সংস্কারের নাম কালক্ষেপণ করতে চাওয়া ব্যক্তিরা গণতন্ত্রের শত্রু: শামা ওবায়েদ
Published: 19th, March 2025 GMT
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেছেন, ‘দেশের ১৭ কোটি মানুষ ভোটের আশায় আছে। এখনো যুবসমাজ একটা ভোট দিতে পারে নাই। সেই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। সংস্কারের নামে যারা কালক্ষেপণ করতে চায়, আমি বলব, তারা দেশের ভালো চায় না। তারা গণতন্ত্র চায় না, তারা দেশের শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু।’
আজ বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর শহরের অম্বিকা ময়দানে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামা ওবায়েদ এ কথাগুলো বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা যুবদল।
শামা ওবায়েদ বলেন, ‘আমরা জানি, যদি সুষ্ঠু ভোট হয় তাহলে বিএনপি জয়লাভ করবে। কেননা বর্তমানে বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশে হাসিনা প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিচার বিভাগ ধ্বংস করেছে, ভোটাধিকার ধ্বংস করে গেছে। প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্বশীলতার মধ্যে স্বচ্ছ পরিবেশে আনতে হবে। এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে এ দেশে আইনের শাসন কায়েম হয়, এ দেশে ন্যায়বিচার কায়েম হয়।’
এখন নারীরা নিরাপদ নন মন্তব্য করে বিএনপির এই নেত্রী বলেন, ‘এখন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নারীরা নির্যাতিত হচ্ছেন, কেননা দেশে আইনের শাসন নেই। চুরি হচ্ছে, ডাকাতি হচ্ছে। আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছু করতে পারছে না।’ তিনি বলেন, ‘মনে করি একটি গভীর ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। গভীর ষড়যন্ত্র থেকে যদি উত্তরণ করতে হয়, তাহলে যা সংস্কার প্রয়োজন, সেই সংস্কার করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে।’
শামা ওবায়েদ বলেন, ‘আমরা ৫ আগস্ট-পরবর্তী আমাদের ছাত্র-জনতার আত্মাহুতির পর যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, এই সুযোগ কিন্তু আমরা দ্বিতীয়বার না-ও পেতে পারি। এই সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে—এমন সরকার আমরা চাই, এমন সংসদ আমরা চাই। সেই সরকার তখনই আসবে, যখন দেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ভোট হবে। যে ভোটে আমাদের দেশের নাগরিক যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারবে।’
বিএনপি নেত্রী আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। হাসিনা পালিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগও দৃশ্যত দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু আমাদের চারপাশে ফ্যাসিবাদের দোসররা ঘোরাফেরা করছে। এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। যারা ১৫ বছর আন্দোলন সংগ্রামে ছিল না, তারা আমাদের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে বিএনপিতে ঢুকে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে।’ তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। প্রতিহিংসার রাজনীতিও তিনি করেননি। তারেক রহমান দলকে সুসংগঠিত করতে ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন।
শামা ওবায়েদ বলেন, ‘১৫ বছর পর আজকে আমাদের সুযোগ হয়েছে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার। এই নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ না হলে, গণতান্ত্রিক দেশের পথে না এগোলে বাংলাদেশের সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার শঙ্কা আছে। আওয়ামী লীগের দোষর, যে দেশে হাসিনা বসে আছে, সেই দেশ এবং সেই দেশের মিডিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে।’
জেলা যুবদলের সভাপতি রাজিব হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনের সঞ্চালনে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক আফজল হোসেন খান, সৈয়দ জুলফিকার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান
ঢাকা-৮ আসনে দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান। তিনি বলেন, “ভোটের অধিকার জনগণের পবিত্র আমানত, এটি সচেতনভাবে প্রয়োগ করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা জননেতা সাইফুল হক-এর ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি একথা বলেন।
গণসংযোগের শুরুতে ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা হয়।
সেখানে আকবর খান বলেন, “নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে অবিলম্বে ভোটের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে—২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে—ঢাকা-৮ আসনের বহু নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। যে তরুণের এখন বয়স ২৫ বা ২৬, তারা কখনো ভোট দিতে পারেনি, ভোট কী তা জানে না- এটি গণতন্ত্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “গত ১৬-১৭ বছর ধরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমাদের নেতা সাইফুল হক জনগণের ভোটাধিকারের আন্দোলনে রাজপথে সংগ্রাম করে আসছেন। এর জন্য জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেও তিনি থেমে থাকেননি। ভোটাধিকার গণমানুষের দীর্ঘ লড়াই ও ত্যাগের ফসল। এই অধিকার ভুল ব্যক্তিকে নির্বাচিত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।”
আকবর খান বলেন, “জননেতা সাইফুল হক গণমানুষের পরীক্ষিত নেতা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের জনগণ যেন তাকে ভোট দিয়ে নিজেদের সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়ার কথা ও দীর্ঘ বঞ্চনার ইতিহাস সংসদে তুলে ধরার সুযোগ করে দেন- এটাই আমাদের আহ্বান।”
গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা থেকে শুরু হয়ে মতিঝিল, কমলাপুর, ফকিরাপুল, কালভার্ট রোড হয়ে বিজয়নগরে এসে শেষ হয়। এতে শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সিকদার হারুন মাহমুদ, মীর রেজাউল আলম, কবি জামাল সিকদার, ফাইজুর রহমান মুনির, বাবর চৌধুরী, মহানগর নেতা যুবরান আলী জুয়েল, সালাউদ্দিন, রিয়েল মাতবর, আরিফুল ইসলাম, মুজিবুল হক চুন্নু, গোলাম রাজিব, মাহমুদুল হাসান খান, ফয়েজ ইবনে জাফর, নান্টু দাস, শিবু মহন্ত ও হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
ঢাকা/এএএম/এস