুষ্ঠু ভোট হয় তাহলে বিএনপি জয়লাভ করবে। কেননা বর্তমানে বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশে হাসিনা প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিচার বিভাগ ধ্বংস করেছে, ভোটাধিকার ধ্বংস করে গেছে। প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্বশীলতার মধ্যে স্বচ্ছ পরিবেশে আনতে হবে। এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে এ দেশে আইনের শাসন কায়েম হয়, এ দেশে ন্যায়বিচার কায়েম হয়।’

এখন নারীরা নিরাপদ নন মন্তব্য করে বিএনপির এই নেত্রী বলেন, ‘এখন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নারীরা নির্যাতিত হচ্ছেন, কেননা দেশে আইনের শাসন নেই। চুরি হচ্ছে, ডাকাতি হচ্ছে। আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছু করতে পারছে না।’ তিনি বলেন, ‘মনে করি একটি গভীর ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। গভীর ষড়যন্ত্র থেকে যদি উত্তরণ করতে হয়, তাহলে যা সংস্কার প্রয়োজন, সেই সংস্কার করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে।’

শামা ওবায়েদ বলেন, ‘আমরা ৫ আগস্ট-পরবর্তী আমাদের ছাত্র-জনতার আত্মাহুতির পর যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, এই সুযোগ কিন্তু আমরা দ্বিতীয়বার না-ও পেতে পারি। এই সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে—এমন সরকার আমরা চাই, এমন সংসদ আমরা চাই। সেই সরকার তখনই আসবে, যখন দেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ভোট হবে। যে ভোটে আমাদের দেশের নাগরিক যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারবে।’

বিএনপি নেত্রী আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। হাসিনা পালিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগও দৃশ্যত দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু আমাদের চারপাশে ফ্যাসিবাদের দোসররা ঘোরাফেরা করছে। এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। যারা ১৫ বছর আন্দোলন সংগ্রামে ছিল না, তারা আমাদের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে বিএনপিতে ঢুকে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে।’ তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। প্রতিহিংসার রাজনীতিও তিনি করেননি। তারেক রহমান দলকে সুসংগঠিত করতে ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন।

শামা ওবায়েদ বলেন, ‘১৫ বছর পর আজকে আমাদের সুযোগ হয়েছে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার। এই নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ না হলে, গণতান্ত্রিক দেশের পথে না এগোলে বাংলাদেশের সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার শঙ্কা আছে। আওয়ামী লীগের দোষর, যে দেশে হাসিনা বসে আছে, সেই দেশ এবং সেই দেশের মিডিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে।’

জেলা যুবদলের সভাপতি রাজিব হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনের সঞ্চালনে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক আফজল হোসেন খান, সৈয়দ জুলফিকার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ: ফখরুল

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে “বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার এক নতুন অধ্যায়” হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এবারকার নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বৃহস্পতিবার এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, “তফসিল ঘোষণা শুধু নির্বাচনসূচি নয়, এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রার এক গুরুত্বপুর্ণ মুহূর্ত। দেশের জনগণ বহু অপেক্ষার পর যে পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছে, তার সূচনা এই তফসিল।” 

আরো পড়ুন:

সারা দেশে ‘রোড শো’ করবে বিএনপি, ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ

বিদেশে নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

অতীতের মতো কোনোরূপ পক্ষপাত, প্রভাব বা নিয়ন্ত্রণের বাইরে একটি মুক্ত, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘জনগণই দেশের মালিক। তাদের রায়কে সম্মান জানানো এবং ভোটের অধিকার রক্ষা করাই বিএনপির মূল অঙ্গীকার।’’

ফখরুল আরও দাবি করেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিলকে সামনে রেখে বিএনপি মাঠে শক্তিশালীভাবে উপস্থিত থাকবে এবং গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা চাই একটি সুষ্ঠু পরিবেশ, সমান সুযোগ, পর্যাপ্ত স্বাধীনতা এবং সব দলের জন্য মাঠ সমতল রাখা হোক। জনগণ এই নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে চায়।” 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, তফসিল ঘোষণার পর দেশের মানুষ শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচনের পরিবেশ দেখতে পাবে।

ফখরুল আরও বলেন, ‘‘অতীতের অভিজ্ঞতা জনগণকে সতর্ক করেছে। তাই এবার তারা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি সচেতন ও রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি নির্ধারক সময়। দেশের গণতন্ত্র, ভবিষ্যৎ এবং নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন রক্ষায় এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন। আগামী ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। 

ঢাকা/আলী//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিজয় ও বিপর্যয়
  • তারেক রহমান দেশে এলে রাজনীতিতে নতুন জোয়ার সৃষ্টি হবে: আমীর খসরু
  • ২৫ তারিখে দেশের রাজনীতিতে নতুন জোয়ার সৃষ্টি হবে: আমীর খসরু
  • ষড়যন্ত্র রুখতে পারে গণতন্ত্রের প্র্যাকটিস: তারেক
  • মওলানা ভাসানী মজলুমদের পক্ষে ছিলেন, কখনো আপোষ করেননি: টুকু 
  • একটি দল ভোটের প্রয়োজনে আ.লীগের নাম মুখে নেয় না: সালাউদ্দিন আহমেদ
  • খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির দোয়া
  • তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ: ফখরুল
  • নির্বাচন যত সহজ ভাবা হচ্ছে, তত সহজ হবে না: তারেক রহমান
  • শরিক ২৯ দলের বৈঠক, বিএনপির সঙ্গে দ্রুত ফয়সালার সিদ্ধান্ত