ছেলেকে সাড়ে ৮ লাখ শেয়ার উপহার দেবেন প্রাইম ব্যাংকের পরিচালক আজম জে চৌধুরী
Published: 27th, March 2025 GMT
সন্তানকে শেয়ার উপহার দেবেন প্রাইম ব্যাংকের পরিচালক আজম জে চৌধুরী। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক ঘোষণায় জানানো হয়েছে, আজম জে চোধুরী নিজের ছেলে তানভীর এ চৌধুরীকে (মনোনীত পরিচালক) ৮ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার উপহার হিসেবে দেবেন।
শেয়ারবাজারের সাধারণ লেনদেনের বাইরে এই শেয়ার হস্তান্তর করা হবে। ২৫ মার্চ থেকে আগামী ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে এই শেয়ার হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে প্রাইম ব্যাংক সম্প্রতি ২০২৪ সালের শেয়ারধারীদের জন্য ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ ও আড়াই শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি শেয়ারধারীদের সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সেই হিসাবে আগের বছরের চেয়ে গত বছর লভ্যাংশের পরিমাণ আড়াই শতাংশ বেড়েছে।
প্রাইম ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৪ সালে ব্যাংকটির প্রকৃত মুনাফা ২০২৩ সালের তুলনায় ২৬১ কোটি টাকা বা ৫৪ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর শেষে ব্যাংকটি প্রকৃত মুনাফা করেছে ৭৪৫ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে যা ছিল ৪৮৪ কোটি টাকা। মুনাফা বৃদ্ধি পাওয়ায় শেয়ারপ্রতি আয়ও (ইপিএস) বেড়েছে প্রাইম ব্যাংকের। গত বছর শেষে ব্যাংকটি ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৫৮ পয়সায়। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির ইপিএস ছিল ৪ টাকা ২৭ পয়সা।
প্রাইম ব্যাংক আরও জানিয়েছে, গত বছর শেষে ব্যাংকটির মোট সম্পদ ছিল প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা। ঘোষিত লভ্যাংশের জন্য ব্যাংকটি রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করেছে ১০ এপ্রিল। ওই দিন যাঁদের হাতে ব্যাংকটির শেয়ার থাকবে, তাঁরাই ঘোষিত লভ্যাংশ পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন। এই লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ মে। ওই সভায় অনুমোদনের পর ঘোষিত লভ্যাংশ বিতরণ করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ