গত বছর তিন মাস ফিশিং আক্রমণের ঝুঁকিতে ছিলেন আইফোন ব্যবহারকারীরা, কেন
Published: 20th, March 2025 GMT
অ্যাপলের পাসওয়ার্ডস অ্যাপে থাকা নিরাপত্তাত্রুটির কারণে গত বছর তিন মাস ফিশিং আক্রমণের ঝুঁকিতে ছিলেন আইফোন ব্যবহারকারীরা। আইওএস ১৮ অপারেটিং সিস্টেম উন্মোচনের পর অ্যাপলের পাসওয়ার্ডস অ্যাপে নিরাপত্তাত্রুটি দেখা দিলেও প্রকাশ করেনি অ্যাপল। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট নাইনটুফাইভম্যাকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইওএস ১৮ অপারেটিং সিস্টেমে চলা আইফোন উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার সময় হ্যাকাররা চাইলেই সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নিতে পারত। তবে আইওএস ১৮.
আইওএসে নিরাপত্তাত্রুটি থাকার বিষয়টি স্বীকারও করেছে অ্যাপল। এ বিষয়ে অ্যাপল জানিয়েছে, এই ত্রুটির ফলে নেটওয়ার্কে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা কোনো ব্যবহারকারী অন্যের সংবেদনশীল তথ্য ফাঁস করতে পারত। সমস্যাটির সমাধানে এইচটিটিপিএস ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে তথ্য আদান-প্রদান নিরাপদ থাকে।
আরও পড়ুনবাজারে আসার ১৫ দিনের মধ্যেই আইফোনের নতুন মডেলে ত্রুটি, ভোগান্তিতে ব্যবহারকারীরা১৭ মার্চ ২০২৫নাইনটুফাইভম্যাকের তথ্যমতে, অ্যাপলের পাসওয়ার্ডস অ্যাপে সংরক্ষিত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লোগো ও আইকন প্রদর্শনের জন্য যে অনুরোধ পাঠানো হতো, তা এনক্রিপশন করা হতো না। অর্থাৎ উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার সময় কোনো হ্যাকার ব্যবহারকারীর ব্রাউজারকে ভুয়া ওয়েবসাইটে নিয়ে যেতে পারত। এতে ব্যবহারকারীর অজান্তেই লগইন তথ্য চুরি হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল।
আরও পড়ুনআইফোনে ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ রাখতে যে তিনটি সেটিংস বন্ধ রাখতে হবে১১ জানুয়ারি ২০২৫নিরাপত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান মিস্ক প্রথম এই ত্রুটি শনাক্ত করে এবং ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অ্যাপলকে বিষয়টি অবহিত করে। এরপর ডিসেম্বর মাসে আইওএস ১৮.২ সংস্করণ উন্মুক্ত করে অ্যাপল। আইফোনের পাশাপাশি একই ধরনের নিরাপত্তাত্রুটি ম্যাক, আইপ্যাড ও ভিশন প্রো ডিভাইসেও ছিল।
সূত্র: দ্য ভার্জ
আরও পড়ুনআইফোনের ব্যাটারির স্থায়িত্ব দ্বিগুণ করতে অ্যাপলের ৩ পরামর্শ১৫ জানুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।